ইরানের ওপর ইইউর নতুন নিষেধাজ্ঞা

হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় ইরানজুড়ে অভূতপূর্ব বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে
ছবি : রয়টার্স

তরুণী মাসা আমিনি মৃত্যুর ঘটনায় শুরু হওয়া বিক্ষোভে দমন–পীড়ন চালানোয় ইরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। নতুন এ নিষেধাজ্ঞা আওতায় রয়েছে ইরানের নীতি পুলিশ, দেশটির রেভল্যুশনারি গার্ডের সাইবার বিভাগ, তথ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ আজারি জাহরোমি। আজ সোমবার লুক্সেমবার্গে দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এক বৈঠক থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

ইরানে চলমান বিক্ষোভে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো। গতকালের বৈঠকের আগে সূত্র জানিয়েছিল, বিক্ষোভে দমন–পীড়ন চালানোর ঘটনায় ইরান সরকারের উচ্চপদস্থ ১৫ কর্মকর্তার ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং ইউরোপে থাকা তাঁদের সম্পদ জব্দ করার ঘোষণা দেওয়া হতে পারে।

গত ১৩ সেপ্টেম্বর ইরানের রাজধানী তেহরান থেকে মাসা আমিনি নামের এক তরুণীকে গ্রেপ্তার করে নীতি পুলিশ। হিজাবসংক্রান্ত বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ১৬ সেপ্টেম্বর ওই তরুণী পুলিশি হেফাজতে মারা যায়। ১৭ সেপ্টেম্বর তাঁর দফানের পর বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই বিক্ষোভ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভ দমনে গুলি চালায় ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী। এতে দুই শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ ঘটনায় যাঁদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে আরও রয়েছেন ইরানের নীতি পুলিশের প্রধান, দেশটির রেভল্যুশনারি গার্ডের আধা সামরিক বাহিনী বাসিজ ও ইরানের পুলিশের একটি অংশ, যারা সাদাপোশাকে কাজ করে থাকে।

লুক্সেমবার্গে যে বৈঠক থেকে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, ওই বৈঠকের আগে এ বিষয়ে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালিনা বেয়ারবক বলেছিলেন, ‘আমরা নতুন নিষেধাজ্ঞা আজ (সোমবার) ঘোষণা করব। ইরানে নারী, তরুণ–তরুণী, সাধারণ মানুষের ওপর যারা দমন–পীড়ন চালিয়েছে, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনব।’

লুক্সেমবার্গের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ অ্যাসেলবর্ন বলেন, ইরানের ব্যক্তিরা শুধু নিষেধাজ্ঞার আওতার মধ্যে থাকবেন, এমনটা নয়। ইউক্রেন যুদ্ধে জড়িয়ে যাওয়ার জন্য তেহরানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। এ ছাড়া ইউক্রেনও ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চেয়েছে।

এদিকে তেহরানে এভিন কারাগারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে আট হয়েছে। ইরানের বিচার বিভাগ এ তথ্য জানিয়েছে। তবে ওই কারাগারে থাকে অনেকে স্বজন বলছেন, এ সংখ্যা আরও বেশি। এ ছাড়া এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। স্বজনেরা অভিযোগ করেছেন, ওই কারাগারে গুলি চালানো ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়েছে। এ ছাড়া কারাবন্দীদের মারধর করেছে নিরাপত্তা বাহিনী।