ইসরায়েলি হামলা চলছে, যিশুর জন্মস্থানে নেই বড়দিনের আনন্দ-উৎসব

‘গাজার জন্য প্রার্থনা’। গাজার সমর্থনে এই বার্তা প্রদর্শন করা হচ্ছে বেথলেহেমে। বেথলেহেম, ২৪ ডিসেম্বরছবি: এএফপি

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আজ সোমবার ভোরেও বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। গাজার দক্ষিণের শহর খান ইউনিসে চালানো এ হামলায় কমপক্ষে ১৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে বার্তা সংস্থা এএফপি এ তথ্য জানায়।

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন আজ (২৫ ডিসেম্বর)। সারা বিশ্বের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষ ধর্মীয় আচার, প্রার্থনা ও আনন্দ-উৎসবের মধ্য দিয়ে দিনটি উদ্‌যাপন করছেন। কিন্তু ভিন্ন দৃশ্য ফিলিস্তিনে। সেখানে ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনিদের রক্তক্ষয় অব্যাহত আছে।

খ্রিষ্টধর্মের প্রবর্তক যিশুর জন্মস্থান বেথলেহেম শহর। বেথলেহেমের অবস্থান ইসরায়েল-অধিকৃত ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে। দুই হাজার বছর আগে এই দিনে বেথলেহেমের এক গোয়ালঘরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন যিশু। বেথলেহেমে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় বড়দিন পালনের দীর্ঘ ঐতিহ্য আছে। কিন্তু এবার বেথলেহেমে সেই উৎসব নেই।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, এবার বেথলেহেমে বড়দিন উদ্‌যাপন বাতিল করেছেন স্থানীয় পাদরিরা।

সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানাতে বেথলেহেমের স্থানীয় নেতারা গত মাসে সিদ্ধান্তটি নেয়।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বছর বেথলেহেমে বড়দিন উদ্‌যাপন বাতিল করা হয়েছে। বড়দিন উপলক্ষে বেথলেহেমে কোনো আনন্দ নেই, উদ্‌যাপন নেই, নেই সান্তা। সেখানকার পরিবেশ ভারী।

বেথলেহেমের বাসিন্দা ম্যাডেলিন বলেন, শহরটিতে আনন্দ–উল্লাস নেই, নেই সান্তাও। কারণ, এ বছর এখানে কোনো উদ্‌যাপন নেই।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় শান্তির জন্য ফিলিস্তিনি খ্রিষ্টানরা এর আগে বেথলেহেমে মোমবাতি প্রজ্বালন করেন। প্রার্থনা করেন।

ভ্যাটিকানে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় ‘ক্রিসমাস ইভ ম্যাস’ অনুষ্ঠানে পোপ ফ্রান্সিস মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আজ তাঁদের হৃদয় পড়ে আছে বেথলেহেমে, যেখানে শান্তির রাজপুত্র যুদ্ধের নিরর্থক যুক্তি, অস্ত্রের সংঘাতে আরও একবার প্রত্যাখ্যাত, যা আজও তাঁকে পৃথিবীতে জায়গা খুঁজে পেতে বাধা দেয়।

হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ২০ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাঁদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।