‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ সংক্রমণ বাড়ছে, তৎপর হয়েছে মহারাষ্ট্র সরকার

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত ভারত। এর মধ্যে সেখানে নতুন আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে করোনা থেকে সেরে ওঠাদের ছত্রাক সংক্রমণ
ফাইল ছবি: রয়টার্স

করোনাভাইরাস সংক্রমণে বিপর্যস্ত ভারতে নতুন আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে মিউকরমাইকোসিস নামে এক ধরনের ছত্রাকের সংক্রমণ। এতে এরই মধ্যে চোখ হারিয়েছেন অনেক রোগী। এর চিকিৎসাও অত্যন্ত ব্যয়বহুল। প্রতিদিন একজন রোগীর জন্য প্রায় ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকা খরচ করতে হয়। এই প্রেক্ষাপটে প্রাণঘাতী এই রোগের চিকিৎসা বিনা মূল্যে করার ঘোষণা দিয়েছে মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকার।
মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ তোপে মঙ্গলবার বলেছেন, তাঁদের রাজ্যে এখন দুই হাজারের বেশি মিউকরমাইকোসিস রোগী থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ছাড়া কোভিড-১৯ সংক্রমণ বাড়তে থাকায় এই রোগীও বাড়বে।

ভারতে করোনাভাইরাস থেকে সেরে ওঠা বা সুস্থ হওয়ার পথে থাকা রোগীদের মিউকরমাইকোসিসের সংক্রমণ ঘটছে। আগ্রাসী এই ছত্রাক নাক, চোখ এবং কখনো কখনো মস্তিষ্কেও ছড়িয়ে পড়ে। ছত্রাকটি ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ নামেও পরিচিত।
সাধারণত ডায়াবেটিস এবং ক্যানসার ও এইডসের মতো রোগে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে যাঁদের করোনাভাইরাস হচ্ছে, তাঁরাই এই ছত্রাক সংক্রমণের বেশি ঝুঁকিতে থাকছেন। করোনায় তাঁদের দেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা আরও দুর্বল হওয়ার ফলে এটা ঘটছে বলে চিকিৎসকদের ধারণা। আক্রান্ত অনেকের জীবন বাঁচাতে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চোখ ফেলে দিতে হয়েছে।

আরও পড়ুন

এই পরিস্থিতিতে এই রোগের চিকিৎসায় গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ তোপে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘মহাত্মা ফুলে জন-আরোগ্য যোজনা’র মাধ্যমে রাজ্যের এক হাজার হাসপাতালে এই রোগের চিকিৎসা বিনা মূল্যে হবে।
রাজেশ তোপে বলেন, মিউকরমাইকোসিসের ওষুধ বাজারে অত্যন্ত চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। চারদিক থেকে সরকারের কাছে অভিযোগ আসছে। তাই সরকার এর কালোবাজারি বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছে। তাই ওষুধ আর ইনজেকশনের দাম নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এক লাখ ইনজেকশন কেনারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।

মিউকরমাইকোসিসের চিকিৎসায় অ্যান্টি ফাঙ্গাল ওষুধ ‘এম্ফোটেরসিন বি’ ব্যবহার করা হয়। ব্যয়বহুল এই ওষুধটি বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে রোগীকে দিতে হয়। অনেকে এত খরচ দেখে এই রোগের চিকিৎসা করান না।
মহারাষ্ট্রের বিদর্ভ আর উত্তর মহারাষ্ট্রে এই রোগীর সংখ্যা বেশি। এই সময় ডায়াবেটিস রোগীদের আরও বেশি করে সাবধানে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।