ভারতে ১ মে থেকে ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের টিকা

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা উৎপাদন করছে ভারতের টিকা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউট।
ছবি: রয়টার্স

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় টিকাদান কর্মসূচির পরিধি বাড়াচ্ছে ভারত। গতকাল সোমবার দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, আগামী ১ মে থেকে ১৮ বছরের বেশি বয়সী সব লোককেই টিকা দেওয়া শুরু হবে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর দিয়েছে।

এদিকে সব প্রাপ্তবয়স্ককে টিকা দিতে গেলে লাগবে বাড়তি ডোজের সরবরাহ। কিন্তু অনেক রাজ্যে টিকা সরবরাহের ঘাটতি দেখা গেছে। ফলে বাড়তি ডোজ কোথা থেকে আসবে, সেটি এখনো অস্পষ্ট। সরকার গত সপ্তাহে জানায়, তাদের হাতে এ মুহূর্তে ২ কোটি ৭০ লাখ ডোজ টিকা রয়েছে। বর্তমান টিকাদানের হারে যা দিয়ে মাত্র নয় দিন চালানো সম্ভব।

বর্তমানে স্বাস্থ্যকর্মী, সম্মুখসারির অন্যান্য কর্মী এবং ৪৫ বছরের বেশি লোকদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। তবে অনেক রাজ্যে টিকা সরবরাহের ঘাটতি দেখা গেছে, যার মধ্যে রয়েছে মহারাষ্ট্রও। রাজ্যটিতে এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ দেখা দিয়েছে।

এখন পর্যন্ত তিনটি টিকা অনুমোদন দিয়েছে ভারত সরকার। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা উৎপাদন করছে ভারতের টিকা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউট। কোভ্যাক্সিন নামে আরেকটি টিকা উৎপাদন করছে ভারত বায়োটেক। এ ছাড়া রাশিয়ার বানানো স্পুতনিক-ভি টিকাও ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে ভারত।

এখন সব প্রাপ্তবয়স্ককে টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আনায় কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারগুলোর কাছে টিকার সরবরাহের ৫০ শতাংশ বাড়াতে হবে প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে।

গতকাল সোমবার ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের নতুন রেকর্ড হয়েছে। গতকাল দেশটিতে এক দিনে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ২ লাখ ৭৩ হাজার ৮১০ জন। মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৬১৯ জনের। আজ মঙ্গলবার সংক্রমণ একটু কমে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৫৯ হাজারে। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৭৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটি দেশটির এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা। এদিকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দিল্লিতে গতকাল রাত ১০টা থেকে ছয় দিনের লকডাউন শুরু হয়েছে।

মহারাষ্ট্রে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি। রাজ্যের হাসপাতালগুলোয় পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহেরও ব্যবস্থা নেই। মহারাষ্ট্র, দিল্লি ও কর্ণাটকে ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। বেঙ্গালুরুতেও এক দিনে করোনায় সর্বোচ্চ সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে।

বিহার, রাজস্থান, তামিলনাড়ু ও মণিপুরে নতুন করে বিধিনিষেধ ঘোষণা করা হয়েছে। রাত ৯টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে। শপিং মল, স্কুল, সিনেমা হল ও ধর্মীয় উপাসনা কেন্দ্রগুলো বিহারে আগামী ১৫ মে পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

ওয়ার্ল্ডোমিটারস ডট ইনফোর পরিসংখ্যানে জানা যাচ্ছে, ভারতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৫৩ লাখ ১৪ হাজার ৭১৪ জন মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন ১ লাখ ৮০ হাজার ৫৫০ জন।