এক হবু সম্রাটের হত্যাই কি ডেকে এনেছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধ

অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকারী আর্চডিউক ফ্রাঞ্জ ফার্দিনান্দছবি: মেরি ইভান্স পিকচার লাইব্রেরি

১১১ বছর আগে রৌদ্রোজ্জ্বল এক সকালে বসনিয়ার সারায়েভোর সড়কগুলোতে সাজ সাজ রব। সস্ত্রীক সফরে আসছেন অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকার আর্চডিউক ফ্রাঞ্জ ফার্দিনান্দ। সড়কপথে ছাদখোলা বিলাসবহুল গাড়িতে আসছেন তাঁরা। তাঁদের দেখতে সড়কের দুপাশে উপচে পড়া মানুষের ভিড়। কে জানত ওই ভিড়েই লুকিয়ে আছেন আততায়ী।

সেদিন ভিড়ের ভেতর থেকে পিস্তল হাতে বেরিয়ে আসেন গ্যাভরিলো প্রিনসিপ নামের এক যুবক। খুব কাছ থেকে দুটি গুলি ছোড়েন তিনি। একটি লাগে আর্চডিউক ফার্দিনান্দের গলায়, আরেকটি তাঁর স্ত্রী সোফির পেটে। দুজন গাড়িতেই নিথর হয়ে পড়েন। মারা যাওয়ার আগে আর্চডিউকের শেষ কথা ছিল, ‘সোফি, সোফি, মরে যেয়ো না…বাচ্চাদের জন্য বেঁচে থাকো।’ সেদিন ছিল তাঁদের বিবাহবার্ষিকী।

গ্যাভরিলো প্রিনসিপ ছিলেন একজন সার্ব জাতীয়তাবাদী। প্রিনসিপ এবং অন্য জাতীয়তাবাদীরা বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার ওপর অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরির শাসনের অবসান ঘটাতে সংগ্রাম করছিলেন। বসনিয়া–হার্জেগোভিনার সামরিক গভর্নর অস্কার পোটিওরেকের অনুরোধে আর্চডিউক ফার্দিনান্দের সারায়েভো সফরে বসনীয় ও সার্ব জাতীয়তাবাদীরা ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। তাঁরা এ সফরকে সাম্রাজ্যবাদী দখলের প্রতীক হিসেবে দেখেছিলেন।  

দুজন গাড়িতেই নিথর হয়ে পড়েন। মারা যাওয়ার আগে আর্চডিউকের শেষ কথা ছিল, ‘সোফি, সোফি, মরে যেয়ো না…বাচ্চাদের জন্য বেঁচে থাকো।’ সেদিন ছিল তাঁদের বিবাহবার্ষিকী।

ভাবী সম্রাটকে হত্যার মাধ্যমে অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় শাসনকে ধাক্কা দিয়ে ওই জাতীয়তাবাদীরা স্বাধীনতার বার্তা ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা বুঝতে পারেননি, তাঁদের এ কাজ গোটা বিশ্বকে প্রাণঘাতী এক দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেবে, সূচনা হবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের।

সোমের প্রথম যুদ্ধ চলাকালে ১৯১৬ সালের নভেম্বর মাসে ফ্রান্সে এক কানাডীয় সেনা কামানের গায়ে বড়দিনের শুভেচ্ছাবার্তা লিখছেন। ইতিহাসের অন্যতম রক্তক্ষয়ী এ যুদ্ধে প্রায় সাড়ে ১২ লাখ মানুষ হতাহত হন
ছবি: লাইব্রেরি অ্যান্ড আর্কাইভস কানাডা/রয়টার্স

বারুদের গুদামে স্ফুলিঙ্গ

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরুর বহু আগে থেকেই ইউরোপজুড়ে উত্তেজনা দানা বাঁধছিল, বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের অশান্ত বলকান অঞ্চলে।

