পশ্চিমবঙ্গের নাম ‘বাংলা’ রাখার প্রস্তাব আবার তুললেন মমতা

নরেন্দ্র মোদি ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
ফাইল ছবি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করার পর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার বলেছেন, পেগাসাস স্পাইওয়্যারের সাহায্যে ফোনে নজরদারির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। সেই তদন্ত হওয়া দরকার সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে।

দুই বছর পর দিল্লি সফরে গেছেন মমতা। তার চেয়েও বড় কথা, বিধানসভার ভোটে বিজেপিকে বিপর্যস্ত করার পর এই প্রথম প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনায় বসলেন মমতা। কলকাতা থেকে দিল্লি পৌঁছানোর আগে পেগাসাস-কাণ্ডে তদন্ত কমিশন গঠনের পর মমতা বলেছিলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলা ও দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনা করা তাঁর কর্তব্য।

সেই দাবিগুলো কী, তা মমতা বৈঠকের পর জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন করোনার টিকা। টিকার সরবরাহ বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। মমতা বলেন, ‘অনেক রাজ্যের চেয়ে কম টিকা পেয়েছে আমাদের রাজ্য। জনসংখ্যার নিরিখে এর চেয়ে বেশি টিকা পশ্চিমবঙ্গের প্রয়োজন।

সেই তুলনায় সরবরাহ খুবই কম। টিকাদানের হারও খুব ভালো। সংক্রমণও ৩৩ শতাংশ থেকে কমে ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।’ তিনি বলেন, কোভিডের তৃতীয় তরঙ্গ আসার আগে রাজ্যের সব মানুষকে টিকা দেওয়া তাঁর লক্ষ্য। এই কথা প্রধানমন্ত্রীকে তিনি জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী তা বিবেচনা করবেন বলে মমতা জানান।

মমতা বলেন, বৈঠক ভালোই হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর সব কথা শুনেছেন। দাবি খতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন। রাজ্যের নাম বদলের বিষয়টিও বিবেচনা করে দেখার অনুরোধ করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, অনেক দিন হয়ে গেল বিষয়টি পড়ে রয়েছে। এবার দয়া করে দেখুন।’ পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলে ‘বাংলা’ রাখার প্রস্তাব রাজ্যের পক্ষ থেকে কেন্দ্রের কাছে পাঠানো হয়েছে বহুদিন আগেই। কেন্দ্রীয় অভিমত, এতে প্রতিবেশী দেশের নামের সঙ্গে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হতে পারে।

রাজ্যের দাবিদাওয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দরবার তাঁর সফরের ঘোষিত উদ্দেশ্য হলেও এই সফরকে তিনি বিজেপিবিরোধী জোট তৈরির কাজে লাগাতে চাইছেন। সেই কাজ কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে সম্ভবপর হবে না বলেই তাঁর বিশ্বাস। সে জন্য গতকাল দুপুরে তিনি বৈঠক করেন কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা কমলনাথের সঙ্গে। কমলনাথ সাউথ অ্যাভিনিউয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাংসদ আবাসে আসেন মমতার সঙ্গে দেখা করতে। সেখানেই দেখা করেন কংগ্রেসের আরেক নেতা আনন্দ শর্মার সঙ্গেও। সন্ধ্যায় বৈঠক করেন পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্যসভায় নির্বাচিত কংগ্রেস নেতা আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভির সঙ্গেও। রাজ্য সরকারের হয়ে বেশ কিছু মামলা লড়ছেন সিংভি।

বুধবার মমতার বৈঠক কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে। বিরোধী ঐক্যের নিরিখে এই বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৮ সালের পর দুই নেত্রীর মধ্যে এটাই হবে প্রথম সাক্ষাৎকার। রাজনীতি নিয়ে কথা বলবেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গেও। তবে মমতা জানান, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে এ যাত্রায় তাঁর সাক্ষাৎ হবে না। কারণ, প্রটোকল অনুযায়ী সেই সাক্ষাতের আগে মমতার কোভিড পরীক্ষা করানো বাধ্যতামূলক। মমতা তাতে রাজি নন। আজই মমতা তাঁর দলের সব সাংসদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।