বিশাল হিমবাহে ধস, পানির তোড়ে নিখোঁজ দেড় শতাধিক

উদ্ধার অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন রাজ্যের দুর্যোগ প্রতিরোধ প্রতিষ্ঠানের সদস্যরা। শ্রীনগর, উত্তরাখণ্ড, ৭ ফেব্রুয়ারি।
ছবি: এএফপি

ভারতে বিশাল একটি হিমবাহ ধসে যাওয়ায় একটি বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে বাঁধ ঘিরে গড়ে ওঠা পানিবিদ্যুৎকেন্দ্রে নিয়োজিত দেড় শতাধিক কর্মীর মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। পানির তোড়ে বন্যা দেখা দেওয়ায় আশপাশের হাজার হাজার মানুষকে উদ্ধার করার কাজ শুরু হয়েছে। আজ রোববার উত্তরাখণ্ড রাজ্যের চামোলি জেলার জোশিমঠে এই ঘটনা ঘটে।

উত্তরাখণ্ড রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত বলেছেন, এনটিপিসি ও রিশিগঙ্গা বিদ্যুৎ প্রকল্পে ১৬০ জনের মতো মানুষ কাজ করতেন। তাঁদের অবস্থান শনাক্ত ও উদ্ধার করার কাজ করছে উদ্ধারকারী দল। উদ্ধার কার্যক্রম জোরালোভাবে চালানো হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে উদ্ধারকাজ চলছে।

ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, সকালে হঠাৎ করেই হিমবাহটি ভেঙে পড়ে। এতে অলকনন্দ ও ধউলিগঙ্গার পানি বিপৎসীমার ওপরে ওঠে যায়। ফলে প্রাণহানি এড়াতে স্থানীয় হাজারো বাসিন্দাকে উদ্ধার করা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় পাশের রিশিগঙ্গা ও এনটিপিসি বিদ্যুৎকেন্দ্র। দুর্যোগ প্রতিরোধ দল মোতায়েন করা হয়েছে সেখানে। সেনাবাহিনীর সদস্যরা উদ্ধার অভিযানে কাজ করছেন। হেলিকপ্টারে করে দুর্ঘটনার গতিবিধি নজরদারি করছেন সেনাসদস্যরা। এ ছাড়া দুটি চিকিৎসা দল ও একটি প্রকৌশলী টাস্কফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। ওই বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাছে অন্তত ১০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

উত্তরাখণ্ড রাজ্যের প্রধান সচিব ওম প্রকাশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, মৃতের প্রকৃত সংখ্যা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে ১০০ থেকে ১৫০ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে।

. হিমবাহ ধসের কারণে বন্যার সৃষ্টি হয়। উত্তরাখণ্ড, ৭ ফেব্রুয়ারি।
ছবি: রয়টার্স

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে স্থানীয় রাইনি গ্রামের বাসিন্দা প্রত্যক্ষদর্শী সঞ্জয় সিং রানা বলেছেন, ‘ঘটনাটি (হিমবাহ ধস) এত দ্রুত ঘটে যে বাসিন্দাদের অন্যত্র সরে যাওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। আমার মনে হয়েছিল, আমরা পানির তোড়ে হয়তো ভেসে যাব। তাই উঁচু স্থানে আশ্রয় নিতে বাধ্য হই।’ রানা বলেন, ‘স্থানীয় লোকজন মনে করছেন, হিমবাহ ধসের ঘটনা যেখানে ঘটেছে, তার পাশেই অবস্থিত পানিবিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মীরা পানির তোড়ে ভেসে গেছেন। এ ছাড়া নদীসংলগ্ন এলাকায় জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ এবং পশু চরাতে আসা লোকজনও পানিতে ভেসে গেছেন। তবে কত লোক ভেসে গেছেন, তার সঠিক ধারণা আমাদের কাছে নেই।’

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম চালানোর জন্য দুর্যোগ প্রতিরোধ দল পাঠানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, দুর্ঘটনাটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন তিনি। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াতের সঙ্গে কথা বলার পর টুইট করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পুরো ভারত উত্তরাখণ্ডের পাশে রয়েছে এবং জাতি প্রত্যেকের মঙ্গলের প্রার্থনা করছে।’