সৌদি আরব কি আদৌ পারমাণবিক অস্ত্র পাবে, কেন এতটা মরিয়া তারা

সৌদি আরব ও পাকিস্তানের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরের পর দুই দেশের নেতারা। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, রিয়াদছবি: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়

সৌদি আরব কি পারমাণবিক অস্ত্র বানাতে চাচ্ছে? গত সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানের সঙ্গে ‘কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি’ (এসএমডিএ) সইয়ের পর এই প্রশ্ন বারবার ঘুরেফিরে সামনে আসছে।

বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এ চুক্তির ফলে রিয়াদের অর্থনৈতিক শক্তি ও ইসলামাবাদের পারমাণবিক ক্ষমতার মধ্যে মেলবন্ধন হয়েছে। এর অর্থ হলো, চুক্তির ফলে ইসলামাবাদকে বিভিন্নভাবে অর্থসহায়তা দেবে রিয়াদ। বিনিময়ে প্রয়োজনীয় পারমাণবিক সহযোগিতা নিয়ে রিয়াদের পাশে দাঁড়াবে ইসলামাবাদ।

পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি কিংবা কর্মসূচি চালুর চেষ্টা সৌদি আরবের জন্য এবারই প্রথম নয়। এর আগেও দেশটি চীন ও রাশিয়ার সহযোগিতায় পারমাণবিক কর্মসূচি চালু করতে চেয়েছিল। কিন্তু তা সফল হয়নি। পাকিস্তানের সঙ্গে করা চুক্তির ফল সৌদির আকাঙ্ক্ষা পূরণ হচ্ছে বলে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন।

নতুন চুক্তির অধীনে পাকিস্তানের পারমাণবিক সক্ষমতা (অস্ত্র ও প্রযুক্তি সহায়তা) সৌদি আরবকে দেওয়া হতে পারে
খাজা আসিফ, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী

সৌদি আরব কেন হঠাৎ পারমাণবিক অস্ত্র বানাতে এত মরিয়া হয়ে উঠছে, সেই প্রশ্ন ঘুরেফিরে সামনে আসছে। এর পেছনে বেশ কিছু কারণ আছে বলে মনে করা হচ্ছে।

অর্থনৈতিক কারণ

সৌদি আরব বিশ্বের বৃহত্তম জ্বালানি তেল রপ্তানিকারক দেশ। দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান কার্বন নিঃসরণ কমাতে চান। একই সঙ্গে রপ্তানির জন্য অপরিশোধিত তেল ভবিষ্যতের জন্য মজুত করতে চান। এ জন্য দেশটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দিকে নজর দিচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের গত বছরের তথ্য অনুযায়ী, সৌদি আরবের ৬৮ শতাংশ বিদ্যুৎ গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আসে। অবশিষ্ট ৩২ শতাংশ বিদ্যুৎ আসে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে। প্রতিবছরের জুনে দেশটিতে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা থাকে। এ সময় দৈনিক ১৪ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল ব্যবহৃত হয় বিদ্যুৎ উৎপাদনে।

চুক্তি স্বাক্ষর শেষে আলিঙ্গন করছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছবি: রয়টার্স

জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে দীর্ঘদিন ধরে বেসামরিক ব্যবহারের জন্য পারমাণবিক প্রযুক্তি অর্জনে আগ্রহ প্রকাশ করেছে সৌদি আরব। গত জানুয়ারিতে দেশটির জ্বালানিমন্ত্রী প্রিন্স আবদুল আজিজ বিন সালমান আল সৌদের বক্তব্যেও এর ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। তিনি বলেন, তাঁরা পারমাণবিক কর্মসূচির মূল উপাদান ইউরেনিয়ামসমৃদ্ধ ও বিক্রি করতে প্রস্তুত।

পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কিছুটা কমতে পারে। এ ছাড়া দেশটির লোনাপানি বিশুদ্ধ করতে ও শীতাতপনিয়ন্ত্রণের পেছনেও প্রচুর বিদ্যুৎ খরচ হয়। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিকল্প জ্বালানি পাওয়া যাবে।