ইউরোপীয় পরাশক্তি, অটোমান সাম্রাজ্য, রাশিয়া ও অন্যান্য পক্ষ বিভিন্ন জোট গঠন করে নিজেদের মধ্যে শান্তি ধরে রাখার চেষ্টা করছিল। কিন্তু বলকান অঞ্চলের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা (বিশেষ করে বসনিয়া, সার্বিয়া ও হার্জেগোভিনায়) এসব চেষ্টাকে ধ্বংস করে দেওয়ার হুমকি হয়ে উঠেছিল। এমন পরিস্থিতিতে আর্চডিউক ফার্দিনান্দের হত্যাকাণ্ড বারুদের গুদামে স্ফুলিঙ্গের মতো কাজ করে।

গ্যাভরিলো প্রিনসিপ ছিলেন একজন সার্ব জাতীয়তাবাদী। প্রিনসিপ এবং অন্য জাতীয়তাবাদীরা বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার ওপর অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরির শাসনের অবসান ঘটাতে সংগ্রাম করছিলেন। গভর্নর অস্কার পোটিওরেকের অনুরোধে আর্চডিউক ফার্দিনান্দের সারায়েভো সফরে বসনীয় ও সার্ব জাতীয়তাবাদীরা ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন।

অনেক দেশের মতো অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি এ হত্যাকাণ্ডের জন্য সার্বীয় সরকারকে দায়ী করে এবং এ ঘটনাকে তারা সার্বীয় জাতীয়তাবাদের আন্দোলন চিরতরে মুছে দেওয়ার একটি অজুহাত হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়।

ফার্দিনান্দ হত্যার পর অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে—এ আশঙ্কায় সার্বিয়া সরকার সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেয়।

শক্তিশালী রুশ সাম্রাজ্যের সমর্থন যায় সার্বিয়ার দিকে। অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি তাকিয়ে ছিল জার্মানির দিকে। জার্মানি গোপনে তাদের সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দেয়।

ফ্রান্সের সাইকেল আরোহী সেনারা। তাঁরা মূলত গোয়েন্দাগিরি ও বার্তাবাহকের এবং দ্রুত শত্রুপক্ষের অবস্থান শনাক্তের কাজ করতেন। কখনো কখনো তাঁরা হালকা আক্রমণেও অংশ নিতেন। ছবিটি ১৯১৫ সালের সেপ্টেম্বরে তোলা
ছবি: রয়টার্স

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সূচনা

২৮ জুলাই ১৯১৪, আর্চডিউক ফার্দিনান্দ হত্যাকাণ্ডের ঠিক এক মাস পর সার্বিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি। এতে ইউরোপের পরাশক্তিগুলোর মধ্যে শান্তি টিকিয়ে রাখার নাজুক চুক্তিগুলো দ্রুতই ভেঙে পড়ে।

১৯১৪ সালের গ্রীষ্মে যখন মিত্রশক্তি (যার নেতৃত্বে ছিল ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও রাশিয়া) এবং কেন্দ্রীয় শক্তির (জার্মানি, অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি ও অটোমান সাম্রাজ্য) মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়, তখন অধিকাংশ মানুষ বিশ্বাস করেছিল যে যুদ্ধ বড়দিনের (ক্রিসমাস) আগেই শেষ হয়ে যাবে।

এক সপ্তাহের মধ্যেই রাশিয়ার মিত্র বেলজিয়াম, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য যুদ্ধে সার্বিয়ার পক্ষ নেয়। অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি ও জার্মানির বিরুদ্ধে তারা প্রতিরোধযুদ্ধ শুরু করে। যুদ্ধ দ্রুত ইউরোপজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।

রাশিয়া এ যুদ্ধে জড়ায় কারণ, দেশটির সঙ্গে সার্বিয়ার একটি জোট ছিল। জার্মানি রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে, কারণ জার্মানির সঙ্গে অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরির জোট ছিল।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ৯০ লাখের বেশি সেনা নিহত হন
ছবি: লাইব্রেরি অ্যান্ড আর্কাইভস কানাডা/রয়টার্স

