পুলিশের বিরুদ্ধে ঘাড়ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ প্রিয়াঙ্কার

প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। রয়টার্স ফাইল
প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। রয়টার্স ফাইল

কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী অভিযোগ করেছেন, পুলিশ তাঁকে ঘাড় ধরে ধাক্কা মেরে হেনস্তা করেছে। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতার অভিযোগে গ্রেপ্তার একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে তিনি পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। গতকাল শনিবার ভারতের উত্তর প্রদেশের লক্ষ্ণৌতে এ ঘটনা ঘটে।

আজ রোববার এনডিটিভি অনলাইনের খবরে বলা হয়, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী অভিযোগ করেছেন, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা এস আর দারাপুরির (৭৬) ইন্দিরানগরের উদ্দেশে নেতা–কর্মীদের নিয়ে রওনা হয়েছিলেন। পথে পুলিশ তাঁর শোভাযাত্রায় বাধা দেয় এবং দলের একজন কর্মীর মোটরসাইকেলে করে তাঁকে সেখান থেকে চলে যেতে বাধ্য করেন। এরপর দুই কিলোমিটার দূরে সড়কের সংযোগস্থলে তিনি আবারও বাধার মুখে পড়েন। ওই সময় তিনি ওই পুলিশ কর্মকর্তার বাসায় হেঁটেই যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, ‘আমি দারাপুরিজির সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে গেলে ইউপি পুলিশ আমাকে বাধা দেয়। হেনস্তা করে। তারা আমার ঘাড় ধরে ধাক্কা দিলে আমি পড়ে যাই। দলের একজন কর্মীর স্কুটারে যাওয়ার সময় তারা (পুলিশ) আমাকে ঘিরে ছিল। পরে আমি হেঁটে সেখানে পৌঁছাই।’

এদিকে ঘটনার সময়ের এক ভিডিওতে দেখা গেছে, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী সমর্থক ও নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে হেঁটে যাচ্ছেন এবং পুলিশ তাঁকে বাধা দিচ্ছে। পরে তিনি একজন কর্মীর সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে যাওয়ার সময় পুলিশের গাড়ি তাঁকে অনুসরণ করতে থাকে।

বার্তা সংস্থা পিটিআইকে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, ‘আমাকে নারী পুলিশেরা ঘিরে রাখে। একজন নারী পুলিশ কর্মী আমাকে ধাক্কা দেয় এবং আমি নিচে পড়ে যাই। আমাকে জোর করে থামানো হয় এবং একজন নারী পুলিশ আমার ঘাড় ধরে টেনে তোলে। কিন্তু আমি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলাম। পুলিশের নির্যাতনের শিকার প্রত্যেক নাগরিকের সঙ্গে আমি আছি। এটা আমার সত্যগ্রহ।’

এভাবে তাঁকে বাধা দেওয়ার কোনো কারণ ছিল না উল্লেখ করে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, ‘তারা (পুলিশ) আমাকে রাস্তার মাঝখানে আটকায়। বিজেপি সরকার কাপুরুষের মতো কাজ করছে। আমি উত্তর প্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্বে আছি। আমি রাজ্যের কোথায় যাব, সে সিদ্ধান্ত সরকার নিতে পারে না।’

অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার বাসায় তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা হয় প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর। শহরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তাঁকে বাধা দেওয়া হয়েছিল কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি যেখানে শান্তিপূর্ণভাবে যাচ্ছিলাম, সেখানে কীভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নষ্ট হয়? আমাকে বাধা দেওয়ার অধিকার নেই তাদের। যদি তারা আমাকে গ্রেপ্তার করতে চায় তো করুক।’

এদিকে উত্তর প্রদেশ পুলিশ কংগ্রেস নেতাকে হেনস্তার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। লক্ষ্ণৌর জ্যেষ্ঠ পুলিশ সুপার কালানিধি নাইথানি বলেন, প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর শোভাযাত্রাকে তখনই বাধা দেওয়া হয়েছে, যখন সেটি পূর্বপরিকল্পিত পথ ছেড়ে অন্য পথে যাচ্ছিল। অর্চনা সিং নামের যে নারী পুলিশের বিরুদ্ধে তিনি ঘাড় ধরে নিচে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন তা একদমই সত্য নয়। ওই নারী পুলিশ শুধু তাঁর যতটুকু সক্ষমতা আছে তার মধ্যে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করেছেন।

অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা দারাপুরি ক্যানসারে আক্রান্ত। তাঁকে এ সপ্তাহে দাঙ্গার অভিযোগে লক্ষ্ণৌর বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। উত্তর প্রদেশ পুলিশ জানিয়েছে, বিক্ষোভের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার ১ হাজার ১১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।