উল্কাবৃষ্টিতে আলোকিত হলো রাতের আকাশ

পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে উল্কাপিণ্ড। সেবেনিক ন্যাশনাল পার্ক, আলবেনিয়াছবি: রয়টার্স

একটা–দুটো নয়, একে একে খসে পড়ছে অসংখ্য তারা। আলোকিত হয়ে উঠছে রাতের আকাশ। পৃথিবীজুড়ে গতকাল শনিবার রাতে দেখা যায় এ দৃশ্য। আমরা একে তারা খসে পড়া বললেও জ্যোতির্বিদেরা বলেন উল্কাপাত। যখন এভাবে একসঙ্গে অসংখ্য তারা খসে পড়ে, তখন তাকে বলা হয় ‘উল্কাবৃষ্টি’।

উল্কা হলো আমাদের এই সৌরজগতেরই আকাশে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে থাকা কিছু বস্তুখণ্ড। এই বস্তুখণ্ডগুলো আসে ধূমকেতু থেকে। ধূমকেতু মাঝেমধ্যে আকাশে দেখা দেয়। সূর্যের চারপাশে এক চক্কর দিয়ে আবার দূরে চলে যায়। এদের চলার পথ অনেকটা ডিমের আকৃতির মতো (ইলিপটিক)।

আলোকিত রাতের আকাশে উল্কাবৃষ্টি দেখছেন কয়েকজন। সাইবেরিয়া, রাশিয়া
ছবি: রয়টার্স

আলোর বিচ্ছুরণ ঘটিয়ে সবশেষ গতকাল যেসব উল্কার পতন হয়েছে, তা এসেছে ধূমকেতু সুইফট–টার্টেল থেকে। উল্কাবৃষ্টির সময় ঘণ্টায় ১০০টি পর্যন্ত উল্কার পতন ঘটতে পারে। মাটির কাছাকাছি আসতেই তা নিভে যায়। তবে মাঝেমধ্যে দু–একটা জ্বলন্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে।

যেকোনো সময় উল্কাপাত হতে পারে। তবে সাধারণত একসঙ্গে অনেকগুলো উল্কার পতন ঘটতে দেখা যায় বছরের জুলাই থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত সময়ে। এই সময়ে প্রায়ই উল্কাপাত হয়। তবে চলতি বছর উল্কাবৃষ্টি হয়েছে গতকাল রাতে। আজ রাতের প্রথম ভাগেও হতে পারে।

আকাশে লেজার লাইট ধরেন এক ব্যক্তি। সেবেনিক ন্যাশনাল পার্ক, আলবেনিয়া
ছবি: রয়টার্স

উল্কাবৃষ্টিকে জ্যোতির্বিদ্যাসংক্রান্ত সবচেয়ে সুন্দর ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করা হয়। কারণ, উল্কাবৃষ্টি হলে উল্কার আলোর বিচ্ছুরণে আলোকিত হয়ে ওঠে আকাশ। অনেকে এ দৃশ্য দেখার অপেক্ষায় থাকেন। গতকালও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অসংখ্য মানুষ খালি চোখে এই দৃশ্য অবলোকন করেছেন।

উল্কাপিণ্ডগুলো ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২ লাখ ১৪ হাজার কিলোমিটার বেগে পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে। ফলে বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে ঘর্ষণে এরা জ্বলে ওঠে। সাধারণত মাটিতে পড়ার আগেই জ্বলেপুড়ে ছাই হয়। তবে উল্কা খণ্ড খুব বড় হলে সবটা জ্বলে নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার আগেও মাটিতে পড়তে পারে।

উল্কার আলোয় রাতেও দিনের মতো আলোকিত হয়েছে চারপাশ
ছবি: রয়টার্স

মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা উল্কাবৃষ্টির দৃশ্য ধারণ করে। নাসার অল স্কাই ফায়ারবল অনেকগুলো ক্যামেরা ব্যবহার করে উল্কাপাত বা উল্কাবৃষ্টির ছবি তোলে। তারা এ বছর প্রথম উল্কাপাত দেখে ২৬ জুলাই। এরপর জানানো হয়, এ বছরের ১২ ও ১৩ আগস্ট উল্কাবৃষ্টি হতে পারে।