মার্কিন বদলা জিম্মি মুক্তির আলোচনাকে ব্যাহত করবে না, আশা কাতারের

কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল থানি
ফাইল ছবি: রয়টার্স

ড্রোন হামলার মার্কিন বদলা জিম্মি মুক্তির আলোচনাকে ব্যাহত করবে না বলেই আশা করছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী।

কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল থানি গতকাল সোমবার ওয়াশিংটনভিত্তিক একটি গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানে দর্শকদের উদ্দেশে তাঁর এই আশার কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে কাতারের প্রধানমন্ত্রী কাছে জানতে চাওয়া হয়, জর্ডানে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ইরান-সমর্থিত জঙ্গিদের ড্রোন হামলার বদলা যদি যুক্তরাষ্ট্র নেয়, তাহলে কি ইসরায়েল-হামাসের মধ্যকার সম্ভাব্য জিম্মি মুক্তির চুক্তি ভেস্তে যেতে পারে?

জবাবে কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল থানি বলেন, ‘আমি আশা করি, কোনো কিছুই আমাদের প্রচেষ্টাকে ক্ষুণ্ন বা প্রক্রিয়াটিকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে না।’

আটলান্টিক কাউন্সিলের অনুষ্ঠানে শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল থানি বলেন, মার্কিন বদলা অবশ্যই প্রভাব ফেলবে। কোনো না কোনোভাবে তা অবশ্যই আঞ্চলিক নিরাপত্তার ওপর প্রভাব ফেলবে। তবে তাঁরা আশা করেন, বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

সিরিয়ার সীমান্তবর্তী জর্ডানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালানো হয় বলে গত রোববার এক বিবৃতিতে জানায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড। এই হামলায় ৩ মার্কিন সেনা নিহত হন, আহত হয়েছেন ৩৪ জন।

গত অক্টোবরে ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাত শুরুর পর এই প্রথম মধ্যপ্রাচ্যে হামলায় মার্কিন সেনা নিহত হলেন। এই ঘটনার জেরে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে।

হামলার জন্য ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে দায়ী করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। নিজেদের ‘ইসলামিক রেসিস্ট্যান্স’ পরিচয় দিয়ে ইরাকের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।

হামলার বদলা নিতে বাইডেনের ওপর রাজনৈতিক চাপ বাড়ছে। যথাসময়ে হামলার জবাব দেওয়া হবে জানিয়েছেন বাইডেন। তবে কোথায় ও কীভাবে জবাব দেওয়া হবে, সে বিষয়ে তিনি এখনো কিছু স্পষ্ট করেননি।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। এই হামলায় ১ হাজার ১৪০ জনের মতো নিহত হন। প্রায় ২৪০ জনকে তারা আটক করে গাজায় নিয়ে যায়। জবাবে ৭ অক্টোবরই গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। পরে কাতারের মধ্যস্থতায় এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি হয়েছিল। তখন প্রায় ১০০ জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস।

গাজার হামাস সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, উপত্যকাটিতে ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ২৬ হাজার ৬০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাঁদের বেশির ভাগই শিশু ও নারী।

বাকি জিম্মিদের মুক্তির লক্ষ্যে ইসরায়েল-হামাসের মধ্যে নতুন একটি চুক্তির জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, কাতারসহ মধ্যস্থতাকারীরা। এ বিষয়ে গত সপ্তাহান্তে আলোচনাও হয়। তবে চুক্তিতে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে পক্ষগুলোর মধ্যে এখনো তাৎপর্যপূর্ণ মতপার্থক্য রয়ে গেছে।