মমতাকে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে বলল কংগ্রেস-বাম দল

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন ডেকে নিজ দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিরোধী দলের নেতারা। তাঁদের দাবি, যেভাবে তৃণমূল ভাঙছে, তাতে দলটির প্রতি রাজ্যবাসীর আস্থা হ্রাস পেতে শুরু করেছে।

২০২০ সালের শেষ দিনে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজ্য বিধানসভা ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি তুলেছেন বিরোধী জাতীয় কংগ্রেস ও বাম দলের নেতারা। এতে রাজ্য বিধানসভায় বিরোধীদলীয় নেতা কংগ্রেস বিধায়ক আবদুল মান্নান দাবি করেছেন, যেভাবে তৃণমূলের বিধায়কেরা দল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন, তা অবশ্যই শাসকদলের চিন্তার কারণ। একবার বিধানসভার অধিবেশন ডেকে মমতার দেখা উচিত আদৌ বিধানসভায় তাঁর সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে কি না? পাশাপাশি বাম পরিষদীয় দলের নেতা ও সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, রোজই তৃণমূল ভাঙছে। দল ছেড়েছেন তৃণমূলের বহু নেতা, বিধায়ক ও সাংসদ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যবাসীর মনে একটা ধারণা জন্মেছে, রাজ্যবাসীর এই সরকারের প্রতি আস্থা নেই। তাই বিধানসভার অধিবেশন ডেকে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ নেওয়া উচিত মমতার।

কলকাতা পৌর করপোরেশনের মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, বিধাননগর (সল্ট লেক) পৌর করপোরেশনের মেয়র সব্যসাচী দত্ত, বিধায়ক মনিরুল ইসলাম ও শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে ৩১ জন বিধায়ক, সাংসদ, পৌরসভার শীর্ষ নেতাসহ বিভিন্ন জেলার তৃণমূলের ৩১ নেতা যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। বিজেপির দাবি, তৃণমূলের বহু নেতা, বিধায়ক, সাংসদ বিজেপিতে যোগদানের জন্য মুখিয়ে আছেন।

এসব ঘটনার মধ্যে বিধানসভায় আস্থা ভোট নেওয়ার দাবি তুলল জাতীয় কংগ্রেস ও বাম দল।

২০১৬ সালে সর্বশেষ বিধানসভার নির্বাচনের ফলাফলে দেখা যায়, রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা আসনের মধ্যে তৃণমূল জিতেছিল ২১১টিতে। বাম-কংগ্রেস জোট ৭৬টি (এর মধ্যে কংগ্রেস ৪৪টি ও বাম দল ৩২টি আসন) আসনে আর বিজেপি জিতেছিল ৩টি আসনে। তবে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফল ছিল অন্য রকম। লোকসভার ৪২টি আসনের ফলাফলের নিরিখে দেখা যায়, রাজ্যের ২৯৪টি আসনের মধ্যে ১৬৪টি আসনে এগিয়ে তৃণমূল। বিজেপি এগিয়ে ১২১টি আসনে। আর বাম-কংগ্রেস জোট মাত্র ৯টি আসনে এগিয়ে। বিজেপির এই উত্থানে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে।

এদিকে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনের দামামা বেজে উঠেছে জোরেশোরে। রাজনৈতিক ময়দানে নেমে পড়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। করোনার আবহের মধ্যেও রাজ্যজুড়ে চলছে বিভিন্ন দলের প্রচার-প্রচারণা। চলছে বিভিন্ন দলের মধ্যে চ্যালেঞ্জ–পাল্টা চ্যালেঞ্জ। প্রচারের শীর্ষে আছে শাসকদল তৃণমূল ও বিরোধী দল বিজেপি। আগামী এপ্রিল-মে মাসে এই রাজ্যের বিধানসভার নির্বাচন হওয়ার কথা।