বিদ্রোহের মুখে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব

ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।
ছবি: টুইটার

ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব নিজ দলের কিছু বিধায়কের বিদ্রোহের মুখে পড়েছেন। আজ সোমবার এনডিটিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

বিপ্লবের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছেন রাজ্যের ক্ষমতাসীন বিজেপির একদল বিধায়ক। তাঁরা বিপ্লবকে নেতৃত্ব থেকে সরাতে নালিশ নিয়ে নয়াদিল্লি গেছেন।

বিদ্রোহী এমএলএরা নয়াদিল্লিতে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করছেন। তাঁরা দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবের ‘অপশাসন’ ও ‘দুর্বল নেতৃত্বের’ বিষয়টি তুলে ধরতে চান।

বিদ্রোহী দলটির নেতৃত্বে আছেন রাজ্যের সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও প্রভাবশালী এমএলএ সুদীপ রায় বর্মণ। তিনি বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা ও সাধারণ সম্পাদক বিএল সন্তোষের সাক্ষাৎ চেয়েছেন।

নয়াদিল্লিতে অবস্থানরত এক বিদ্রোহী বিধায়ক নাম প্রকাশ না করে বলেন, তাঁরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গেও দেখা করার চেষ্টায় আছেন।

ওই বিধায়ক বলেন, তাঁরা প্রায় ১২ জন বিধায়ক আছেন। তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাঁরা দলীয় নেতৃত্বকে মুখ্যমন্ত্রীর পূর্ণ একনায়কতন্ত্র ও দুর্বল শাসন সম্পর্কে অবহিত করবেন। যার কারণে রাজ্যে তাঁদের দল খুবই অজনপ্রিয় হয়ে পড়ছে।

বিধায়ক বলেন, ‘আমরা জাতীয় নেতৃত্বকে বলতে চাই, আমরা সবাই দলের একনিষ্ঠ কর্মী। আমরা চাই, রাজ্যে বিজেপির শাসন এক মেয়াদের বেশি সময় ধরে থাকুক। কিন্তু রাজ্যে বর্তমান নেতৃত্ব বহাল থাকলে বিরোধী শক্তি, বিশেষ করে বাম ও কংগ্রেস তাদের হারানো মাঠ ফিরে পাবে।’

বিভিন্ন বিষয়ে উল্টাপাল্টা মন্তব্য করে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব ইতিমধ্যে দলকে একাধিকবার বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছেন বলে অভিযোগ বিধায়কের।

বিদ্রোহী বিধায়কেরা বলেছেন, রাজ্যে করোনা সংকট খুব বাজেভাবে মোকাবিলা করা হচ্ছে। যার কারণে কেন্দ্র থেকে ত্রিপুরায় বিশেষ দল পাঠাতে হয়েছে। চলমান এই মহামারির সময় রাজ্যে কোনো নিবেদিত স্বাস্থ্যমন্ত্রী নেই।

ওই বিধায়কের ভাষ্য, দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায়ক নেতৃত্বের পরিবর্তন চান।

অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবের এক ঘনিষ্ঠ সহযোগীর ভাষ্য, মাত্র সাত থেকে আটজন বিধায়ক রাজ্য সরকারের কাজকর্ম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় ব্যাঘাত সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। তাঁদের বেশির ভাগই কংগ্রেস থেকে আসা।

২০১৮ সালে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জয় পায় বিজেপি ও তার মিত্র পিপলস ফ্রন্ট অব ত্রিপুরা (আইপিএফপি)। ৬০ আসনের বিধানসভায় বিজেপি পায় ৩৬ আসন। আইপিএফপি পায় ৮ আসন। তাদের এই জয়ে ত্রিপুরায় টানা ২৫ বছরের বামফ্রন্ট সরকারের পতন হয়।

সরকারের দুই বছর না যেতেই রাজ্য বিজেপিতে বিভক্তি চরম আকার ধারণ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবের বিরুদ্ধে দল পাকাচ্ছেন বিজেপিরই বিধায়ক সুদীপ। সুদীপ একসময় কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনীতি করেছেন। পরে যোগ দেন বিজেপিতে।