যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আশাবাদ

প্রায় সাত মাস ধরে চলা যুদ্ধে গাজায় প্রাণহানির সংখ্যা ৩৪ হাজার ৪৮৮ জনে দাঁড়িয়েছে।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বৈঠকে গাজা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান (বাঁয়ে) ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন (ডানে)। গতকাল রিয়াদেছবি: এএফপি

ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং বন্দিবিনিময় চুক্তি নিয়ে ইতিবাচক ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে। চুক্তির বিষয়ে ইসরায়েলের দেওয়া পাল্টা প্রস্তাব পর্যালোচনা শেষে হামাস বলেছে, প্রস্তাবের বিষয়ে তাঁদের ‘বড় ধরনের আপত্তি’ নেই। এদিকে প্রায় সাত মাস ধরে চলা যুদ্ধে গাজায় প্রাণহানির সংখ্যা ৩৪ হাজার ৪৮৮ জনে দাঁড়িয়েছে।

চুক্তির বিষয়ে ইসরায়েলের দেওয়া পাল্টা প্রস্তাবের জবাব দিতে গতকাল সোমবার হামাসের একটি প্রতিনিধিদলের মিসরের রাজধানী কায়রোয় যাওয়ার কথা। হামাসের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এ কথা জানিয়েছেন।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে হামাসের ওই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, আলোচনার পরিবেশ ইতিবাচক, যদি না ইসরায়েল নতুন করে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। তিনি আরও বলেন, প্রস্তাবের বিষয়ে হামাসের দেওয়া পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনায় তেমন বড় ধরনের কোনো আপত্তি নেই।

যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছাতে বৈশ্বিক মিত্রদের পক্ষ থেকে ব্যাপক চাপে রয়েছে ইসরায়েল সরকার। এ ছাড়া জিম্মিদের মুক্ত করতে ইসরায়েলেও বড় ধরনের বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা চালিয়ে আসছে মধ্যস্থতাকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতার।

মানবিক কার্যক্রম চালানো সংস্থাগুলো বলছে, এই যুদ্ধের ফলে দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে গাজা। ইসরায়েলের হামলায় অবরুদ্ধ এ উপত্যকার বেশির ভাগই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এ যুদ্ধ ঘিরে বৃহত্তর সংঘাতের শঙ্কাও তৈরি হয়েছে।

গতকাল সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে এক প্যানেল আলোচনায় মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শোকরি বলেছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দী মুক্তি নিয়ে একটি প্রস্তাব ঘিরে মিসর আশাবাদী। তবে প্রস্তাবের বিষয়ে ইসরায়েল ও হামাসের পক্ষ থেকে জবাবের অপেক্ষায় আছে তাঁর দেশ।

গতকাল রিয়াদে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে (ডব্লিউইএফ) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে গাজায় ইসরায়েলের হামলা বন্ধে ‘অসাধারণ উদার’ প্রস্তাবটি হামাস গ্রহণ করবে বলে তিনি আশাবাদী।

এদিকে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফা শহরে তিনটি বাড়িতে ইসরায়েলের হামলায় কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। গতকাল হাসপাতালের কর্মকর্তারা এ কথা জানিয়েছেন। গাজা নগরীতে দুটি বাড়িতে হামলায় আরও চার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৩৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ৩৪ হাজার ৪৮৮ জন নিহত হয়েছেন।

গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে পারেন, এমন সম্ভাবনায় অস্বস্তিতে রয়েছে দেশটি।