যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ের বাস্তবায়নে রাজি হামাস–ইসরায়েল, জানালেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পফাইল ছবি: রয়টার্স

গাজায় যুদ্ধ বন্ধ ও জিম্মি মুক্তি-সংক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ের বাস্তবায়নে একমত হয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও ইসরায়েল। ট্রাম্প নিজেই এ তথ্য জানিয়েছেন।

গতকাল বুধবার নিজের ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ‘আমি অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে ইসরায়েল ও হামাস—উভয়ই আমাদের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ে সই করেছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আরও লেখেন, ‘খুব শিগগির সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে ইসরায়েল নিজেদের সেনাদের নির্ধারণ করা একটি সীমানায় সরিয়ে আনবে।’

বলা হয়েছে, হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার সমঝোতার বিষয়ে মধ্যস্থতাকারী কাতার পরে আরও বিস্তারিত জানাবে।

এ ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, মিসরে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চলা যুদ্ধবিরতি আলোচনায় আলোচকেরা একটি চূড়ান্ত চুক্তির ‘খুব কাছাকাছি’ পৌঁছে গেছেন। চুক্তি হলে সেটার ঘোষণা দেওয়ার জন্য মিসরে যাবেন তিনি।

এরপর হোয়াইট হাউস জানায়, ওয়াশিংটনের ওয়াল্টার রিড মেডিকেল সেন্টারে আগামীকাল শুক্রবার সকালে পূর্বনির্ধারিত বার্ষিক স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অংশ নেবেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এরপর তিনি মিসরে যেতে পারেন। সেটা আগামী শনি কিংবা রোববার নাগাদ হতে পারে।

যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় দুই পক্ষের সম্মত হওয়ার পর ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তাঁর দপ্তরের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, এটা ‘ইসরায়েলের জন্য একটি দারুণ দিন।’

আজ বৃহস্পতিবার দেশটির মন্ত্রিসভা এ পরিকল্পনার অনুমোদন দিতে পারে। সেই সঙ্গে নেতানিয়াহু নেসেটে (ইসরায়েলের পার্লামেন্ট) ভাষণ দিতে ট্রাম্পকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। 

আরও পড়ুন

গত মাসে ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা নিয়ে ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। ইসরায়েল ও হামাস দুই পক্ষই ট্রাম্পের পরিকল্পনায় ইতিবাচক সাড়া দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার মিসরের পর্যটন শহর শারম আল শেখে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়।

চলমান আলোচনায় কাতার, তুরস্ক, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নিয়েছেন। মধ্যস্থতাকারীরা ট্রাম্পের ২০ দফা যাতে দুই পক্ষ মেনে নেয়, সে জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান এবং উপত্যকাটিতে হামাসের হাতে থাকা ৪৮ জন জিম্মিকে (জীবিত ও মৃত) মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি রয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২০ জন জীবিত আছেন বলে মনে করা হচ্ছে। বিপরীতে ইসরায়েলের কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দীদের অনেককেই মুক্তি দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন

 ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এ ঘটনায় ১ হাজার ২১৯ জন নিহত হন। জিম্মি করা হয় ২৫১ জনকে। তাঁদের মধ্যে ৪৭ জন এখনো জিম্মি। এর মধ্যে ২৫ জন আর বেঁচে নেই বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।

ওই দিন থেকেই গাজায় টানা নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। হামাসনিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য, গত দুই বছরে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় অন্তত ৬৭ হাজার ১৭৩ জন নিহত হন। তাঁদের মধ্যে ২০ হাজার ১৭৯টি শিশু।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন