পাঞ্জাবে বিজেপির ভরাডুবি

ছবি: সংগৃহীত

কৃষক আন্দোলনের রাজনৈতিক প্রভাব কতখানি, আজ বুধবার তা বোঝা গেল পাঞ্জাবে। এই রাজ্যের পৌর ভোটে (মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন) জয়জয়কার হয়েছে কংগ্রেসের। ভোট হওয়া আট পৌরসভার মধ্যে সাতটির ফল বেরিয়েছে। প্রতিটিই কংগ্রেস দখল করেছে। অষ্টম পৌরসভার ফল ঘোষিত হবে কাল বৃহস্পতিবার।

পৌরসভার সঙ্গে ভোট হয়েছে ১০৯টি পৌর পরিষদেও (মিউনিসিপ্যাল কাউন্সিল)। সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রকাশিত ৮০টির মধ্যে কংগ্রেস জিতেছে ৬৫টি, ৫টিতে আকালি দল।
এই ভোটে প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে বিজেপি, রাজ্যের শহরাঞ্চলে যাদের উপস্থিতি এত বছর ছিল লক্ষণীয়। বিজেপির সবচেয়ে পুরোনো সঙ্গী শিরোমনি আকালি দলের সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটিয়েছে কৃষি আইন ও কৃষক আন্দোলন। এই পুর ভোটে দুই দল দীর্ঘদিন পর আলাদাভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করল। দুই দলের অবস্থাই শোচনীয়। একই রকম অবস্থা ভোটে অংশ নেওয়া আম আদমি পার্টিরও। বরং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ফল বেশ ভালো।

ভোট হয় মোগা, হোশিয়ারপুর, কাপুরথালা, আবোহর, পাঠানকোট, বাটালা, মোহালি ও ভাটিন্ডা পুরসভায়। মোহালির ফল বেরোবে কাল বৃহস্পতিবার। সেটি বাদে সব কটি পৌরসভাই কংগ্রেস দখল করেছে। আকালি দলের দুর্জয় ঘাঁটি ভাটিন্ডা পৌরসভায় কংগ্রেস ক্ষমতায় এল দীর্ঘ ৫৩ বছর পর। এই কেন্দ্র থেকেই লোকসভায় জিতে মন্ত্রী হয়েছিলেন আকালি দলের সভাপতি সুখবীর সিং বাদলের স্ত্রী হরসিমরত কৌর, কৃষি আইনের বিরোধিতা করে যিনি মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেন।

কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও পশ্চিম–উত্তর প্রদেশ উত্তাল। কৃষকদের দিল্লি অবরোধ চলছে ৮০ দিন ধরে। আন্দোলন তীব্র উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান ও মধ্য প্রদেশেও। কৃষক সংগঠনের নেতারা দেশের সব রাজ্যে গিয়ে সমাবেশের কর্মসূচি নিয়েছেন। কাল কৃষকেরা সারা দেশে কিছু সময়ের জন্য ‘রেল রোকো’ কর্মসূচি নিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে এই সব রাজ্যের বিজেপি নেতারা উদ্বিগ্ন। গতকাল মঙ্গলবার পাঞ্জাব, হরিয়ানা, পশ্চিম–উত্তর প্রদেশের বিজেপি বিধায়ক ও সাংসদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং টোমারেরা। বিজেপি নেতাদের তাঁরা কৃষি আইনের পক্ষে ব্যাপক প্রচার অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন। বৈঠক আজও চলবে। পাঞ্জাবের ভোটের ফল দেখিয়ে নেতারা বলেছেন, দ্রুত মীমাংসা না হলে এসব রাজ্যে বিজেপির প্রচার করাও কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

হরিয়ানায় বিজেপিকে সরকার চালাতে নির্ভর করতে হচ্ছে জাট কৃষকদের দল জেজেপির ওপর। এই দলের ১০ বিধায়কের মধ্যে ৭ জন ক্ষুব্ধ। জেজেপি সরে এলে বিজেপি সরকারের পতন অনিবার্য। পাঞ্জাব ও উত্তর প্রদেশ বিধানসভার ভোট ২০২২ সালে। এসব রাজ্যের বিজেপি নেতারা কেন্দ্রীয় নেতাদের বলেছেন, কৃষক ক্ষোভ মেটাতে সরকার সচেষ্ট না হলে দলকে দুশ্চিন্তায় পড়তে হবে।