যুক্তরাজ্য জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। কারণ, জার্মানি নিরপেক্ষ বেলজিয়ামে আক্রমণ করেছিল। আর যুক্তরাজ্য বেলজিয়াম ও ফ্রান্সকে রক্ষা করার চুক্তি করেছিল।

ফার্দিনান্দ হত্যাকাণ্ডের জেরেই প্রথম বিশ্বযুদ্ধ হয়েছিল—সরলভাবে এমনটা বলা কঠিন; বরং সে সময়ে বিভিন্ন সাম্রাজ্যের সম্রাটদের সাম্রাজ্য বিস্তারের লোভ এ যুদ্ধের সূচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় রেখেছে। যুক্তরাজ্য, জার্মানি, অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি ও রাশিয়া—সব দেশই ছিল সাম্রাজ্যবাদী। এদের প্রতিটিই বিশ্বের নানা প্রান্তে অনেক দেশ শাসন করত।

এসব শক্তি নিজেদের সাম্রাজ্যকে শক্তিশালী রাখতে চাইত এবং অন্যরা নতুন ভূখণ্ডের দখল নেয় কি না, তা নিয়ে থাকত উদ্বিগ্ন। অন্যদের নতুন ভূখণ্ডের দখলকে তারা নিজেদের সাম্রাজ্যের জন্য হুমকি হিসেবে দেখত।

ধ্বংসের নেশা

১৯১৪ সালের গ্রীষ্মে যখন মিত্রশক্তি (যার নেতৃত্বে ছিল ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও রাশিয়া) এবং কেন্দ্রীয় শক্তির (জার্মানি, অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি ও অটোমান সাম্রাজ্য) মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়, তখন অধিকাংশ মানুষ বিশ্বাস করেছিল যে যুদ্ধ বড়দিনের (ক্রিসমাস) আগেই শেষ হয়ে যাবে। কেউ কল্পনাও করতে পারেননি, সামনে অপেক্ষা করছে মৃত্যু আর ধ্বংসযজ্ঞের দীর্ঘ এক পথ।

মেশিনগান, ভারী কামান, ট্যাংক, যুদ্ধবিমান ও রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যাপক ব্যবহারে ইউরোপের যুদ্ধক্ষেত্র পরিণত হয় এক ভয়ংকর নরকে।

ফ্রান্সের প্যারিসে যুক্তরাষ্ট্রের একটি অস্থায়ী হাসপাতালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে আহত সেনাদের চিকিৎসা চলছে
ছবি: লাইব্রেরি অব কংগ্রেস/রয়টার্স

যুদ্ধের প্রথম দিকে জার্মানি একের পর এক সাফল্য লাভ করতে থাকে। প্রশিক্ষিত ও সুসজ্জিত জার্মান সেনাবাহিনী বেলজিয়াম ও উত্তর ফ্রান্স অতিক্রম করে দ্রুত অগ্রসর হয়। তবে ১৯১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মিত্রশক্তির ‘প্রথম মার্নের যুদ্ধ’ জার্মানদের অগ্রযাত্রা থামিয়ে দিতে সক্ষম হয়। ফ্রান্সের মার্নে নদীর তীরে এ যুদ্ধ হয়েছিল।

এই যুদ্ধ এক দীর্ঘ ও নিষ্ঠুর ধ্বংসাত্মক লড়াইয়ের মঞ্চ প্রস্তুত করে দেয়। পরের তিন বছর পশ্চিম ফ্রন্ট এক বিভীষিকাময় যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়। উভয় পক্ষ প্রতিপক্ষের প্রতিরক্ষা ভাঙার চেষ্টা করে বারবার, কিন্তু সামান্য অগ্রগতি হয়। ভারদাঁ (১৯১৬) ও সোম (১৯১৬)-এর মতো বড় বড় যুদ্ধে লক্ষাধিক সৈন্য নিহত বা আহত হন। অথচ ফ্রন্টলাইনের অবস্থানে খুব সামান্যই পরিবর্তন আসে।

