গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনায় গতি, প্যারিসে মোসাদপ্রধান

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় সাড়ে তিন মাসে প্রায় ৩০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেনফাইল ছবি: রয়টার্স

গাজায় নতুন করে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় আবার গতি পেয়েছে। যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা করতে শনিবার প্যারিসে গেছে ইসরায়েলের প্রতিনিধিদল। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান ডেভিড বার্নেয়া। তাঁর সঙ্গে আরও আছেন ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিনবেতের প্রধান রোনেন বার।

এএফপির খবরে জানানো হয়েছে, প্যারিসে গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য মধ্যস্থতা করা তিন দেশ মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবে ইসরায়েলের প্রতিনিধিদল।

এর আগে চলতি সপ্তাহে তেল আবিবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের সঙ্গে বৈঠক করেন হোয়াইট হাউসের বিশেষ দূত ব্রেট ম্যাকগার্ক। তেল আবিবের এ বৈঠকের আগে তিনি মিসরের রাজধানী কায়রোয় অন্য মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এর আগে কায়রোতে এই মধ্যস্থতাকারীরা গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন।

হামাসের একটি সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে, প্রস্তাবিত নতুন এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় ছয় সপ্তাহের জন্য গাজায় হামলা বন্ধ রাখবে ইসরায়েল। এ ছাড়া ইসরায়েলের কারাগারে থাকা ২০০ থেকে ৩০০ জন ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেবে। বিনিময়ে হামাসের কাছে থাকা ৩৫ থেকে ৪০ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে ছেড়ে দেওয়া হবে।

ক্ষুধার চোটে ঘোড়ার মাংস ভক্ষণ

গাজায় চলছে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি। খাবার ও পানির সংকট এতটাই তীব্র যে ক্ষুধার জ্বালায় বাধ্য হয়ে অনেকে ঘোড়ার মাংসও ভক্ষণ করছেন।

উত্তর গাজার বাসিন্দা আবু জিবরিল গতকাল এএফপিকে বলেন, ‘সন্তানগুলো না খেয়ে আর কত থাকবে। তাই ঘোড়া জবাই করে তাদের খেতে দেওয়া ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় ছিল না। ক্ষুধায় আমাদের প্রাণ যায় যায় অবস্থা।’

এদিকে গাজার বিভিন্ন স্থানে অর্ধশতাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এসব হামলায় শতাধিক ফিলিস্তিন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দেইর আল বালাহ এলাকায় একটি ভবনে হামলায় অন্তত ২৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সেই ভবনে অসংখ্য উদ্বাস্তু ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে শনিবার রাতে দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে গত ৭ অক্টোবর শুরু ইসরায়েলি হামলায় গাজায় অন্তত ২৯ হাজার ৬০৬ ফিলিস্তিনি নিহত হলেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন প্রায় ৭০ হাজার।