গুপ্তচর সন্দেহে বেলারুশে বন্দী জাপানিও মুক্তি পেলেন

বেলারুশের কারাগার থেকে মুক্ত জাপানি নাগরিক মাসাতোশি নাকানিশিছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ীসহ ১২৩ জন বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে বেলারুশ। তাঁদের মধ্যে জাপানের এক নাগরিক রয়েছেন, যাঁকে গুপ্তচর সন্দেহে এক বছর আগে গ্রেপ্তারের পর সাজাও দেওয়া হয়েছিল।

জাপানি নাগরিক মাসাতোশি নাকানিশিকে ২০২৪ সালে বেলারুশে আটক করা হয় এবং এ বছরের মার্চে মিনস্কের একটি আদালত গুপ্তচরবৃত্তিতে জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন।

বেলারুশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের শহর গোমেলের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নাকানিশি জাপানি ভাষার শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

আদালতে সরকারপক্ষের দাখিল করা অভিযোগে বলা হয়েছিল, নাকানিশি ৬ বছর ধরে ইউক্রেনের সঙ্গে বেলারুশের সীমান্তের বিভিন্ন এলাকার ৯ হাজারের বেশি ছবি তুলে সেগুলো তাঁর নিজের দেশে পাঠিয়েছিলেন।

রাশিয়ার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্রদেশ হিসেবে পরিচিত বেলারুশ যে ১২৩ বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে, তাঁদের সবাইকে সরকারের বিরোধিতা করা এবং গণতান্ত্রিক অধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে চলমান আন্দোলনে সক্রিয় থাকার জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে যে বিদেশিরা ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তিতে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছিল।

মিনস্কের জাপান দূতাবাস দেশের কয়েকটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, নাকানিশিকে ইতিমধ্যে প্রতিবেশী দেশ লিথুয়ানিয়ার জাপানি দূতাবাসের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং তিনি সুস্থ আছেন। তবে নাকানিশি কবে নাগাদ জাপানে ফিরে আসবেন, সে বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।

বেলারুশে এটা হচ্ছে দ্বিতীয় পর্যায়ের বন্দী মুক্তি। এর আগে চলতি বছরের জুনে প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দর লুকাশেঙ্কো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দূত কিথ কেলোগের সঙ্গে অনুষ্ঠিত আলোচনার পর যে ১৪ জন ভিন্নমতাবলম্বীকে মুক্তি দিয়েছিলেন, সেই দলেও ২ জন জাপানি নাগরিক ছিলেন।

রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখা ও ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান সমর্থন করার পাশাপাশি দেশের ভিন্নমতালম্বীদের কঠোরভাবে দমনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমের বিভিন্ন দেশ বেলারুশের বিরুদ্ধেও ঢালাও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় দেশের অর্থনীতি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো একটি আপস রফার সন্ধানে থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বন্দী মুক্তি নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত হয়।

দ্বিতীয় দফায় ট্রাম্পের দূত হিসেবে জন কোল মিনস্কে প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে বৈঠকের পর আরও ১২৩ জন বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত আসে। গত শনিবার প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো তাঁদের ক্ষমা করে দেওয়ার ঘোষণা প্রচারের পর ২০২২ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের যুগ্ম বিজয়ী আলেস বিয়ালিয়াতস্কিসহ ১২৩ জন কারাগার থেকে ছাড়া পান।

আগামী কয়েক মাসে আরও এক হাজারের মতো বন্দী বেলারুশ থেকে মুক্তি পেতে পারেন বলে জন কোল আশা করেছেন। বিনিময়ে বেলারুশের বিরুদ্ধে আরোপিত কিছু নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে যুক্তরাষ্ট্র সম্মত হয়েছে।

আরও পড়ুন