সৌদি–পাকিস্তান ঐতিহাসিক সম্পর্ক ঝালাই করা

দীর্ঘদিনের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ধারাবাহিকতা থেকে সৌদি আরব ও পাকিস্তানের মধ্যে এসএমডিএ চুক্তি করা হয়েছে। শুরুটা হয়েছিল ১৯৫১ সালে স্বাক্ষরিত ‘মৈত্রী চুক্তি’ থেকে। ওই চুক্তি দশকের পর দশক দুই দেশের কৌশলগত, রাজনৈতিক, সামরিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার ভিত্তি স্থাপন করেছিল।

পরে ১৯৮২ সালে আরেকটি চুক্তি হয় দুই দেশের মধ্যে। নতুন কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি কয়েক দশকের পুরোনো ও শক্তিশালী প্রতিরক্ষা অংশীদারত্বকে আনুষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে।

সৌদি আরবের ৬৮ শতাংশ বিদ্যুৎ গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আসে। অবশিষ্ট ৩২ শতাংশ বিদ্যুৎ আসে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে।

সৌদি–পাকিস্তান সম্পর্ক নিয়ে দুই দেশেই ইতিবাচক। সৌদি আরব ইসলামি বিশ্বের নেতা। পাশাপাশি তারা একটি বড় অর্থনৈতিক শক্তি। ইসলামাবাদের সবচেয়ে বড় বিদেশি অর্থায়নকারী দেশ সৌদি আরব।

বিগত বছরগুলোতে পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনী বেশ কয়েকবার সৌদি আরবে মোতায়েন করা হয়েছে। তারা উপসাগরীয় অঞ্চল ও পাকিস্তানে সৌদি সেনাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

পাকিস্তান অর্থনৈতিকভাবে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে তুলনামূলকভাবে দুর্বল। কিন্তু সারা বিশ্বে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর মধ্যে পাকিস্তানই একমাত্র দেশ, যার পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে।

বিশ্বের অন্যতম বড় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের। সেনাবাহিনীতে ছয় লাখের বেশি সদস্য আছেন। চুক্তির ফলে পাকিস্তান সৌদি আরবকে নিরাপত্তাসহায়তা দেবে—এটা নিশ্চিত। সৌদিতে দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানের অল্পসংখ্যক সেনা অবস্থান করছেন। নতুন চুক্তি আরও বড় ধরনের সম্পৃক্ততার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

পাকিস্তানের জাতীয় দিবস উপলক্ষে ইসলামাবাদে আয়োজিত সামরিক কুচকাওয়াজে দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র শাহিন-৩ প্রদর্শন করা হয়। ২৫ মার্চ, ২০২১
ছবি: এএফপি

সৌদি আরবভিত্তিক গালফ রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান আবদুল আজিজ সাগেরের মতে, চুক্তিতে পারমাণবিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো সময় এখনো হয়নি। তবে শুধু মার্কিন নিরাপত্তার ওপর ভরসা করা উচিত নয়। কারণ, এটারও সীমাবদ্ধতা আছে। সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ থেকে তা পরিষ্কার হয়ে গেছে।

চুক্তি অনুযায়ী, কোনো একটি দেশ আক্রান্ত হলে সেটাকে দুই দেশের ওপর ‘আগ্রাসন’ হিসেবে দেখবে রিয়াদ ও ইসলামাবাদ।

ইরান ও ইসরায়েলকে ঠেকানো

দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সহযোগিতা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। পাকিস্তানের সঙ্গে সৌদি আরবের পারমাণবিক কর্মসূচি–সংক্রান্ত চুক্তির কারণে তাদের অবস্থান নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে—এমনটা ভাবার সুযোগ নেই।

ওয়াশিংটন এখনো সৌদি আরবের প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ। রিয়াদ ও ওয়াশিংটনের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার সম্পর্ক অত্যন্ত মজবুত। প্রতিরক্ষা খাতে যৌথ উদ্যোগ থেকে প্রশিক্ষণ—সব মিলিয়ে সৌদির পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প খুঁজে পাওয়া দুরূহ ব্যাপার।

তবে উপসাগরীয় দেশগুলোতে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুত নিরাপত্তায় কিছুটা ঘাটতির কারণে সৌদি আরবের বিকল্প প্রতিরক্ষা সহযোগী জরুরি হয়ে উঠেছে।

