রাহুলকে কংগ্রেসের সভাপতি করার জোরাল দাবি

রাহুল গান্ধী

এক বছর আগে নেওয়া প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদেরার সাক্ষাৎকারকে গুরুত্ব না দিয়ে কংগ্রেস নেতাদের একাংশ রাহুল গান্ধীকেই আবার সভাপতি করার দাবি জোরালোভাবে জানাতে শুরু করেছেন। সরাসরিই তাঁরা বলছেন, এক বছর আগের গান্ধী পরিবারের মনোভাব যা–ই থাকুক, দল ও দেশের স্বার্থে রাহুলকেই সভাপতি করা প্রয়োজন।

একটি বইয়ের জন্য দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদেরা এক বছর আগের ওই সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, গান্ধী পরিবারের বাইরের কারও কংগ্রেসের সভাপতি হওয়া উচিত বলে রাহুল যা মনে করেন, তিনি তার সঙ্গে একমত। সেই সাক্ষাৎকারের নির্যাস সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হলে নতুন জল্পনা শুরু হয়। প্রশ্ন ওঠে, রাহুল–প্রিয়াঙ্কা এখনো এক বছর আগের মনোভাব আঁকড়ে রয়েছেন কি না। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরযেওয়ালা বুধবার টুইট করে সেই জল্পনার অবসান ঘটাতে সচেষ্ট হন। বলেন, এক বছরের বেশি পুরোনো ওই সাক্ষাৎকার নিয়ে হইচই বাধানোর উদ্যোগ ও তাগিদ শাসক বিজেপির। ঘটনা হলো, এক বছর পর এখনো কংগ্রেসের নেতা ও কর্মীরা রাহুলকেই দলের সভাপতি দেখতে চান। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের ওপর মোদি–শাহর আক্রমণের মোকাবিলা রাহুলই করছেন। নির্ভীকভাবে লড়াইয়ের সময় এটা। দলের লাখো কর্মীর সেই লড়াইয়ের নেতৃত্ব দিচ্ছেন রাহুল গান্ধী। তিনিই কংগ্রেসের নেতৃত্বদানের উপযুক্ত।

সুরযেওয়ালার মতো রাহুলের পক্ষে মুখ খুলেছেন আরও এক কংগ্রেস নেতা শক্তি সিং গোহিল। আজ বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, এক বছর ধরে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে রাহুল লড়াই চালাচ্ছেন। করোনার বিপদ নিয়ে বারবার মুখ খুলেছেন। সরকারকে সতর্ক করে গেছেন। চীন সম্পর্কে দেশকে সজাগ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর অসত্য ভাষণের স্বরূপ তুলে ধরেছেন। অর্থনীতির করুণ হাল শোধরাতে সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করে চলেছেন। এই কঠিন পরিস্থিতিতে একমাত্র রাহুলই দলের কান্ডারি হওয়ার যোগ্য। এই দাবি জানিয়ে রাহুলকে চিঠি লিখেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ভি এম রেড্ডিও। বলেছেন, ‘আপনি সব সময় মানুষের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দিয়ে এসেছেন। দলের নেতা–কর্মীরা আপনাকেই নেতা হিসেবে চাইছেন। সেই দাবি শোনা ছাড়া আপনার কি কোনো বিকল্প আছে?’ প্রায় একই কথা ঘুরিয়ে বলে আসছেন শশী থারুরের মতো নেতা। তাঁর দাবি, অযথা দেরি না করে দ্রুত সভাপতি পদে নির্বাচন সেরে ফেলা হোক।

গত মার্চ মাসে মধ্য প্রদেশ সরকারের পতন ঠেকাতে রাহুলকে উৎসাহী হতে দেখা যায়নি। কিন্তু এবার রাজস্থানে কংগ্রেস সরকারের ভাঙন ঠেকাতে তিনি ও প্রিয়াঙ্কা বাড়তি উদ্যোগ নেন। সোনিয়া গান্ধী দলের সভাপতি থাকলেও রাহুলই সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। রাজস্থান সংকট কাটাতে যাঁদের ওপর তিনি নির্ভর করেছিলেন, সেই সুরযেওয়ালা, অজয় মাকেন বা কে সি বেনুগোপালের মতো নেতারাও দলে রাহুল অনুগামী বলে পরিচিত। রাহুল অনুগামীদের গুরুত্বও দলে বাড়ছে। কংগ্রেস মহলের একটা বড় অংশ মনে করছে, নতুন করে কিছু না বললেও রাহুল দ্বিতীয়বার সভাপতিত্ব গ্রহণে নিজেকে প্রস্তুত করছেন। সেই অবকাশে রাহুলকে নেতা করতে তাঁর অনুগামীরা নতুনভাবে সক্রিয়।