যুদ্ধের সমাপ্তি, ক্ষয়ক্ষতি

চার বছরের বেশি সময় ধরে চলছে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। তাতে জড়িয়ে পড়ে ৩০টির বেশি দেশ। ইউরোপ ও রাশিয়ার সীমানা ছাড়িয়ে যুদ্ধের প্রভাবে তখন সারা বিশ্ব ধুঁকেছে। ১৯১৮ সালের নভেম্বরে হঠাৎ করেই বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘটে। কারণ, একের পর এক যুদ্ধক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় শক্তির পতন। ৩ নভেম্বর অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি মিত্রশক্তির সঙ্গে অস্ত্রবিরতিতে স্বাক্ষর করে, আর ১১ নভেম্বর আত্মসমর্পণ করে জার্মানি।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ৯০ লাখের বেশি সেনা প্রাণ হারান; আরও ২ কোটি ১০ লাখ সেনা আহত হন। বেসামরিক লোকজনের প্রাণহানির সংখ্যা ছিল আরও বেশি—প্রায় ১ কোটি। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল জার্মানি ও ফ্রান্স।

অস্ত্রবিরতির শর্তগুলো ছিল কঠোর। মিত্রশক্তির ইচ্ছা ছিল জার্মানি যেন আর কখনো শান্তির জন্য হুমকি হতে না পারে। দখল করা সব অঞ্চল থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করতে, নৌবহর হস্তান্তর করতে, মিত্রশক্তিকে বিপুল পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দিতে জার্মানিকে বাধ্য করা হয়েছিল। এ অস্ত্রবিরতি পরে ভার্সাই চুক্তির ভিত্তি তৈরি করে; যা ইউরোপের নতুন সীমানা নির্ধারণ এবং জার্মানির ওপর আরও কঠোর শাস্তিমূলক শর্ত আরোপ করেছিল।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ৯০ লাখের বেশি সৈনিক প্রাণ হারান। ২ কোটি ১০ লাখ সৈনিক আহত হন। বেসামরিক প্রাণহানির সংখ্যাও ছিল বেশি, প্রায় ১ কোটি। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল জার্মানি ও ফ্রান্স। দুই দেশের ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী পুরুষ জনগোষ্ঠীর প্রায় ৮০ শতাংশকে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো হয়েছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে খরচ হয়েছিল ৩ হাজার ২০০ কোটি মার্কিন ডলার।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় নারীরা নার্স হিসেবে আহত সেনাদের সেবায় কাজ করেছেন
ছবি: রয়টার্স

এ বিশ্বযুদ্ধকে ঘিরে যে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছিল, তা চারটি প্রাচীন ও মর্যাদাপূর্ণ সাম্রাজ্যের পতন ডেকে আনে। সেগুলো হলো: জার্মান, অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয়, রুশ ও তুর্কি।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের রক্তক্ষয়ী সমাপ্তির পর ভার্সাই চুক্তির মাধ্যমে একটি নতুন বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন বিজয়ী দেশের প্রধানেরা। তবে ‘ন্যায়ভিত্তিক শান্তির’ কথা বলা হলেও বাস্তবে এ চুক্তি ছিল প্রতিশোধপরায়ণ, অসম ও অপূর্ণাঙ্গ।

পরাজিতদের বাদ দিয়ে চুক্তি রচনার ফলে জার্মানি ও রাশিয়ায় জন্ম নেয় চরম অসন্তোষ। এটি পরে নাৎসিবাদের উত্থান ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পথ সুগম করে।

অর্থনৈতিক সংকট, যুদ্ধের ক্ষত ও চরমপন্থার বিস্তার দেখিয়ে দেয়—শান্তির জন্য শুধু বিজয় নয়, চাই যৌথ অংশগ্রহণ ও ন্যায়ভিত্তিক সমঝোতা। ইতিহাসবিদদের মতে, যদি ভার্সাই চুক্তি আরও ভারসাম্যপূর্ণ ও ঐক্যমুখী হতো, তবে বিশ শতকের ইতিহাস হয়তো একেবারে ভিন্ন রূপ পেত।

{তথ্যসূত্র: বিবিসি, হিস্ট্রি ডটকম, হিস্ট্রি টুলস}