যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েলি হামলায় রায়েদ সাদসহ নিহত ৩৮৬
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় হামাসের জ্যেষ্ঠ কমান্ডার রায়েদ সাদ নিহত হয়েছেন—এ তথ্য ইসরায়েল আগেই জানিয়েছিল। এবার হামাসও সাদের নিহত হওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে।
হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে গত ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এরপরও বিভিন্ন সময় গাজা উপত্যকায় হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। গাজা কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির মধ্যেও প্রায় ৮০০ হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৩৮৬ জন।
গত অক্টোবরে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় নিহত হওয়া হামাসের সর্বোচ্চ নেতা হলেন রায়েদ সাদ।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো গতকাল রোববার জানায়, গত শনিবার গাজা নগরীর পাশে এক হামলায় রায়েদ সাদ নিহত হয়েছেন। এ হামলায় আহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন।
পরে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী গতকাল বিবৃতি দিয়ে রায়েদ সাদকে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করে। বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের সহযোগিতা নিয়ে একটি গাড়িতে এ হামলা চালানো হয়।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর থেকেও একটি বিবৃতি দিয়ে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। তবে ওই বিবৃতিতে রায়েদ সাদের নিহত হওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য ছিল না।
হামাসের পক্ষ থেকে শুরুতে জ্যেষ্ঠ কমান্ডারের নিহত হওয়ার বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। পরে সংগঠনের গাজাপ্রধান খলিল আল-হাইয়া গতকাল একটি ভিডিও বিবৃতি দেন। তাতে শনিবারের হামলায় রায়েদ সাদের নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেন খলিল। তিনি আরও দাবি করেন, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করেছে।
খলিল বলেন, ‘ইসরায়েল বারবার যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে যাচ্ছে, যার সর্বশেষ সংযোজন হামাস কমান্ডারকে (রায়েদ সাদ) হত্যা। গতকালই এ ঘটনা ঘটেছে। এই পটভূমিতে আমরা সব মধ্যস্থতাকারী এবং বিশেষ করে চুক্তির প্রধান নিশ্চয়তাদাতা হিসেবে মার্কিন প্রশাসন ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আহ্বান জানাই, তাঁরা যেন ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্মান করতে ও তা মেনে চলতে বাধ্য করেন।’
ইউরোপীয় কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের তথ্য অনুযায়ী, রায়েদ সাদ হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসেম ব্রিগেডের সামরিক পরিষদের একজন জ্যেষ্ঠ সদস্য। তিনি কাসেম ব্রিগেডের অভিযান ও উৎপাদন বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। তাঁকে এই সশস্ত্র শাখার ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ বা দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা হিসেবেও বিবেচনা করা হতো।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে দেওয়া আগের এক বিবৃতিতে রায়েদ সাদকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলার ‘অন্যতম পরিকল্পনাকারী’ হিসেবেও অভিযুক্ত করা হয়।