বিজেপি ছাড়লেও সংসদে থাকছেন বাবুল সুপ্রিয়

সংগীতশিল্পী ও বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়
ফাইল ছবি

ভারতের সংগীতশিল্পী ও বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় অবশেষে মত পাল্টালেন। গতকাল সোমবার রাতে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গে তাঁর দিল্লির বাসভবনে বৈঠকের পর এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, রাজনীতি ছাড়লেও বিজেপির সাংসদ পদ ছাড়ছেন না। ওই পদে থেকে তিনি তাঁর সংসদীয় এলাকা আসানসোলের মানুষের জন্য কাজ করে যাবেন। থাকবেন আসানসোলের মানুষের পাশেই।

গতকাল রাত নয়টায় বৈঠক শেষে বাবুল সুপ্রিয় তাঁর ফেসবুক পোস্টে লেখেন, তিনি রাজনীতি থেকে বিদায় নিলেও সাংসদ পদে থাকবেন, সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করবেন। আসানসোলের মানুষের সেবা করবেন। তবে তিনি কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দেবেন না। যোগ দেবেন না কোনো রাজনৈতিক সভা–সমাবেশ বা অনুষ্ঠানে।
বাবুল সুপ্রিয় বলেন, ‘আসানসোলের মানুষ আমাকে সব সময় তাঁদের পাশে পাবেন। একজন সাংসদের কাছে আসানসোলের মানুষের এটা প্রাপ্য, প্রত্যাশিত।’ যদিও এর আগে গত শনিবার বাবুল সুপ্রিয় ঘোষণা দিয়েছিলেন, তিনি রাজনীতি ছাড়ছেন। বলেছিলেন, ‘চললাম। বিদায়!’

জেপি নাড্ডার সঙ্গে বৈঠকের আগে বাবুল সুপ্রিয় ফোনে কথা বলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গেও। তবে বাবুল সুপ্রিয় কেন এ সিদ্ধান্ত নিলেন, তা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি সরগরম। কেউ কেউ বলছেন, এবারের মন্ত্রিসভার পুনর্বিন্যাসে বাবুল সুপ্রিয় ঠাঁই না পাওয়ায় তিনি মনঃকষ্টে এমনটা করেছেন। যদিও বাবুল সুপ্রিয় বলেছেন, তিনি আর রাজনীতিতে থাকতে চান না। এবার তিনি মন দেবেন সমাজসেবায়। তাঁর কথা, রাজনীতি ছাড়াও সমাজসেবা করা যায়। তিনি বলেন, ‘সাত বছর তো ছিলাম। এবার বিদায়ের পালা।’

বাবুল সুপ্রিয় শনিবার লিখেছিলেন, তিনি পদত্যাগ করবেন সাংসদ পদ থেকে। ছেড়েও দেবেন দিল্লির সরকারি বাসভবন। কিন্তু বিজেপি নেতা জেপি নাড্ডা ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে কথা বলার পর বাবুল সুপ্রিয় গতকাল রাতেই তাঁর ফেসবুক পোস্টে জানিয়ে দেন, তিনি রাজনীতি থেকে সরে গেলেও বিজেপির সাংসদ পদ ছাড়ছেন না।

যদিও বাবুল সুপ্রিয় রাজনীতি ও সাংসদ পদ ছাড়ার ঘোষণার দিনই তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, ‘এত দিন বাবুল ভালো গান গেয়েছেন, এবার শুরু করেছেন নাটক। এই নাটক না করে বরং ইস্তফা দিন।’

বাবুল সুপ্রিয় শুধু সংগীতশিল্পী নন; অভিনেতা, সুরকার ও সংগীত পরিচালকও। বয়স ৫০ বছর। ২০১৪ সালে প্রথম তিনি বর্ধমানের আসানসোল আসনে সাংসদ হন। হন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। ২০১৯ সালে ফের তিনি সাংসদ হন আসানসোল আসনেই। কিন্তু এবারের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি তাঁকে টালিগঞ্জ আসনে বিধায়ক পদে প্রার্থী করেন। সেই নির্বাচনে বাবুল সুপ্রিয় হেরে যান। এরপর তিনি তাঁর আগের সাংসদ পদ নিয়ে রাজনীতিতে থেকে যান। কিন্তু গত ৮ জুলাই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার পুনর্গঠনের সময় বাদ পড়ে যান তিনি।