বিহারে এই প্রথম মুসলিমবিহীন মন্ত্রিসভা

বিহারে গত সোমবার নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হয়েছে। ১৪ জন মন্ত্রীর মধ্যে কোনো মুসলমান রাখা হয়নিছবি: সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গের পাশের রাজ্য বিহার। অর্থনৈতিক দিক থেকে বিহার ভারতের অনগ্রসর রাজ্যগুলোর একটি। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এই রাজ্যের বিধানসভার ২৪৩ আসনের নির্বাচন। সেই নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর গত সোমবার  বিজেপির নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হয়েছে। শপথ নিয়েছেন ১৪ জন মন্ত্রী। আবার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন সংযুক্ত জনতা দলের (জেডিইউ) নেতা নীতীশ কুমার।

এবার এনডিএ জোটে নীতীশের দলের চেয়ে বেশি আসন পেয়েছে বিজেপি। তবুও দুটি উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিয়েছে বিজেপি। মন্ত্রিসভায় বিজেপির মন্ত্রীর পাল্লা ভারি। এনডিএর এই ১৪ জন মন্ত্রীর মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীসহ ৫ জন জনতা দল সংযুক্তের, দুই উপমুখ্যমন্ত্রীসহ ৭ জন বিজেপির। আর বাকি ২ জন অপর দুটি শরিক দলের।

১৪ জনের মন্ত্রিসভায় এবার একজন মুসলিমেরও ঠাঁই হয়নি। যদিও বিহারের মন্ত্রিসভার ইতিহাসে এবারই ছিল ব্যতিক্রম। সর্বশেষ নীতীশ কুমারের মন্ত্রিসভায় খুরশিদ আলম নামের এজন মুসলিম মন্ত্রী ছিলেন। এবার বিধানসভা নির্বাচনে এনডিএ জোটের কোনো মুসলিম প্রার্থী ছিলেন না। তবে নীতীশের দলের ১১ জন মুসলিম প্রার্থী নির্বাচনে লড়লেও কেউ জয়ী হতে পারেননি।

এনডিএ জোটের ১৪ জন মন্ত্রীর মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীসহ ৫ জন জনতা দল সংযুক্তের, ২ উপমুখ্যমন্ত্রীসহ ৭ জন বিজেপির। বাকি দুজন দুটি শরিক দলের
ছবি: সংগৃহীত

বিহারে জনসংখ্যার ১৬ শতাংশ মুসলিম। মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ গ্রহণের পরই একজনও মুসলিমকে না রাখায় সমালোচনা ও বিতর্ক শুরু হয়েছে। সমালোচনার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার জানিয়ে দেন, পরবর্তী মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের সময় রাজ্য মন্ত্রিসভায় নেওয়া হবে মুসলিম মন্ত্রী।

বিহারে কোটিপতি মন্ত্রিসভা

এদিকে বেসরকারি সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস বা এডিআর এবং ইলেকশন ওয়াচ যৌথভাবে এক সমীক্ষা চালিয়েছিল। গতকাল বুধবার প্রকাশিত সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ১৪ মন্ত্রীর মধ্যে ৮ জনের বিরুদ্ধে এখনো ঝুলছে ফৌজদারি মামলা। আবার শিক্ষামন্ত্রী মেওয়ালালসহ ১৪ মন্ত্রীর মধ্যে ১৩ জনই কোটিপতি। এঁদের গড় সম্পদের পরিমাণ ৩ কোটি ৯৩ লাখ রুপি। আর শিক্ষামন্ত্রী মেওয়ালালের সম্পত্তির পরিমাণ ১২ কোটি ৩১ লাখ রুপি। তাঁর বিরুদ্ধেও আছে ৪টি ফৌজদারি মামলা।

পশুপালন ও মৎস্যমন্ত্রী সুকেশ সাহানির বিরুদ্ধে রয়েছে ৫টি, জীবেশ কুমারের বিরুদ্ধে আছে ৫টি মামলা।

এডিআর তাদের রিপোর্টে বলেছে, বিজয়ী প্রার্থীদের মধ্যে ১৬৩ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের মামলা আছে। এর মধ্যে ১২৩ জন নিজেদের পেশ করা হলফনামায় স্বীকার করেছেন ফৌজদারি মামলার কথা। তাঁরা বলেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আছে খুন, খুনের চেষ্টা, অপহরণ, নারীদের ওপর অত্যাচারের নানা মামলা। এ বছর এই সংখ্যা ১৬৩ জনের বিরুদ্ধে পাওয়া গেলেও ২০১৫ সালের নির্বাচনে এই সংখ্যা ছিল ১৪২ জন। শতকরা হিসাবে যা ৫৮ শতাংশ। এবার বেড়ে হলো তা ৬৮ শতাংশ।