বাংলাভাষীদের বস্তি ভেঙে দিয়েছে বেঙ্গালুরু পুলিশ

ভারতের দক্ষিণের রাজ্য কর্ণাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুর মারাঠাহাল্লি থানার কাছে কারিয়াম্মানা আগ্রাহরা নামের একটি বস্তি ভেঙে দিয়েছে স্থানীয় বেঙ্গালুরু পৌর করপোরেশন ও স্থানীয় পুলিশ। ওই বস্তিতে বাস করতেন বিভিন্ন রাজ্যের বাংলাভাষী মানুষ। স্থানীয় এক বাসিন্দা চেতনবাবুর জমিতে গড়ে উঠেছিল এই বস্তি। চেতনবাবু এই বস্তি ভাড়া দিয়ে অর্থ আয় করতেন। এখানে দুই শতাধিক অস্থায়ী ঘর ছিল।

এলাকাটি কর্ণাটক বিধানসভার মহাদেবপুরা অংশের অন্তর্গত। সম্প্রতি বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক অরবিন্দ লিম্বভালি এই বস্তির ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন। পোস্টে তিনি অভিযোগ তোলেন, এই বস্তিতে বেআইনিভাবে আসা বাংলাভাষী লোকজন বাস করছে। এতে এই এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এরপর বিষয়টি নজরে আসে স্থানীয় পৌর করপোরেশনের। জমির মালিক চেতনকে তারা নোটিশ দেয়। তারপর পৌর করপোরেশন স্থানীয় পুলিশ নিয়ে গত রোববার বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেয় ওই বস্তির দুই শতাধিক ঘর।

বস্তির বাসিন্দারা বলেন, তাঁরা কর্ণাটক, আসাম ও উত্তর প্রদেশের মানুষ। পেটের দায়ে তাঁরা এখানে এসেছেন। তাঁদের প্রত্যেকের ভারতের ভোটার পরিচয়পত্র, আধার কার্ড ও রেশন কার্ড রয়েছে। পৌর করপোরেশন তাঁদের কোনো নথি যাচাই না করে, কোনো নোটিশ না দিয়ে উচ্ছেদ করেছে।

এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বেঙ্গালুরুর বিশিষ্ট সমাজকর্মী ও আইনজীবী বিনয় শ্রীনিবাস বলেন, দুই শতাধিক বস্তিঘর স্থানীয় পুলিশ নিয়ে ভেঙে দিয়েছে বেঙ্গালুরু পৌর করপোরেশন। পুলিশের মধ্যে বেশির ভাগ ছিল সাদাপোশাকে। এরা সবাই ছিল স্থানীয় মারাঠাহাল্লি থানার পুলিশ। এসব খেটে খাওয়া মানুষ এসেছেন কর্ণাটক রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত, আসাম ও বিহার থেকে। এলাকায় তাঁরা নির্মাণশিল্প, দৈনিক শ্রমিক, পরিচারিকা ও বিভিন্ন আবাসনে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। তাঁদের সবার কাছে রয়েছে ভারতের ভোটার পরিচয়পত্র, রেশন কার্ড, আধার কার্ড।