রাফায় ফিলিস্তিনিদের মনে এখন একটাই প্রশ্ন, ‘আমরা যাব কোথায়’

ইসরায়েলের স্থল অভিযানের আশঙ্কায় রাফা ছাড়ছেন ফিলিস্তিনিরা। রাফা, গাজা, ফিলিস্তিন, ১২ ফেব্রুয়ারিছবি: এএফপি

রাফায় অবস্থানরত এক ফিলিস্তিনি চিকিৎসক বলেছেন, গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরটিতে ইসরায়েলি বাহিনীর আসন্ন স্থল অভিযান নিয়ে লোকজন আতঙ্কিত।

গতকাল সোমবার বিবিসিকে বেশ কিছু বার্তা পাঠিয়েছেন চিকিৎসক আহমেদ আবুবাইদ। এই বার্তায় তিনি রাফায় বিরাজ করা আতঙ্কের কথা তুলে ধরেন।

গত রোববার মধ্যরাতের পর রাফায় দফায় দফায় বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এ হামলায় ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

রাতভর ইসরায়েলি বাহিনীর এই বিমান হামলাকে অবিরাম ও সর্বব্যাপী হিসেবে বর্ণনা করেছেন চিকিৎসক আবুবাইদ।

আরও পড়ুন

আবুবাইদ বলেন, এখন রাফায় যাঁরা অবস্থান করছেন, তাঁদের মনে ঘুরেফিরে একটা প্রশ্ন আসছে; আর প্রশ্নটি হলো, ‘আমরা কোথায় যেতে পারি?’

গত সপ্তাহে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, রাফায় স্থল অভিযানের জন্য তিনি তাঁর দেশের সেনাদের প্রস্তুত হতে নির্দেশ দিয়েছেন।

গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার অর্ধেকের বেশি এখন মিসরের সীমান্তবর্তী শহর রাফায় অবস্থান করছেন। তাঁদের বেশির ভাগই বাস্তুচ্যুত হয়ে এখানে আশ্রয় নিয়েছেন। উত্তর ও মধ্য গাজায় স্থল অভিযান চালানোর সময় তাঁদের রাফায় আশ্রয় নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল ইসরায়েলি বাহিনী। এখন রাফায় স্থল অভিযান চালাতে যাচ্ছে ইসরায়েল।

গত অক্টোবরে সংঘাত শুরুর আগে রাফায় মাত্র আড়াই লাখ মানুষ ছিল। সেখানকার প্রতি বর্গকিলোমিটার এলাকায় বর্তমানে ১৬ হাজার ফিলিস্তিনি গাদাগাদি করে থাকছেন।

বাস্তুচ্যুত অনেক মানুষ অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে বা তাঁবুতে বসবাস করছেন। সেখানে সুপেয় পানি ও খাবারের সংকট রয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকারপ্রধান ভলকার টুর্ক সতর্ক করে বলেছেন, রাফায় স্থল অভিযানের ফলাফল হবে ভয়ংকর। সেখানে বিপুলসংখ্যক বেসামরিক মানুষ আছেন। তাঁদের বেশির ভাগই শিশু ও নারী। রাফায় স্থল অভিযান চালানো হলে অনেক বেসামরিক মানুষের নিহত ও আহত হওয়ার আশঙ্কা আছে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। সরকারি তথ্যের আলোকে এএফপির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইসরায়েলে হামাসের এই হামলায় প্রায় ১ হাজার ১৬০ জন নিহত হন। নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক ছিলেন। ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে হামাস প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে। জিম্মিদের মধ্যে শতাধিক ব্যক্তিকে গত নভেম্বরের শেষের দিকের এক সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতির সময় ছেড়ে দেয় হামাস।

ইসরায়েল বলেছে, গাজায় এখনো প্রায় ১৩০ জন জিম্মি রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অন্তত ২৯ জন নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জবাবে ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গাজার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, চার মাস ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় প্রায় সাড়ে ২৮ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।

আরও পড়ুন