ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিধানসভা উপনির্বাচনে ভবানীপুর আসনের পাশাপাশি মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জ আসন দুটিতেও বড় ব্যবধানে জিতলেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীরা।
মুর্শিদাবাদে ৭০ শতাংশের কাছাকাছি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাস। এ কারণে এখানে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জেতার কোনো সম্ভাবনাই ছিল না। পূর্ব ধারণা অনুযায়ী তৃণমূলই জিতেছে। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণভাবে জঙ্গিপুরে বিজেপির ভোট বেড়েছে। ২০১৬ সালে দলটি ১৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিল, এবার তা বেড়ে হয়েছে ২২ শতাংশ। যদিও এই কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী ও মন্ত্রী জাকির হোসেন পেয়েছেন প্রায় ৬৯ শতাংশ ভোট। তিনি বিজেপির প্রার্থীকে হারিয়েছেন ৯২ হাজারের বেশি ভোটে। এই কেন্দ্রে বামপন্থীদের ভোট ২৬ থেকে কমে ৯ শতাংশে নেমেছে। সম্ভবত সেই ভোটই পড়েছে বিজেপির বাক্সে।
সামশেরগঞ্জ আসনে তৃণমূল প্রার্থী আমিরুল ইসলাম তাঁর নিকটতম কংগ্রেসের প্রার্থীকে ২৬ হাজারের বেশি ভোটে হারালেও কংগ্রেসের ঝুলিতে পড়েছে উল্লেখযোগ্য ভোট। কংগ্রেস প্রার্থী ও এলাকার পরিচিত মুখ জইদুর রহমান পেয়েছেন ৩৭ শতাংশ ভোট। ২০১৬ সালের নির্বাচনে কংগ্রেস-সমর্থিত প্রার্থী পেয়েছিলেন প্রায় ২৭ শতাংশ ভোট। সিপিআইএম দলের ভোট ২৯ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৩ শতাংশে।
ভবানীপুরে বড় ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি। তারা হেরে যাবে এটা বুঝলেও ভোট রাতারাতি ৩৫ থেকে কমে ২২ শতাংশ হয়ে যাবে, এটা বিজেপি টের পায়নি। এই আসনে বিজেপির ভোট এক দশক ধরে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছিল। ভবানীপুরে ৫৮ হাজারের বেশি ভোটে জিতেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলকে হারানো ভারতের যেকোনো রাজ্যে খুব কঠিন কাজ ধরে নিলেও ভোট কমে যাওয়া বিজেপির জন্য যে একটা ধাক্কা, তা স্বীকার করেছেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপির সাবেক সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেছেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম ওখানে (ভবানীপুরে) আমরা ভোট পাব। কিন্তু সেটা কেন হয়নি, আমাদের দেখতে হবে।’ ভবানীপুর আসনের আটটি ওয়ার্ডের দুটিতে এপ্রিল মাসের নির্বাচনেও এগিয়ে ছিল বিজেপি। সেখানেও তারা হেরেছে।
তবে তিনটি আসনে জিতলেও বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্যসংখ্যা যা ছিল, তা-ই থাকছে। গত এপ্রিলের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল ২১৩ আসন পেয়েছিল। তাদের আসনসংখ্যা তা-ই থাকছে। কারণ, গোসাবা ও খড়দহ—এই দুই আসনে দুই এমএলএ নির্বাচনে জেতার পর মারা গেছেন। আর ভবানীপুরে আগেও জিতেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তবে ৩০ অক্টোবর চারটি আসনে উপনির্বাচনের পর তাদের সদস্যসংখ্যা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।