পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন তুলে দিতে বললেন হাইকোর্ট

কলকাতা হাইকোর্ট
ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম করায় মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনকে ৭০ হাজার রুপি জরিমানা করেছেন কলকাতা হাইকোর্ট। ভবিষ্যতে মাদ্রাসায় অনিয়ম দেখা গেলে প্রয়োজনে মাদ্রাসা কমিশন তুলে দিতেও বলেছেন হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। গতকাল মঙ্গলবার দেওয়া এই আদেশে এখন থেকে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের যাবতীয় দুর্নীতির তদন্ত কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই করবে বলেও জানান এই বিচারপতি।

আদেশে বলা হয়েছে, যে সাত শিক্ষক নিয়োগ বঞ্চিত হয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন, তাঁদের জরিমানার এই টাকা দেবে মাদ্রাসা কমিশন। প্রত্যেক শিক্ষক পাবেন ১০ হাজার রুপি করে। নিয়োগের জন্য ১৫ দিনের মধ্যে তাঁদের নামও সুপারিশ করতে হবে।

আরও পড়ুন

২০১০ সালের মাদ্রাসা শিক্ষক নিয়োগসংক্রান্ত আইনে বলা হয়েছে, শিক্ষক নিয়োগে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মাদ্রাসা শিক্ষকদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। কিন্তু ২০১৩-১৪ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ওই সাত শিক্ষক বঞ্চিত হন। শুধু তাই নয়, ওই সময় প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের চাকরিতে নিয়োগ না দিয়ে প্রশিক্ষণহীনদের চাকরিতে বহাল করা হয়। শিক্ষক নিয়োগ ওঠে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ।

আদেশে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মাদ্রাসায় বেআইনি কাজ দেখলে মাদ্রাসা কমিশনকে উঠিয়ে দেওয়ার কথাও বলেছেন। এদিকে, পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্কুল স্তরে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় সিবিআইকে প্রাথমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এই বিচারপতি।

ইতোমধ্যে এই তদন্ত শুরু হয়েছে। একটি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর মেয়েকে অবৈধভাবে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। হাইকোর্ট ওই নিয়োগ বাতিল করে তাঁকে চাকরিচ্যুত করেছেন। শুধু তা–ই নয়, ওই শিক্ষিকার ৪১ মাসের বেতনও ফেরত দিতে বলা হয়েছে।

অন্যদিকে, প্রাথমিক বিদ্যালয় সার্ভিস কমিশনেরও বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। কলকাতা হাইকোর্ট গত সোমবার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৬৯ জন শিক্ষকের নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করেন। তাঁদের বেতন বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি এই দুর্নীতি তদন্তের দায়িত্বও সিবিআইকে দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।