মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির দুই নেতা-নেত্রীর অবমাননাকর মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র এই নিন্দা জানায়। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বিজেপির দুই কর্মকর্তার আপত্তিকর মন্তব্যের নিন্দা জানাই। তবে দলটি (বিজেপি) প্রকাশ্যে এই মন্তব্যের নিন্দা করায় আমরা সন্তুষ্ট।’
নেড প্রাইস আরও বলেন, ‘ধর্ম বা বিশ্বাসের স্বাধীনতাসহ মানবাধিকারসংক্রান্ত উদ্বেগের বিষয়ে আমরা উচ্চপর্যায়ে ভারত সরকারের সঙ্গে নিয়মিতভাবে কাজ করি। মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা বাড়াতে আমরা ভারতকে উৎসাহিত করি।’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জাতীয় মুখপাত্রের দায়িত্বে ছিলেন নূপুর শর্মা। তিনি গত ২৬ মে এক টেলিভিশন বিতর্কে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেন।
বিজেপির দিল্লি শাখার তৎকালীন গণমাধ্যম প্রধান নবীন কুমার জিন্দালও মহানবী (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেন। তিনি টুইটারে অবমাননাকর মন্তব্য করেন।
বিজেপির দুই নেতার অবমাননাকর মন্তব্যে দেশ-বিদেশে নিন্দা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। ভারতজুড়ে বিক্ষোভ দেখায় মুসলিম সম্প্রদায়। কোথাও কোথাও বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নেয়। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় আরব ও মুসলিম বিশ্ব। কমপক্ষে ১৬টি দেশ থেকে নিন্দা জানানো হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশ ভারতের রাষ্ট্রদূতদের তলব করে প্রতিবাদ জানায়।
অবমাননাকর মন্তব্যের নিন্দা জানায় অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)।
সমালোচনার মুখে নিজের বক্তব্য প্রত্যাহার করেন নূপুর। আর টুইট মুছে ফেলেন নবীন। দেশ-বিদেশে তীব্র সমালোচনার মুখে নূপুরকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিজেপি। নবীনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়।
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, দুই নেতার মন্তব্য নিজস্ব অভিমত। ভারত সরকারের মনোভাব নয়। ভারত সরকার সব ধর্মের প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধাশীল।
অবমাননাকর মন্তব্যের প্রায় দুই সপ্তাহ পর নূপুর ও নবীনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। মামলায় ঘৃণামূলক বক্তৃতা প্রদান, উসকানি দেওয়া, সমাজের শান্তি-সম্প্রীতি বিঘ্নিত করে—এমন পরিস্থিতি তৈরি করার অভিযোগ আনা হয়।