ইরানে বিক্ষোভকারী নারীকে পুলিশের যৌন নিপীড়ন: বিবিসি

ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে তেহরানের আর্জেন্টিনা স্কয়ার থেকে
ছবি: টুইটার

ইরানে ভিডিওতে এক নারী বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টার সময় পুলিশকে যৌন নিপীড়ন করতে দেখা গেছে। খবর বিবিসির।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যবহারকারীরা এ নিয়ে ক্ষোভ জানাচ্ছেন। অনেকে এ ঘটনায় ন্যায়বিচার দাবি করেছেন। পুলিশপ্রধানের পদত্যাগও দাবি করেছেন কেউ কেউ। সরকারপন্থীদের কেউ কেউ এ ঘটনায় নিন্দা জানাচ্ছেন।

ইরানে কঠোর হিজাববিধি লঙ্ঘনের অপরাধে পুলিশি হেফাজতে ২২ বছর বয়সী ইরানি তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরানজুড়ে এক মাস ধরে বিক্ষোভ চলছে। তরুণী এমনকি স্কুলশিক্ষার্থীদেরও বিক্ষোভের সামনের সারিতে দেখা যাচ্ছে। পরিবারের অভিযোগ, নীতি পুলিশের পিটুনির শিকার হয়ে মাসার মৃত্যু হয়েছে। অপর দিকে নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, অসুস্থতার কারণে মাসার মৃত্যু হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কিছু টুল ব্লক করে রাখা সত্ত্বেও ইরানিরা বেশ কিছু বিক্ষোভের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করছেন।

ইরানের ভেতরে ও বাইরে বিক্ষোভের অসংখ্য ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে। সবশেষ ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে তেহরানের আর্জেন্টিনা স্কয়ার থেকে। ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, বুলেটরোধী পোশাক ও হেলমেট পরা একদল নিরাপত্তা কর্মকর্তা প্রধান সড়কে এক নারীকে ঘিরে রেখেছেন।

এরপর দেখা যায়, ওই কর্মকর্তাদের একজন ওই নারীর ঘাড় চেপে ধরে পুলিশ সদস্যদের ভিড়ের মধ্যে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। সেখানে প্রায় ২৪ জন পুলিশ ছিলেন। তাঁদের বেশির ভাগই মোটরসাইকেলে ছিলেন। ভিডিওতে দেখা যায়, ওই নারীকে যখন টেনে একটি বাইকের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন কর্মকর্তাদের একজন পেছন থেকে তাঁর সঙ্গে অশালীন আচরণ করছেন।

এরপর ওই নারী মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তখন আরও কিছু পুলিশ কর্মকর্তা চারপাশ থেকে তাঁকে ঘিরে ধরেন। এ সময় ক্যামেরার পেছন থেকে এক নারীকে বলতে শোনা যায়: ‘তাঁরা তাঁর চুল টানছে।’

ওই সময় ঘটনাস্থলের কাছে অবস্থানকারী গাড়ির চালকেরা তাঁদের হর্ন বাজাতে শুরু করেন। কিছুদিন ধরে ইরানজুড়ে চলমান বিক্ষোভের অংশ হিসেবে অনেকে গাড়ি থামিয়ে রেখে হর্ন বাজিয়ে থাকেন।

ভিডিওতে যে নারীকে পুলিশ ঘেরাও করে রেখেছিল, তাঁর মাথায় কোনো হিজাব ছিল না। ওই নারী পরে মাটি থেকে উঠে দাঁড়িয়ে ঘটনাস্থল থেকে দৌড়ে চলে যান।

এমন অবস্থায় ক্যামেরার পেছন থেকে আবার এক নারী বলে ওঠেন: ‘তাঁকে (নিরাপত্তা কর্মকর্তা) দেখুন, তিনি হাসছেন।’

বিবিসির পারসি সংস্করণ বলছে, ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করেছে তারা।
তেহরান পুলিশের জনসংযোগ কার্যালয়ের বরাতে ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনার প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন

ঠিক কী ঘটেছিল, তা নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়নি। তবে তারা বলেছে, শত্রুরা জনগণের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি এবং সহিংসতা উসকে দেওয়ার চেষ্টায় মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধকে ব্যবহার করছে।

বিক্ষোভকারী নিপীড়নের ভিডিওটি নিয়ে ইরানিদের অনেকে ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ জানিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, এ ঘটনায় তাঁদের বিক্ষোভ আরও জোরালো হয়ে উঠবে।

আরও পড়ুন