ফেরিওয়ালার ছদ্মবেশে কলকাতায় ছিলেন ‘জেএমবির’ তিন জঙ্গি

কারাগার
প্রতীকী ছবি

কলকাতায় সন্দেহভাজন তিন জঙ্গি গ্রেপ্তার হওয়ার পর পুলিশ বলছে, বাংলাদেশের জঙ্গিগোষ্ঠী ‘জেএমবি’–এর এই সদস্যরা ফেরিওয়ালা ছদ্মবেশে সেখানে ছিলেন।

তাঁরা দক্ষিণ কলকাতার হরিদেবপুরের এমজি রোডের একটি বাড়িতে অবস্থান করছিল। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে নাজিউর রহমান নামের একজন মাস দুয়েক আগে নিজেকে জয়রাম ব্যাপারী পরিচয় দিয়ে বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিলেন। এরপর ফেরি করে কখনো ফল, কখনো মশারি বিক্রি করতেন তিনি।

তাঁদের চলাফেরা সন্দেহজনক হওয়ায় স্থানীয় লোকজন পুলিশকে জানালে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্স (এসটিএফ) তাঁদের ওপর গোপনে নজরদারি শুরু করে।

একপর্যায়ে নজরদারির বিষয়টি বুঝতে পেরে তিন জঙ্গি এলাকা ছেড়ে পালানোর উদ্যোগ নেওয়ার আগেই রোববার দুপুরে পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করে। এসটিএফ জানায়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা বলেছিলেন তাঁরা চিকিৎসার জন্য কলকাতায় এসেছেন। বাসা ভাড়া নেওয়ার সময় বাড়িওয়ালাকে জানান, তাঁদের সঙ্গে ক্যানসার রোগী রয়েছে।

এসটিএফ গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছে থেকে বেশ কিছু ভুয়া ভারতীয় কাগজপত্র, জিহাদি বই ও লিফলেট, মোবাইল ফোন এবং একটি ডায়েরি উদ্ধার করে। ওই ডায়েরিতে বেশ কিছু বাংলাদেশের মোবাইল নম্বর রয়েছে। লিফলেটে ভারতের বিরুদ্ধে জিহাদি আন্দোলনের ডাক দিয়ে রাজ্যের মায়েদের রান্নাঘরে বোমা তৈরির আহ্বান জানানো হয়।

এসটিএফ আরও জানিয়েছে, বাংলাদেশে অপরাধমূলক কাজের জন্য নাজিউর এর আগে তিন বছর কারাগারে ছিলেন। কারাগারে থাকাকালীন ‘জেএমবি নেতা’ আল আমিনের সংস্পর্শে আসার পর তিনি জেএমবির আদর্শে দীক্ষিত হন। কারাগার থেকে বের হয়ে পশ্চিমবঙ্গে জেএমবির তৎপরতা বাড়ানোর জন্য সঙ্গীদের নিয়ে গোপনে কলকাতায় চলে আসেন।

গ্রেপ্তার তিনজনকে সোমবার কলকাতার আলীপুর আদালতে তোলা হয়। আদালত ২৬ জুলাই পর্যন্ত তাঁদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (এসটিএফ) ভি সলোমান নিশা কুমার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তাঁদের সঙ্গে কোনো আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের যোগসূত্র আছে কি না কিংবা কোনো নাশকতামূলক ঘটনা ঘটানোর উদ্দেশ্য ছিল কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।