২৯০ আরোহীসহ ইরানের উড়োজাহাজ কেন ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ধ্বংস করেছিল যুক্তরাষ্ট্র

ইরানের আকাশে ১৯৮৮ সালের ৩ জুলাই বিধ্বস্ত হয় ইরান এয়ারের একটি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ। মার্কিন যুদ্ধজাহাজ থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে মাঝ আকাশেই ভেঙে টুকরা টুকরা হয়ে যায় উড়োজাহাজটি। নিহত হন ২৯০ আরোহীর সবাই। ইতিহাসে এটা ‘ফ্লাইট ৬৫৫ ট্র্যাজেডি’ নামে পরিচিত। ওই ঘটনার বর্ষপূর্তি আজ। আজকের দিনে ঘটনাটির আদ্যাপান্ত নিয়ে প্রথম আলোর এই আয়োজন—

ফ্লাইট ৬৫৫ ট্র্যাজেডির বর্ষপূর্তিতে ইরানের বন্দর আব্বাস বন্দরে ফুল দিয়ে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণ করছে ইরানি শিশুরাফাইল ছবি: এএফপি

সুন্দর রোদেলা সকাল। ঝাঁ–চকচকে নীল আকাশ। পারস্য উপসাগরের ওপর দিয়ে বইছে ঝিরিঝিরি মিঠে হাওয়া। এমন চমৎকার আবহাওয়ায় উড়াল দিয়েছিল একটি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ। এতে দেশি-বিদেশি ২৭৪ জন যাত্রী আর ১৬ জন ক্রু ছিলেন। কে ভেবেছিলেন, এটাই হবে এই ২৯০ জনের শেষ উড়াল। মুহূর্তের মধ্যে একটি ক্ষেপণাস্ত্র উড়ে এসে আঘাত হানবে উড়োজাহাজটিতে। মাঝ আকাশেই সেটি ভেঙে টুকরা টুকরা হয়ে যাবে, এমনটাই-বা কে ভেবেছিলেন।

ঘটনাটি ১৯৮৮ সালের আজকের দিন অর্থাৎ ৩ জুলাইয়ের। ঘটনাস্থল পারস্য উপসাগরের হরমুজ প্রণালি। চমৎকার আবহাওয়ায় হরমুজ প্রণালিঘেঁষা ইরানের বন্দর আব্বাস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড়াল দেয় ইরান এয়ারের ফ্লাইট ৬৫৫। এয়ারবাস এ-৩০০ মডেলের যাত্রীবাহী উড়োজাহাজটির গন্তব্য ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই। সঙ্গে মোট ২৯০ জন আরোহী। এরপরই বিশ্বের আকাশসেবা খাতের অন্যতম বড় ট্র্যাজেডির শিকার হয় উড়োজাহাজটি।

সময় মাত্র ৭ মিনিট

ঘড়িতে তখন সকাল ১০টা ৪৭ মিনিট। নির্ধারিত সময়ের আধা ঘণ্টা পর ইরানের বন্দর আব্বাস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড়াল দেয় ফ্লাইট ৬৫৫। ওই সময় নিরাপত্তার জন্য হরমুজ প্রণালিতে মোতায়েন করা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস ভিনসেন্স। সেখান থেকে উড়োজাহাজটি লক্ষ্য করে পরপর দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়।

ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, এ ঘটনা আন্তর্জাতিক জলসীমায় ঘটেছে। যদিও পরে সেটা ভুল প্রমাণিত হয়। উড়োজাহাজটি ইরানের আকাশসীমায় থাকা অবস্থাতে হামলার শিকার হয়েছিল। বলা হয়, অনুমোদিত বাণিজ্যিক বিমানপথে উড়োজাহাজটি নির্ধারিত গতির চেয়ে ধীরে আসার কারণে এই ‘ভুল’ হয়েছে।

দুটি ক্ষেপণাস্ত্রের একটি উড়ে গিয়ে আঘাত হানে ফ্লাইট ৬৫৫-এ। মাঝ আকাশে ভেঙে টুকরা টুকরা হয়ে যায় ইরানের ওই উড়োজাহাজ। প্রাণ হারান ২৯০ আরোহীর সবাই। তখন ঘড়িতে সকাল ১০টা ৫৪ মিনিট। অর্থাৎ উড্ডয়নের মাত্র ৭ মিনিটের মাথায় ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ধ্বংস হয় উড়োজাহাজটি।

