গাজায় সংঘাত বন্ধে নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব, যুক্তরাষ্ট্রের ‘ভেটো’

জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস গ্রিনফিল্ড। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে, ১৮ অক্টোবর
ছবি: এএফপি

ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান সংঘাত বন্ধের লক্ষ্যে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে উপস্থাপিত একটি প্রস্তাবে ‘ভেটো’ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অবরুদ্ধ গাজায় ত্রাণসহায়তা পৌঁছানোর লক্ষ্যে মানবিক দিক বিবেচনায় সাময়িক সময়ের জন্য সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানাতে গতকাল বুধবার এ প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়েছিল।

ইসরায়েল ও গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাসের মধ্যে চলমান সংঘাত বন্ধে ব্রাজিল প্রস্তাবটি উপস্থাপন করলেও দুবার এ নিয়ে ভোটাভুটি পেছায়। অবশেষ বুধবারের ভোটাভুটিতে ১২টি দেশ এর পক্ষে এবং যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দেয়। আর রাশিয়া ও যুক্তরাজ্য ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল।

ভোটাভুটি হওয়ার পর ১৫ সদস্যরাষ্ট্র নিয়ে গঠিত নিরাপত্তা পরিষদকে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস গ্রিনফিল্ড বলেন, ‘মাঠপর্যায়ে আমরা কূটনীতির মতো কঠিন প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা মনে করি (গাজায় চলমান সংঘাত নিয়ে) কূটনীতিকে অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন।’

যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের মিত্রদেশ হওয়ায় প্রথাগতভাবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ইসরায়েল–সম্পর্কিত কোনো পদক্ষেপ নিতে উদ্যত হলেই তেল আবিবের রক্ষাকবচ হয়ে দাঁড়ায় ওয়াশিংটন।

এদিকে গাজায় সংঘাত বন্ধে নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর কঠোর সমালোচনা করেছে রাশিয়া। জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, ‘আমরা আরও একবার আমাদের আমেরিকান সহকর্মীদের ভণ্ডামি এবং দ্বিমুখী আচরণের চাক্ষুষ সাক্ষী হলাম।’

উল্লেখ্য, গাজায় মানবিক ত্রাণসহায়তা পৌঁছানোর লক্ষ্যে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাতে রাশিয়াও এর আগে নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব তোলে। তবে গত সোমবার সেই প্রস্তাব পাসে ব্যর্থ হয় দেশটি।

রাশিয়া জানিয়েছে, গাজা সংঘাত নিয়ে ১৯৩ সদস্যের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে একটি জরুরি অধিবেশন ডাকার বিষয়ে আহ্বান জানাবে তারা। জরুরি অধিবেশন থেকে একটি খসড়া প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি হবে। তবে সেখানে কোনো দেশের ভেটো দেওয়ার ক্ষমতা নেই। যদিও সাধারণ পরিষদের প্রস্তাব মেনে চলা বাধ্যবাধকতা নেই, তবে সেটির একধরনের রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে।

এদিকে বুধবার নিরাপত্তা পরিষদে উপস্থাপিত প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে দ্বিমুখী আচরণের অভিযোগ তুলেছে চীন। জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জুন বলেছেন, প্রস্তাব উপস্থাপনের আগে আলোচনার সময় যুক্তরাষ্ট্র এর বিপক্ষে কিছু না বলায় পরিষদের সদস্যদের ধারণা হয়েছিল প্রস্তাবটি সম্ভবত গৃহীত হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে পরে তাতে ভেটো দিয়েছে।