মমতা ও শুভেন্দু উভয়ই নন্দীগ্রামে বড় জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারী
ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রাম আসনে বিপুল ভোটে জয়ী হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেছেন, তিনি নিশ্চিত, এই আসনে ৯০ শতাংশ ভোট পেয়ে তিনিই জিতবেন। অন্যদিকে, শুভেন্দু বলেছেন, তিনি অন্তত ৭০ হাজার ভোটের ব্যবধানে মমতাকে হারাবেন।

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার দ্বিতীয় দফার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গতকাল বৃহস্পতিবার। এই দফায় রাজ্যের ৪ জেলার ৩০ আসনে ভোট হয়। দ্বিতীয় দফায় যেসব আসনে ভোট হয় তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও আকর্ষণের কেন্দ্রে ছিল নন্দীগ্রাম। কারণ, এই আসনে নির্বাচন করেন মমতা। আর তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিজেপির শুভেন্দু। তিনি একসময় মমতার ডানহাত ছিলেন। শুভেন্দু তৃণমূলের মন্ত্রীও ছিলেন। গত ডিসেম্বরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন শুভেন্দু।

গতকাল নন্দীগ্রাম আসনে দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট সম্পন্ন হয়। ভোটের পর মমতা ও শুভেন্দু উভয়ই দাবি করেন, তাঁরা বিপুল ভোটে জিততে চলেছেন।

মমতা বলেন, তিনি নিশ্চিত, এই আসনে তিনিই জিতবেন। তাঁর জয়ের ব্যবধানও হবে বেশ বড়। ৯০ শতাংশ ভোট পেয়ে জিতবেন তিনি।

শুভেন্দু বলেন, তিনি আগে ঘোষণা দিয়েছিলেন, নন্দীগ্রামে মমতাকে ৫০ হাজার ভোটে হারাবেন। কিন্তু ভোট সম্পন্ন হওয়ার পর তিনি বলছেন, ৫০ নয়, ৭০ হাজার ভোটে মমতাকে হারাবেন।

শুভেন্দু আরও বলেন, ‘আমি তো বলেছি, নন্দীগ্রামের মানুষ এখনো আমার পাশে আছে। সুখে-দুঃখে তাঁদের পাশে আমি ছিলাম। ভবিষ্যতেও থাকব। তাই, নন্দীগ্রামের মানুষ এবার আমাকে বিপুল ভোটে জয়ী করবে।’

মমতার উদ্দেশে শুভেন্দু বলেন, ‘আন্টিকে একটু শান্তিতে থাকতে হবে। আর গুন্ডাগিরি চলবে না। তোষণের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। এগোতে হবে উন্নয়নের রাজনীতি নিয়ে।’

দ্বিতীয় দফার ভোটের দিনই রাজ্যের দুটি নির্বাচনী সভায় যোগ দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি একটি সভা করেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরে। অন্যটি করেন হাওড়ার উলবেড়িয়ায়।

উলবেড়িয়ার সভায় মোদি বলেন, ২০০টির বেশি আসন জিতে এবার বাংলায় সরকার গড়তে চলছে তাঁর দল বিজেপি। আর নন্দীগ্রামের নির্বাচনেও বিপুল ভোটে জিততে চলছেন বিজেপির প্রার্থী শুভেন্দু।

মমতার উদ্দেশে মোদি বলেন, ‘এবার দিদিকে দেখুন, তাহলেই সব বুঝে যাবেন। দিদিই ওপিনিয়ন পোল। দিদিই এক্সিট পোল। দিদির চোখ-মুখ ও হাবভাবে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, তিনি হারতে চলছেন। নন্দীগ্রাম দেখিয়ে দিল, কী হতে যাচ্ছে?’

এরপরই মোদি প্রশ্ন তোলেন, ‘এবার কি দিদি অন্য কোনো আসনে লড়তে চলছেন?’
মোদির এই কথার পর তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় জোর গলায় জানিয়ে দেন, মমতা নন্দীগ্রাম আসনে বিপুল ভোটে জিততে চলছেন। তাঁর আর কোনো আসনে লড়ার প্রয়োজন নেই।

মমতাও দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘আমি নন্দীগ্রামের ভোট নিয়ে একদম চিন্তিত নই। এখানের মা-মাটি-মানুষের আশীর্বাদ নিয়ে আমিই জিতব। ৯০ শতাংশ ভোট পাব।’

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার প্রথম দফার নির্বাচন হয় গত ২৭ মার্চ। প্রথম দফায় ৫ জেলার ৩০ আসনে ভোট হয়। ১ এপ্রিল হলো দ্বিতীয় দফার নির্বাচন। ৬ এপ্রিল হবে তৃতীয় দফার নির্বাচন। তৃতীয় দফায় ৩ জেলার ৩১ আসনে নির্বাচন হবে। ৮ দফা নির্বাচনের শেষ দফা হবে আগামী ২৯ এপ্রিল। ফলাফল ঘোষণা ২ মে।