যুদ্ধের সময়ের উৎকণ্ঠা

ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ ধ্বংসের ঘটনায় বিশ্বজুড়ে তুমুল প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। এ ঘটনার ব্যাপক নিন্দা জানানো হয়। কিন্তু প্রশ্ন হলো, ইরানের আকাশসীমায় দেশটির একটি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ কেন ধ্বংস করলে যুক্তরাষ্ট্র? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে একটু পেছনে যেতে হবে। বুঝতে হবে তখনকার সময়টাকে। উপলব্ধি করতে হবে ইরান, বিশেষত হরমুজ প্রণালির কৌশলগত অবস্থান ও গুরুত্বকে।

১৯৮০ সালের সেপ্টেম্বরে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন একটি যুদ্ধের সূচনা হয়। ইতিহাসে এই যুদ্ধ ইরান-ইরাক যুদ্ধ নামে পরিচিত। কেউ কেউ একে প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধ বলেন। থেমে থেমে আট বছর ধরে চলে দুই দেশের যুদ্ধ। ১৯৮৮ সালের আগস্টে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় যুদ্ধের লাগাম টানা হয়।

যা–ই হোক, ফ্লাইট ৬৫৫ যখন ধ্বংস করা হয়, অর্থাৎ ১৯৮৮ সালের জুলাই মাসে তখনো ইরান ও ইরাকের মধ্যে যুদ্ধ চলছিল। ইরানে ইসলামিক বিপ্লবের তখনো এক দশক পার হয়নি। এর মধ্যেই দেশটি বড় একটি যুদ্ধে জড়িয়েছে। যুদ্ধের সময়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের (বিশেষত জ্বালানি বাণিজ্যের) কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ নৌরুট হরমুজ প্রণালির নিরাপত্তা নিয়ে উৎকণ্ঠায় ছিল ইরান। একই উদ্বেগ ছিল ইরাকের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা শক্তিগুলোরও।

হরমুজের নিরাপত্তায় যুদ্ধজাহাজ

যুদ্ধের সময়ের কয়েকটি ঘটনা জানলে তখনকার সময় আর পরিস্থিতি বোঝাটা সহজ হবে। তখন ইরান যেকোনো মূল্যে পারস্য উপসাগর হয়ে ইরাকের জ্বালানি তেল রপ্তানি বন্ধ করতে বদ্ধপরিকর। এ জন্য জ্বালানিবাহী নৌযানে মাইন পেতে রাখা, রকেট ছুড়ে জ্বালানিবাহী নৌযান ধ্বংস—নিত্যদিন এমন নানা তৎপরতা চলছিল। তেহরানের বিরুদ্ধে ইরাকও একই ধরনের তৎপরতা চালাচ্ছিল।

এর মধ্যে ১৯৮৭ সালের একদিন একটি ইরাকি যুদ্ধবিমান ভুল করে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রিগেট ইউএসএস স্টার্কে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। ইরানের জ্বালানিবাহী ট্যাংকার মনে করায় এই ‘ভুল’ হয়। এতে ৩৭ জন মার্কিন নাবিক নিহত হন। নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে শঙ্কায় পড়ে যায় পশ্চিমারা।

১৯৮৮ সালের ১৪ এপ্রিল পারস্য উপসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রিগেট ইউএসএস স্যামুয়েল বি রবার্টসে মাইন পাতে ইরানিরা। এর ফলে জাহাজটি প্রায় দুই টুকরা হয়ে যায়। এর চার দিন পর প্রতিশোধ হিসেবে ইরানের একটি জাহাজ ডুবিয়ে দেয় মার্কিন নৌবাহিনী।

সাগরে ফ্লাইট ৬৫৫-এর রেপ্লিকা ভাসিয়ে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণ করছেন ইরানিরা
ফাইল ছবি: এএফপি

এই সংকটময় পরিস্থিতিতে হরমুজ প্রণালির পাশে আন্তর্জাতিক জলসীমায় মোতায়েন করা হয় যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস ভিনসেন্স। এর উদ্দেশ্য ছিল দুটি—এক, হরমুজ প্রণালি হয়ে চলাচল করা বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। দুই, ইরাকের সঙ্গে যুদ্ধ চলাকালে তেহরানকে কৌশলগত চাপে রাখা।

এর প্রতিক্রিয়ায় ইরান সরকার হরমুজ প্রণালির নিরাপত্তায় এফ-১৪ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করে সেখান থেকে সবচেয়ে কাছের বিমানবন্দর বন্দর আব্বাসে। কাজেই এই বিমানবন্দর তখন সামরিক ও বেসামরিক—দুই কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল। মার্কিনদের আশঙ্কা ছিল ইরান এফ-১৪ যুদ্ধবিমান থেকে মার্কিন নৌযানে হামলা চালাতে পারে।

