মানবাধিকার সংগঠনকে কাজ করতে দিচ্ছে না সরকার: মাসুম

মাসুম আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিচারপতি মলয় সেনগুপ্ত (বাঁয়ে), মাসুমের কিরীটী রায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি, কলকাতা
মাসুম আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিচারপতি মলয় সেনগুপ্ত (বাঁয়ে), মাসুমের কিরীটী রায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি, কলকাতা

ভারতের মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে কলকাতার মানবাধিকার সংগঠন ‘বাংলার মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ’ বা মাসুম। সংগঠনটি বলেছে, নির্যাতিত মানুষ ন্যায়বিচার পাচ্ছে না। পশ্চিমবঙ্গেও মানবাধিকারসংক্রান্ত বিষয়গুলো উপেক্ষিত।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে কলকাতা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেছেন সিকিম হাইকোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি মলয় সেনগুপ্ত। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও মানবাধিকার আইন ‘দ্য প্রোটেকশন অব হিউম্যান রাইটস অ্যাক্ট-১৯৯৩’-এর ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে মাসুম কলকাতা প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

মলয় সেনগুপ্ত বলেন, এই মানবাধিকার আইনে ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে এখনো বিচারাধীন রয়েছে ২ হাজার ১০০টি মামলা। আর পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে ২৩৪টি মামলা।

মানবাধিকার রক্ষা ও আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে এই রাজ্যের মানবাধিকার কমিশন তত জোরদার নয় উল্লেখ করে মাসুমের সম্পাদক কিরীটী রায় তাঁর বক্তব্যে বলেন, মাসুম এই রাজ্যে মানবাধিকার রক্ষার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। দাঁড়িয়েছে নির্যাতিত, নিপীড়িত ও অধিকারবঞ্চিত মানুষের পাশে। তাদের আইনগত সাহায্য দিচ্ছে মাসুম। ব্যবস্থা করছে নির্যাতিতাদের চিকিৎসার। মাসুম এই রাজ্যে মানবাধিকার রক্ষার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। নির্যাতিতদের পাশে থেকে তাদের অধিকার রক্ষার আন্দোলনে নিজেদের যুক্ত রেখেছে।

কিরীটী রায় বলেন, ১৯৯১ সালে প্যারিস ঘোষণা অনুযায়ী ১৯৯৩ সালে ভারতে গঠন করা হয়েছিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। দেশে এখন এই সংস্থার ১৮০টির মতো সংগঠন রয়েছে। কিন্তু এই মানবাধিকার সংগঠনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিচ্ছে না সরকার। বিভিন্ন মানবাধিকার কমিশনে সরকার অনভিজ্ঞ এবং নিজেদের লোক বসিয়েছে। কমিটিও গঠন করেছেন নিজেদের লোক দিয়ে, নিজেদের মতো। মানবাধিকারকর্মী ও বিশেষজ্ঞরা সেই সব কমিটিতে ঠাঁই পাননি।

কিরীটী রায় বলেন, ‘পুরো দেশে এবং আমাদের পশ্চিমবঙ্গেও মানবাধিকার কমিশনকে ঠুঁটো জগন্নাথ করে রাখা হয়েছে। তাই পশ্চিমবঙ্গেও মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। বিচার পাচ্ছে না বহু নির্যাতিত মানুষ।’ তিনি প্রসঙ্গক্রমে বলেন, এখন পর্যন্ত এই রাজ্যে ২৯টি মানবাধিকার মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ ও বিচার করে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ এবং শাস্তি দিলেও সেই শাস্তি কার্যকর হয়নি। ক্ষতিগ্রস্তরা পায়নি আর্থিক ক্ষতিপূরণ।