সুতোয় ঝুলছে কর্ণাটকের সরকার

রাজনাথ সিং ও  এইচ ডি কুমারাস্বামী
রাজনাথ সিং ও এইচ ডি কুমারাস্বামী

ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে কংগ্রেস ও জনতা দল-ধর্মনিরপেক্ষ (জেডিএস) জোট সরকারের ভাগ্য এখন সুতোয় ঝুলছে। সরকার টেকাতে দল দুটির আপ্রাণ চেষ্টা সত্ত্বেও বিধায়কদের পদত্যাগের মিছিল বন্ধ করা যাচ্ছে না। গতকাল সোমবার শেষ চেষ্টার অংশ হিসেবে রাজ্য সরকারে কংগ্রেসের মন্ত্রীরা পদত্যাগ করেন। বিক্ষুব্ধদের মন্ত্রিসভায় জায়গা করে দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতেই এই পদক্ষেপ। কিন্তু পরে জেডিএসের মন্ত্রীদেরও পদত্যাগের খবর পাওয়া যায়।

কংগ্রেস নেতা ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়া বলেছেন, কংগ্রেসের ২১ জন মন্ত্রীই পদত্যাগ করেছেন। পরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারাস্বামী জানান, মন্ত্রিসভা পুনর্গঠনের জন্য তাঁর দলেরও সব মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। এর আগে তিনি বলেছিলেন, কর্ণাটকে সরকার ভেঙে পড়ার কোনো হুমকি নেই। সরকার টিকে যাবে।

এসব পদত্যাগ সত্ত্বেও সরকার বাঁচানো যাবে কি না, তা নিয়ে ঘোর সংশয় রয়েছে। রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা বি এস ইয়েদুরাপ্পা বলেছেন, তাঁরা সাধুসন্ত নন। সরকার গড়ার সুযোগ পেলেই তার সদ্ব্যবহার করবেন। এদিকে এই সংকটের জন্য কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে দায়ী করে কেন্দ্র সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, পদত্যাগের জন্য বিজেপি মোটেই দায়ী নয়। পদত্যাগের রাস্তা দেখিয়েছেন রাহুল গান্ধীই। তাঁর দেখাদেখি রাজ্যে রাজ্যে কংগ্রেসের নেতারা ইস্তফা দিচ্ছেন।

>মোট ১৫ বিধায়কের পদত্যাগ। আজ স্পিকার ঠিক করবেন এসব পদত্যাগপত্র গ্রহণ করবেন কি না। ভাঙন ঠেকাতে রাজ্য সরকারের সব মন্ত্রীর পদত্যাগ।

এর আগে কর্ণাটকের কংগ্রেস-জেডিএস জোট সরকারের ১৩ বিধায়ক পদত্যাগ করেন। যে সময় এই রাজনৈতিক সংকট শুরু, তখন মুখ্যমন্ত্রী কুমারাস্বামী বিদেশ সফরে ছিলেন। তড়িঘড়ি দেশে ফিরে তিনি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তবে এর মধ্যেই গতকাল পদত্যাগ করেন স্বতন্ত্র বিধায়ক নাগেশ এবং একজন মন্ত্রী। পদত্যাগের পর তাঁরা দুজনই বিজেপিকে সমর্থন দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

পদত্যাগী বিধায়কেরা রাজ্য ছেড়ে মুম্বাইয়ে ঠাঁই নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। দলটির নেতারা দাবি করেছেন, মুম্বাইয়ে পদত্যাগী বিধায়কদের একটি হোটেলে বন্দী করে রাখা হয়েছে। এদিকে রাজ্য কংগ্রেসের নেতা ডি কে শিবকুমার কয়েকটি পদত্যাগপত্র ছিঁড়ে ফেলেছেন। আগামী শুক্রবার বিধানসভার অধিবেশনের আগে কয়েকজন বিক্ষুব্ধকে মন্ত্রী করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে কংগ্রেস।

তারপরও কর্ণাটকের রাজনীতির ভাগ্য এখন নির্ভর করছে প্রধানত বিধানসভার স্পিকার রমেশ কুমার এবং কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃত্বের ওপর। জোটের পক্ষে স্বস্তির কারণ একটাই, স্পিকার কংগ্রেসের সদস্য। আর গত শনিবার যে ১১ বিধায়ক পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন, তা গতকাল পর্যন্ত গৃহীত হয়নি। আজ মঙ্গলবার স্পিকার ঠিক করবেন এসব পদত্যাগপত্র গ্রহণ করবেন কি না।