‘ভুল’ থেকে ট্র্যাজেডি

ফ্লাইট ৬৫৫ ট্র্যাজেডির আগের দিন ইরানের একটি এফ-১৪ যুদ্ধবিমান মার্কিন নৌযানের কাছাকাছি চলে আসে। পরে ক্রুজার ইউএসএস হেলসি থেকে সতর্ক করা হলে ইরানের যুদ্ধবিমানটি ফিরে যায়।

ইউএসএস ভিনসেন্সের ক্যাপ্টেন রজার্সকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সম্মানজনক ‘লিজিওন অব মেরিট’ পদক দেওয়া হয়েছে। পেশাজীবনে ‘অসামান্য অবদানের’ স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৯০ সালে তাঁকে এই পদক দেওয়া হয়। যদিও তখন ফ্লাইট ৬৫৫ ট্র্যাজেডির কথা কিছুই উল্লেখ করা হয়নি।

যা–ই হোক, ৩ জুলাই সকালে ইউএসএস ভিনসেন্স আরেকটি মার্কিন ফ্রিগেট ইউএসএস মন্টেগোমারির পাশাপাশি থেকে লড়াইয়ে নিয়োজিত ছিল। তখন হরমুজ প্রণালিতে ইরানের গানবোটগুলোর সঙ্গে গোলাগুলি চলছিল। কারণ, ইরানি নৌযানগুলো একটি পাকিস্তানি ট্যাংকারের জন্য হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছিল। যেকোনোভাবে পাকিস্তানি নৌযানটিকে নিরাপদে হরমুজ প্রণালি পার করে দেওয়া ছিল মার্কিন যুদ্ধজাহাজটির উদ্দেশ্য।

ইউএসএস ভিনসেন্সের ক্যাপ্টেন ছিলেন উইলিয়াম সি রজার্স তৃতীয়। মার্কিন নৌবাহিনীর তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সকাল ১০টা ৪৭ মিনিটের পর ক্যাপ্টেন রজার্স একটি বার্তা পান। তাতে বলা হয়, ইরানের ‘অজ্ঞাত’ একটি উড়োজাহাজ ইউএসএস ভিনসেন্সের দিকে এগিয়ে আসছে। ইরানি উড়োজাহাজটিকে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে, কিন্তু সেটি সাড়া দেয়নি।

হরমুজ প্রণালি পার হচ্ছে দুটি তেলের ট্যাংকার। ২১ ডিসেম্বর ২০১৮
ছবি: রয়টার্স

মার্কিন নৌবাহিনীর তদন্তে আরও বলা হয়েছে, ইরানের যাত্রীবাহী উড়োজাহাজটি অনুমোদিত বাণিজ্যিক বিমানপথে ছিল। নিচে হরমুজ প্রণালিতে সংঘাতের বিষয়ে উড়োজাহাজটিকে আগাম সতর্ক করা হয়নি। এমনকি রাডারে শনাক্ত হওয়ার পর মার্কিন যুদ্ধজাহাজ থেকে সতর্কবার্তা পাঠানো হলেও ইরানি উড়োজাহাজের পাইলট সাড়া দেননি।

এই পরিস্থিতিতে ক্যাপ্টেন রজার্স মনে করেন, ইরানিরা হয়তো মার্কিন যুদ্ধজাহাজে হামলার জন্য এফ-১৪ যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে। তিনি ‘বিপদ বুঝে’ অতিদ্রুত প্রতিরোধের সিদ্ধান্ত নেন। মার্কিন যুদ্ধজাহাজটি থেকে পরপর দুটি ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র উড়ে যায়। এর একটির আঘাতে আকাশেই ভেঙে টুকরা টুকরা হয়ে যায় ইরানের যাত্রীবাহী উড়োজাহাজটি।

পরবর্তী সময় তদন্ত প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী বলে এটা একটি ‘মর্মান্তিক ও দুঃখজনক দুর্ঘটনা’ ছিল। এর সবই হয়েছিল সকাল ১০টা ৪৭ মিনিট থেকে ১০টা ৫৪ মিনিট, অর্থাৎ মাত্র ৭ মিনিটের মধ্যে।

ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, এ ঘটনা আন্তর্জাতিক জলসীমায় ঘটেছে। যদিও পরে সেটা ভুল প্রমাণিত হয়। উড়োজাহাজটি ইরানের আকাশসীমায় থাকা অবস্থাতে হামলার শিকার হয়েছিল। বলা হয়, অনুমোদিত বাণিজ্যিক বিমানপথে উড়োজাহাজটি নির্ধারিত গতির চেয়ে ধীরে আসার কারণে এই ‘ভুল’ হয়েছে।

আন্তর্জাতিক আদালতে ইরান

ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে উড়োজাহাজ ধ্বংস এবং ২৯০ আরোহীকে ‘হত্যার’ অভিযোগ এনে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যায় ইরান। দেশটি ১৯৮৯ সালের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনে।

শুরু হয় বিচারকাজ, তবে বিচার শেষ হয়নি, বরং সমঝোতার ভিত্তিতে এই মর্মান্তিক ইতিহাসের ইতি টানা হয়েছিল। ১৯৯৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান সমঝোতায় পৌঁছায়। উড়োজাহাজ ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ বাবদ ইরানকে প্রায় ৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার দেয় ওয়াশিংটন। আর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই ঘটনায় ‘গভীর সহানুভূতি’ জানানো হয়।

আরও পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই সমঝোতার জেরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত থেকে অভিযোগ তুলে নেয় ইরান। এই ঘটনায় ব্যাপক আলোচনা–সমালোচনা হয়। ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবার থেকে শুরু করে দেশি–বিদেশি অধিকারকর্মী—অনেকেই নিন্দা জানান।

সরব হয়েছিলেন রুহানি

সময়টা ২০১৯ সাল। ইরানে তখন ক্ষমতায় প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। ফ্লাইট ৬৫৫ ট্র্যাজেডির বর্ষপূর্তির সময় মন্ত্রিসভার বৈঠকে রুহানি চাপা পড়া বিষয়টি নতুন করে সামনে আনেন। তোপ দাগেন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। ওই সময় বন্দর আব্বাস বিমানবন্দরের নতুন নাম রাখা হয় ‘ফ্লাইট ৬৫৫ শহীদ বিমানবন্দর’।

ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি
ফাইল ছবি: রয়টার্স

মন্ত্রিসভার বৈঠকে রুহানি বলেছিলেন, এটা কেউ বিশ্বাস করবে না যে এয়ারবাসের মতো বড়সড় একটি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজকে যুদ্ধবিমান ভেবে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ভুল করবে। আর যদি ভুল করেও থাকে, তাহলে কি এফ-১৪–কে হামলা করে বসবে? এফ-১৪ কোনো বোমারু বিমান নয়। এটি শুধু বাধা দেওয়ার কাজে আর ডগফাইটে ব্যবহৃত হয়। এতে আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র থাকে না।

আরও পড়ুন

ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট রুহানি ওয়াশিংটনের সমালোচনা করে বলেছিলেন, ‘এমন ভুল গ্রহণযোগ্য নয়।’ ক্ষমা চাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ওরা (মার্কিনরা) এ জন্য ইরানি জাতির কাছে আজও ক্ষমা চায়নি। যুদ্ধজাহাজের ক্যাপ্টেনকে শাস্তি দেয়নি, বরং পুরস্কৃত করেছে। মার্কিনরা ঠান্ডামাথায় বড় অপরাধ করেছে।’

ইউএসএস ভিনসেন্সের ক্যাপ্টেন রজার্সকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সম্মানজনক ‘লিজিওন অব মেরিট’ পদক দেওয়া হয়েছে। পেশাজীবনে ‘অসামান্য অবদানের’ স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৯০ সালে তাঁকে এই পদক দেওয়া হয়। যদিও তখন ফ্লাইট ৬৫৫ ট্র্যাজেডির কথা কিছুই উল্লেখ করা হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বারবার ফ্লাইট ৬৫৫ ট্র্যাজেডিকে ‘ভুল’ বলা হয়েছে। ক্ষমা না চাইলেও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ‘সহানুভূতি’ জানানো হয়েছে। উল্টোদিকে ইরানিদের কাছে নিহত ২৯০ জন শহীদের মর্যাদা পেয়েছেন। ইরানের জনগণ ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর কাছে ৩ জুলাই শোক আর বেদনার দিন। ৩৭ বছর পর আজও তাঁরা শোকের মধ্যে সান্ত্বনা খুঁজছেন।

তথ্যসূত্র: সিএনএন, ইরান ফ্রন্ট পেজ নিউজ ও ব্রিটানিকা।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন