ভারতে টিকার দাম নিয়ে প্রশ্ন
মহামারির সময় কোভিডের টিকা প্রস্তুতকারীদের ভারত সরকার কি মাত্রাছাড়া মুনাফার সুযোগ করে দিল? প্রশ্নটা উঠেছে বেসরকারি হাসপাতালের জন্য কোভিডের বিভিন্ন টিকার দাম উচ্চহারে বেঁধে দেওয়াকে কেন্দ্র করে।
বৈষম্য মূলক টিকা নীতিতে পরিবর্তন এনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নতুন নীতি ঘোষণার পাশাপাশি ঘোষিত হয়েছে বেসরকারি হাসপাতালের জন্য টিকার নতুন দাম। সারা দেশের সর্বত্র বেসরকারি হাসপাতালগুলো এই দামে টিকা দিতে বাধ্য হবে। ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেওয়া সেই দাম অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, সবচেয়ে সস্তার টিকা ‘কোভিশিল্ড’। পুনের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই টিকার দাম ধরা হয়েছে ৭৮০ রুপি। রাশিয়ার প্রতিষেধক ‘স্পুতনিক-ভি’ বিক্রি হবে ১ হাজার ১৪৫ রুপিতে। সবচেয়ে দামি টিকা হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেকের তৈরি ‘কোভ্যাক্সিন’। এর দাম পড়বে ডোজ প্রতি ১ হাজার ৪১০ রুপি। এই দামের মধ্যে ধরা থাকছে ১৫০ রুপি সার্ভিস চার্জ ও ৫ শতাংশ হারে কর। এর বেশি কেউ নিতে পারবে না।
চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি থেকে ভারতে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। সে সময় বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ‘কোভিশিল্ড’ ও ‘কোভ্যাক্সিন’-এর দামে কোনো তারতম্য ছিল না। প্রথম পর্যায়ে টিকা দেওয়া হয় চিকিৎসাব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত সম্মুখসারির কর্মীদের। সরকারি ব্যবস্থাপনায় বিনা মূল্যে টিকা দেওয়ার পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালে দুই টিকার দাম বেঁধে দেওয়া হয়েছিল ২৫০ রুপিতে। পরবর্তী সময়ে এভাবেই চালু হয় ৪৫-ঊর্ধ্বদের টিকা দান। কেন্দ্রীয় সরকার ১৮-৪৪ বছর বয়সীদের টিকা দেওয়ার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দামে পরিবর্তন আসে। বেসরকারি হাসপাতাল একেক টিকার একেক রকম দাম ধার্য করে। কোথাও ৮৫০ রুপিতে, কোথাও দেড় হাজারে।
সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে দামের এই তারতম্য গণটিকাকরণের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াবে কি না, সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সরকারি সরবরাহের তুলনায় বেসরকারি হাসপাতালে সরবরাহ বেশি হলে অনেকেই বাধ্য হবে সেদিকে ঝুঁকতে। মহামারি মোকাবিলায় এই তারতম্যের পাশাপাশি বড় হয়ে উঠেছে মাত্রাছাড়া মুনাফার প্রশ্নটি। এখন দেখার সুপ্রিম কোর্টের কাছে জবাবদিহিতে সরকার কী ব্যাখ্যা দেয়।