বসন্ত উৎসবে মেতেছে শান্তিনিকেতন
প্রতিবছরের মতো এবারও বসন্ত উৎসবে মেতেছে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত শান্তিনিকেতন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বৈতালিকের মাধ্যমে শান্তিনিকেতনে শুরু হয় এই বসন্ত উৎসব। এর আগে গতকাল বুধবার রাত ৯টায় পাঠ ভবন চত্বরে বৈতালিক দিয়ে সূচনা হয় এই বসন্ত উৎসবের।
উৎসব ঘিরে শোভাযাত্রা, আবির খেলা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রী, শিক্ষকসহ দেশ–বিদেশ থেকে আসা অতিথিরা পা মেলান বসন্ত উৎসবে বিশ্বভারতীর আশ্রম চত্বরে। আবির মেখে দেন একে অন্যকে। সকাল ১০টা পর্যন্ত চলে এই উৎসব। এরপর বিশ্বভারতীর বিভিন্ন ভবনের ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের মধ্যে রং খেলায় মেতে ওঠেন। আজ অবশ্য পশ্চিমবঙ্গজুড়ে পালিত হচ্ছে দোল উৎসব।
শান্তিনিকেতনের এই উৎসব মূলত ঋতুরাজ বসন্তকে ঘিরে। তাই নাচে আর রঙে এদিন মাতোয়ারা হন সবাই। কণ্ঠে ভাসে রবীন্দ্রসংগীত আর পা মেলান রবীন্দ্রসংগীতের সুরে রবীন্দ্র নৃত্যের তালে।
এই বসন্ত উৎসব ঘিরে শান্তিনিকেতনের নিরাপত্তা এবারও জোরদার করা হয়। নিয়োগ করা হয় ৭০০ পুলিশ। রয়েছে এর মধ্যে সাদাপোশাকে পুরুষ ও নারী পুলিশও। রয়েছে এখানে বোম স্কোয়াড, অ্যান্টি সাবোটেজ স্কোয়াড, ডগ স্কোয়াডসহ নজরদারির জন্য আনা হয় দুটি ড্রোনও।
আশ্রম মাঠে আয়োজিত এ উৎসব শুরু হয় বসন্ত পূর্ণিমার দিন অতি প্রত্যুষে। গত বছর এই উৎসবে যোগ দিয়েছিল প্রায় দুই লাখ মানুষ। এবার সেই সংখ্যা ছাড়িয়ে যেতে পারে।
মূলত ১৯০৭ সালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট ছেলে শমীন্দ্রনাথ ঠাকুর শুরু করেছিলেন ‘ঋতুরঙ্গ উৎসব’। সেদিন শান্তিনিকেতনের প্রাণকুঠিরের সামনে শুরু হয় এই উৎসব। এখন অবশ্য সেদিনের সেই প্রাণকুঠি শমীন্দ্র পাঠাগার হিসেবে পরিচিত। আগে বসন্তের যেকোনো দিন অনুষ্ঠিত হতো এই উৎসব। পরে অবশ্য বসন্ত পূর্ণিমার দিনই অনুষ্ঠিত হয় এই উৎসব।
সন্ধ্যায় বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের পরিবেশনায় আশ্রম মাঠে আয়োজন করা হয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। সেখানে পরিবেশিত হবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নৃত্যনাট্য শ্যামা।