সহযোগিতার পরিধি বাড়াতে ভারত সফরে ব্লিঙ্কেন

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন
ছবি : রয়টার্স

প্রধানত আফগানিস্তান পরিস্থিতি, আঞ্চলিক সুস্থিতি ও কোভিড মোকাবিলাসংক্রান্ত বিষয়ে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার পরিধি বিস্তার নিয়ে আলোচনা করতে মঙ্গলবার রাতে ভারত সফরে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।

বুধবার দুপুর ১২টায় হায়দরাবাদ হাউসে তিনি বৈঠক করবেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে। দুপুরে এই সফর নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে বিকেলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ সেরে তিনি দিল্লি ত্যাগ করবেন। এই সফরে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গেও তাঁর কথা হতে পারে। যদিও এই বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিছু জানায়নি।

বাইডেন প্রশাসন ক্ষমতাসীন হওয়ার পর এটি শীর্ষ পর্যায়ের তৃতীয় সফর। গত মার্চ মাসে ভারতে এসেছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। পরের মাসে সফরে আসেন জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত বিশেষ দূত জন কেরি। যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো সেনানীদের আফগানিস্তান ত্যাগের পর সে দেশের পরিস্থিতি ও কোভিড মোকাবিলা আলোচনার সিংহভাগজুড়ে থাকলেও মনে করা হচ্ছে, মানবাধিকার রক্ষার প্রশ্নটিও ব্লিঙ্কেন তুলবেন।

এই ধারণার কারণ, সফর শুরুর আগে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার ভারপ্রাপ্ত কর্তা ডিন থম্পসনের এক মন্তব্য। ডিন বলেছেন, ‘গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার মতো বিষয়ে দুই দেশের মূল্যবোধে অনেকটাই সাযুজ্য আছে। এই বিষয়ে আমাদের মনোভাবের কথা ভারতীয় নেতৃত্বকে অবশ্যই জানানো হবে। দুই দেশের সম্পর্ককে দৃঢ় করতে ভারত আশা করি গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষায় গঠনমূলক ভূমিকা নেবে।’

পেগাসাস বিতর্ক নিয়েও ভারতীয় বক্তব্য জানতে ব্লিঙ্কেন আগ্রহী হবেন বলে মনে করা হচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ধারণা, পেগাসাস নিয়ে ভারতের সরকারি অভিমত ও বিরোধীদের অভিযোগ কতটা সত্য আর কতটা নয়, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী তা বোঝার চেষ্টা করতে পারেন।

কারণ, ডিন থম্পসন বলেছেন, পেগাসাস নিয়ে ভারতে ঠিক কী ঘটছে, সে বিষয়ে তাঁদের স্পষ্ট ধারণা নেই। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সূত্রের কথায়, গণতন্ত্রের বিকাশ ও মানবাধিকার রক্ষায় ভারত তার সাফল্যে গর্বিত। সেই সাফল্যের কাহিনি অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে ভারতের দ্বিধা নেই। তিনি বলেন, ভারত বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। বরাবরই বহুত্ববাদে বিশ্বাসী। অতএব যাঁরা বহুত্ববাদে আস্থা রাখেন, তাঁদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনায় বাধা নেই।

তবে এসব ছাপিয়ে অবশ্যই বড় হয়ে উঠবে আফগানিস্তান পরিস্থিতি। ভারতের চিন্তা সেপ্টেম্বরে শেষ সেনা চলে যাওয়ার পর সে দেশের পুনর্গঠনে ২০ বছর ধরে ভারত যা করেছে, তা সুরক্ষিত থাকবে কি না তা নিয়ে। যুক্তরাষ্ট্র চাইছে ক্ষমতা রক্ষায় আফগান সরকারের সঙ্গে তালেবানদের একধরনের বোঝাপড়া হোক। সেটা কত দূর সম্ভবপর, উগ্রপন্থা কতটা ঠেকানো যাবে, এই সফরে তার একটা ইঙ্গিত পাওয়া যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।