ভারতে লকডাউন না মানলে কঠোর শাস্তি

লকডাউন না মেনে পশ্চিমবঙ্গের জাঞ্জিরা বাজারে মানুষের ভিড়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
লকডাউন না মেনে পশ্চিমবঙ্গের জাঞ্জিরা বাজারে মানুষের ভিড়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

করোনা প্রতিরোধে গত ২৪ মার্চ থেকে ভারতজুড়ে চলছে তিন সপ্তাহের লকডাউন। ভারতের ২৮টি রাজ্য এবং ৯টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে এই লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে। তবে কিছু কিছু রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় কিছু মানুষ জেনেশুনেও লকডাউন অমান্য করে চলেছে।

আবার অনেক রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় লকডাউন নিয়ে রাজ্য সরকার নতুন নিয়ম চালু করেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের লকডাউনের নির্দেশনা অমান্য করে নতুন নতুন বিধি চালু করা হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ কেন্দ্রীয় সরকার। তারা বলছে, করোনা প্রতিরোধে হাত ধোয়া ও লকডাউনের বিকল্প নেই। তাই কষ্ট হলেও দেশের মানুষ ও দেশকে রক্ষা করতে লকডাউন চালিয়ে যেতে হবে। নইলে সারা দেশে করোনা প্রতিরোধ করা যাবে না।

স্থানীয় সময় গত বুধবার ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা সব রাজ্যের মুখ্য সচিবকে এক চিঠিতে জানিয়েছেন, প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে লকডাউন চালিয়ে যেতে হবে। লকডাউন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের জারি করা নির্দেশনা অবশ্যই মানতে হবে।

মহেশতলায় রেশনের দোকানে ভিড়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
মহেশতলায় রেশনের দোকানে ভিড়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

কোনো রাজ্য নিজেদের ইচ্ছেমতো কাউকে ছাড় দিতে পারবে না। কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। লকডাউনে যেসব ছাড় দেওয়া আছে, তা কার্যকর করতে হবে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইন–২০০৫ এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারাবলে লকডাউন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। এই আইনে লকডাউন অমান্য করলে ২ বছরের কারাদণ্ড ও একই সঙ্গে অর্থ জরিমানার বিধান রয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ কথাও বলেছে, অনেক রাজ্য এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কথা না বলে নিজেদের মতো করে লকডাউনের নিয়মনীতি কার্যকর করছে। পশ্চিমবঙ্গে যেমন দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মিষ্টির দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গেও বিভিন্ন শহর ও গ্রামাঞ্চলে লকডাউন অমান্য করার প্রবণতা দেখা গেছে। অনেক এলাকায় মানুষ লকডাউন না মেনে বাজারে যাচ্ছে। নিরাপদ দূরত্বে না থেকে বাজার করছে। রেশনের দোকানে লাইন নিয়ে নিয়ম ভেঙে রেশন তুলছে। ভিড় জমছে হাটবাজার ও রেশনের দোকানে। রেশন তোলা নিয়ে সংঘর্ষও হচ্ছে। সংঘর্ষে জনতার সঙ্গে পুলিশও জড়িয়ে পড়ছে। এ কারণে এই লকডাউন নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

মহেশতলায় রেশনের দোকানে লম্বা লাইন। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
মহেশতলায় রেশনের দোকানে লম্বা লাইন। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

তবে রাজ্য পুলিশও ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নয়। তারাও হাটবাজারে গিয়ে লকডাউন মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছে। রাজ্যের বিভিন্ন সড়কে শুরুও করেছে তল্লাশি অভিযান। বিনা প্রয়োজনে যেসব গাড়ি রাস্তায় নামছে, সেগুলো আটকাতে বিভিন্ন সড়কে বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেটিং। গাড়ি নামানোর যথার্থ প্রমাণ যাঁরা দিতে পারছেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা করছে। জরিমানা করছে। দক্ষিণ কলকাতার জাঞ্জিরা বাজার, মহেশতলার রেশনের দোকান, লেক সার্কাসের বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, অনেকেই লকডাউন মানছে না।

ভারতের এই লকডাউনের প্রশংসা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।