হুতিদের হামলার শিকার জাহাজে বাংলাদেশি ক্রু

ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে মার্লিন লুয়ান্ডা নামের জাহাজে আগুন ধরে যায়ছবি: ভারতীয় নৌবাহিনীর সৌজন্যে এক্স হ্যান্ডেল

এডেন উপসাগরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার শিকার একটি বাণিজ্যিক জাহাজে থাকা ক্রু সদস্যদের মধ্যে একজন বাংলাদেশিও আছেন। গত শুক্রবার রাতে এই হামলা চালায় ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা।

শনিবার ভারতীয় নৌবাহিনী এক্স (সাবেক টুইটার) বার্তায় জানায়, হামলার শিকার জাহাজটিতে মোট ২৩ জন ক্রু আছেন। তাঁদের মধ্যে ২২ জন ভারতীয় ও একজন বাংলাদেশি।

তবে এই ক্রুদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। তবে সবাই নিরাপদে আছেন।

হামলার শিকার তেলবাহী ট্যাংকার জাহাজটির নাম মার্লিন লুয়ান্ডা। মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের পতাকাবাহী এই জাহাজ পরিচালনা করে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ট্রাফিগুরা।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী যুক্তরাজ্যের সঙ্গেও জাহাজটির সংশ্লিষ্টতা আছে। মার্টিন লুয়ান্ডা যে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে, সেই ট্রাফিগুরা ওশানিক্স সার্ভিসেস লিমিটেড নামে যুক্তরাজ্যে নিবন্ধিত।

যুক্তরাজ্যের সামুদ্রিক বাণিজ্য পরিচালনাকারী সংস্থা ইউকেএমটিও জানিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় এডেন উপসাগরের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে তেলবাহী ট্যাংকারটিতে হামলা হয়। ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার পরে ট্যাংকারটিতে আগুন ধরে যায়। জরুরি বার্তা পেয়ে মার্লিন লুয়ান্ডাকে সাহায্য করতে এগিয়ে যায় ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ।

আরও পড়ুন

শনিবার ট্রাফিগুরা জানিয়েছে, ট্যাংকারে লাগা আগুন নেভানো হয়েছে। জাহাজে থাকা ক্রু সদস্যদের সবাই নিরাপদে আছেন। নিরাপদ কোনো স্থানে নোঙর করার পথে আছে জাহাজটি।

তেলবাহী ট্যাংকারে হুতিদের এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্রান্ট শ্যাপস। তিনি বলেছেন, ‘লোহিত সাগরে অবাধে জাহাজ চলার স্বাধীনতা রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। আমরা আগের মতোই আমাদের এ দায়িত্ব পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

তেলবাহী এই ট্যাংকারে হামলার দায় স্বীকার করেছে হুতিরা। ইরান-সমর্থিত এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের আগ্রাসনের প্রতিবাদে মার্লিন লুয়ান্ডায় হামলা করেছে তারা।

ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতি। তারা ইয়েমেনের বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে। ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে গত নভেম্বর থেকে লোহিত সাগরে ইসরায়েলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা আছে, এমন বাণিজ্যিক জাহাজ নিশানা করে একের পর এক হামলা চালাচ্ছে তারা।

লোহিত সাগর বিশ্ববাণিজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ। হুতিদের হামলায় এ পথে জাহাজ চলাচল কমে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে বিশ্ববাণিজ্যে। এ পরিস্থিতিতে সম্প্রতি ইয়েমেনে হুতিদের অবস্থান নিশানা করে একাধিক হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। নতুন করে হুতিদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় তারা।

আরও পড়ুন

হামলা শুরুর পর থেকে লোহিত সাগরের পাশাপাশি এডেন উপসাগরে ইসরায়েল ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা আছে, এমন বাণিজ্যিক জাহাজ নিশানা করে হামলা চালাচ্ছে হুতিরা। এর আগে ১৮ জানুয়ারি এডেন উপসাগরে একটি জাহাজে ড্রোন হামলা করে তারা।