বিজেপির ‘বহিরাগত’ নিয়ে তৃণমূলের কথা শুরু

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ
ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনে বিজেপির ‘বহিরাগত’ নিয়ে কথা তুলতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আগমী এপ্রিল থেকে মে মাসে এই রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা আসনে ভোট গ্রহণের কথা। সেই নির্বাচন সামনে রেখে এখন উত্তপ্ত হয়ে পড়েছে রাজ্য রাজনীতি। রাজ্যের প্রধান দল তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি, জাতীয় কংগ্রেস ও বাম দল ইতিমধ্যে মাঠে নেমে পড়েছে।

নির্বাচন সামনে রেখে জয়ের আশা নিয়ে মাঠে নেমেছে বিজেপি। বিজেপির কেন্দ্রীয় পাঁচ নেতাকে রাজ্যে নির্বাচন তদারকির জন্য পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে।

তাঁরা হলেন সুনীল দেওধর, বিনোদ সোনকার, বিনোদ তাওড়ে, দুষ্মন্ত গৌতম ও হরিশ দ্বিবেদি। তাঁরা কেউই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা নন। তাঁরা বুথ স্তর পর্যায়ের নির্বাচনী কাজ শুরু করেছেন। এই পাঁচ নেতাকে ‘বহিরাগত’ আখ্যা দিয়ে মাঠে নেমে পড়েছে তৃণমূল।
তৃণমূলের এ প্রচারে অসন্তুষ্ট বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। গতকাল বুধবার সকালে কলকাতার ক্যানিং স্ট্রিটে তিনি বলেন, বাংলার উন্নয়নে অবাঙালিদের অবদান অনেক বেশি। কিন্তু তাঁরা বহিরাগত নন। ২০০ বছর আগে ব্রিটিশ আমল থেকেই বাংলায় বাইরের মানুষ এসে এখানে বসতি স্থাপন করে উন্নয়নে শরিক হয়েছেন। তাঁদের অবদান অস্বীকার করা যাবে না। তাঁদের অবদান অনেক বেশি। কেন এই বহিরাগত প্রশ্ন আসবে?

বিজেপি নেতা মুকুল রায় বলেছেন, ‘সাবেক রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ, প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু, ইন্দিরা গান্ধীর অবদান কি এই রাজ্যের জন্য বেশি ছিল না? সেটা কি আজ অস্বীকার করা যায়? শুধু কি তা–ই? এই কলকাতার কুলি, মজুর, রিকশাচালক ভিন রাজ্যের অবাঙালিরা।’

দিলীপ ঘোষ প্রশ্ন তুলেছেন, ‘রাজ্য সরকার এই বাংলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর করেছেন প্রখ্যাত অভিনেতা শাহরুখ খানকে। মমতার দল নির্বাচনে জয়ের জন্য নিয়োগ করেছেন ‘ভোট কৌশলী’ হিসেবে পরিচিত প্রশান্ত কিশোরকে। তাঁরা বহিরাগত নন?’
বিজেপি ও তৃণমূলের এ কথার লড়াইকে বাংলার জন্য অপমানজনক হিসেবে মন্তব্য করেছেন কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি অধীর চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘এই বাংলার মানুষ কোনো দিন বাঙালি-অবাঙালি বিভাজন বুঝতেন না। নতুন করে তা উঠে আসছে রাজনীতিতে। এটা অনভিপ্রেত। এটা মানা যায় না।’

তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘ভাষার ভিত্তিতে পশ্চিমবঙ্গকে ভাঙার চেষ্টা হচ্ছে। ওরা আগুন নিয়ে খেলছে। এটা মানতে পারি না।’