পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে মুসলিম ভোট পেতে মরিয়া বিজেপি

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ
ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে সংখ্যালঘু মুসলিম ভোট পেতে এবার মরিয়া হয়ে উঠেছে রাজ্য বিজেপি। নির্বাচনী প্রচারের অংশ হিসেবে বিজেপি এবার টার্গেট করেছে এই রাজ্যের সংখ্যালঘু মুসলিম ভোটকে। বিজেপি সংখ্যালঘু মোর্চার আর এক নেতা বলেছেন, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ২৭টি আসনে সংখ্যালঘু মুসলিম প্রার্থী দিতে পারে।

আগামী বছরের এপ্রিল-মে মাসে রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা আসনে নির্বাচন হওয়ার কথা। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি এই রাজ্যের ৪২টি আসনের মধ্যে ১৮টিতে জয়ী হয়। শুধু তা-ই নয়, বিধানসভাভিত্তিক ফলাফলে বিজেপি ২৯৪ আসনের মধ্যে ১২১টিতে এগিয়ে ছিল। এই নির্বাচনের ফলাফলের পর বিজেপি ২০২১ সালে ক্ষমতায় যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে রাজ্যব্যাপী প্রচারাভিযান শুরু করেছে। স্বপ্ন দেখছে পশ্চিমবঙ্গের শাসনক্ষমতায় যাওয়ার।

বিজেপির নেতারা ইতিমধ্যে বিভিন্ন সংখ্যালঘু এলাকায় প্রচারাভিযানে নেমেছেন। তাঁরা বোঝাচ্ছেন, মমতার আমলে এই রাজ্যের সংখ্যালঘু মুসলিমরা কতটুকু লাভবান হয়েছে আর কতটুকুই-বা বঞ্চিত হয়েছে? এ লক্ষ্য নিয়ে তাঁরা বোঝাতে চাইছেন বিজেপি কোনো ধর্মীয় দল নয়, গণতান্ত্রিক দল। তারাই পশ্চিমবঙ্গে সুশাসন দিতে পারবে।

রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৪১টি মুসলিম-অধ্যুষিত। এ ছাড়া রাজ্যের ১০০টি আসনে মুসলিম ভোট একটি ‘ফ্যাক্টর’ হিসেবে কাজ করছে। তাই মুসলিম ভোট কবজা করার জন্য এবার বিজেপি মাঠেও নামিয়েছে বিজেপির মুসলিম নেতাদের।

বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার রাজ্য সভাপতি আলী হোসেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বৈঠক করে সম্প্রতি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, দলের সিদ্ধান্ত মেনে এবার সংখ্যালঘু-অধ্যুষিত ৪১টি এলাকায় ২০ লাখ সদস্য সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আলী হোসেন বলেন, রাজ্যে বিরাটসংখ্যক মুসলিম ভোট রয়েছে। তাই মুসলিম ভোট এবার বাগিয়ে আনতে বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার নেতারা পথে নামবেন। দিলীপ ঘোষও বলেছেন, এবার বিজেপিতে প্রচুর সংখ্যালঘু ভোট আসছে। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে পশ্চিমবঙ্গের শাসনক্ষমতায় আসবে।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতাও মাঠে নেমেছেন সংখ্যালঘু ভোট নিজেদের দলে রাখার জন্য, যাতে কোনো রকম হাতছাড়া না হয়ে যায়। বলেছেন, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো এই রাজ্যে ক্ষমতায় আসবে তৃণমূলই। বিজেপিকে মানুষ ভোট দেবে না; আর সংখ্যালঘুরা তো নয়ই। কারণ, বিজেপি একটি সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল।

বিজেপির রাজ্যপর্যায়ের এক নেতা বলেছেন, উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কোনো সংখ্যালঘু কাউকে মনোনয়ন দিতে পারে বলে প্রচার চালাতে পারে।

বিজেপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য এই রাজ্যে সংখ্যালঘু যেসব দল আছে, সেসব দলকে উসকানি দিয়ে সংখ্যালঘু ভোট ভাগ করার জন্য উদ্যোগ নিতে পারে। তবে এ কথা ঠিক, বিজেপি এটাও জানে, অধিকাংশ সংখ্যালঘু মুসলিম বিজেপির দিকে নেই।