গাজার বিদ্যালয়ে হামলার পক্ষে সাফাই ইসরায়েলি বাহিনীর
গাজার নুসেইরাত এলাকার একটি বিদ্যালয়ে হামলা চালানোর পক্ষে সাফাই গাইছে ইসরায়েল বাহিনী। তারা গতকাল সোমবার দাবি করছে, বিদ্যালয়ের আড়ালে ‘বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী’ সক্রিয় ছিল, যাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলের বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে গতকাল দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এবং সুনির্দিষ্ট অস্ত্র ব্যবহার করে, আইএএফ বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসীর ওপর আঘাত হেনেছে, যারা নুসেইরাত এলাকার একটি বিদ্যালয়ের অবকাঠামো ব্যবহার করে সেটির আড়ালে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল।’
‘হামাস এবং ইসলামিক জিহাদ ধারাবাহিকভাবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে, ইসরায়েল রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলার জন্য তারা বেসামরিক অবকাঠামোর আড়ালে এবং জনগণকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।’ইসরায়েলি সেনাবাহিনী
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ নুসেইরাত এলাকার ওই বিদ্যালয় পরিচালনা করত। একটি হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, বিদ্যালয়ে হামলার পর বহু আহত ফিলিস্তিনিকে কাছের আল-আওদা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, ‘হামাস ও ইসলামিক জিহাদ ধারাবাহিকভাবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে, ইসরায়েল রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলার জন্য তারা বেসামরিক অবকাঠামোর আড়ালে এবং জনগণকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।’
গত শনিবার গাজার হামাস প্রশাসনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, নুসেইরাতে একটি বিদ্যালয়ে ইসরায়েলের হামলায় ১৬ জন নিহত হয়েছেন। গাজার বহু উদ্বাস্তু ওই স্কুলে আশ্রয় নিয়েছিল।
ওই সময়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী থেকে বলা হয়েছিল, তাদের যুদ্ধ বিমান নুসেইরাতের আল-জাউনি বিদ্যালয় ঘিরে পরিচালিত ‘সন্ত্রাসীদের’ ওপর হামলা করেছে। ইউএনআরডব্লিউএ ওই বিদ্যালয়টি পরিচালনা করত।
গত রোববার গাজা যুদ্ধ দশম মাসে পা রেখেছে। গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে এই যুদ্ধ শুরু হয়। ওই দিন ইসরায়েলের গাজা সীমান্তবর্তী দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের হামলায় ১ হাজার ১৯৫ জন নিহত হয়েছে। বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হয় ২৫১ জনকে। তাঁদের মধ্যে ১১৬ জন এখনো হামাসের হাতে বন্দী। এই ১১৬ জনের মধ্যে ৪২ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলেও জানিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
ওই দিনই তীব্র আক্রোশে গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় ৩৮ হাজার ১৯৩ জন প্রাণ হারিয়েছে, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।