সৌদি আরবের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, পারমাণবিক শক্তিধর ইসরায়েলের তুলনায় কৌশলগত ও প্রচলিত সক্ষমতায় পিছিয়ে থাকা দেশটি এ চুক্তির মধ্য দিয়ে শূন্যতা পূরণের চেষ্টা করছে
হাসান আল হাসান, জ্যেষ্ঠ ফেলো, ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও কাতারে দুই দফায় হামলা ঠেকানো যায়নি। গত জুনে ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের ১২ দিনব্যপী যুদ্ধ হয়। ওই সময় কাতারে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। তবে এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

এর তিন মাস পর কাতারের রাজধানী দোহার একটি অভিজাত এলাকায় একটি ভবনে হামলা চালায় ইসরায়েল। সেখানে দূতাবাস, বিপণিবিতান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এতে অন্তত পাঁচজন হামাস সদস্য এবং একজন কাতারি নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিহত হন।

আরও পড়ুন

দোহায় এ হামলার পর আরব ও ইসলামিক দেশগুলোর একটি জরুরি বৈঠক ডাকা হয়। উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদভুক্ত (জিসিসি) দেশ—বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, কাতার, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত বৈঠকে যোগ দেয়। তারা একটি যৌথ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সক্রিয় করবে বলেও ঘোষণা দেয়।

এসব ঘটনা উপসাগরীয় দেশগুলোর নিরাপত্তা উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তাব্যবস্থার ওপর তাদের আস্থা কমিয়ে দিয়েছে। উপসাগরীয় দেশগুলো যখন তাদের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করতে চাইছে, তখন পাকিস্তান, মিসর ও তুরস্কের মতো দেশ স্বাভাবিকভাবেই তাদের অংশীদার হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে।

২০২৩ সালে গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা শুরুর পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সামরিক তৎপরতা আরও জোরদার করে ইসরায়েল। দেশটির এমন কার্যক্রমে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবিচল সমর্থন প্রকাশ করায় এমন মনোভাবকে হুমকি হিসেবে মনে করছে সৌদি আরব।

দোহায় ইসরায়েলের হামলার পর আকাশে ধোঁয়া উড়তে দেখা যাচ্ছে। ইসরায়েলের একজন সামরিক কর্মকর্তা জানান, তাঁদের এ বিমান হামলা হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতাদের লক্ষ্য করা চালানো হয়েছে। ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছবি: এএফপি

এ ছাড়া দীর্ঘদিন থেকেই সৌদি আরব বলে আসছে, তাদের চিরশত্রু ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করলে তারাও একই পথে হাঁটবে। তবে এটা স্পষ্ট, তেহরানের ওপর চাপ বাড়াতেই সৌদি এ হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

লন্ডনের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (আইআইএসএস) মধ্যপ্রাচ্য নীতিবিষয়ক জ্যেষ্ঠ ফেলো হাসান আল–হাসান বলেছেন, সৌদি আরবের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, পারমাণবিক শক্তিধর ইসরায়েলের তুলনায় কৌশলগত ও প্রচলিত সক্ষমতায় পিছিয়ে থাকা দেশটি এ চুক্তির মধ্য দিয়ে শূন্যতা পূরণের চেষ্টা করছে।

আরও পড়ুন

ইয়েমেনে হুতিদের নিয়ন্ত্রণে রাখা

উপসাগরীয় অঞ্চলের স্থিতিশীল নিরাপত্তার বিষয়টিও সৌদি আরবের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৫ সালে ইরান–সমর্থিত হুতিরা ইয়েমেনের ক্ষমতায় আসে। সৌদি আরব তখন থেকেই সন্দেহ করতে শুরু করে, আঞ্চলিক নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা কত দিন টিকবে। সৌদির সেই সন্দেহ কিছুটা সত্য প্রমাণিত হয় ২০১৯-২০২২ সালের মধ্যে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনায়। এ সময় সৌদি আরবে আঘাত করতে পারে, এমন  ড্রোন ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির ঘোষণা দেয় হুতিরা। ফলে তারাও সৌদির নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।

এর মধ্যে ২০১৯ সালে সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি সৌদি আরামকোর তেল স্থাপনায় হামলা হয়। শোনা যায়, ইরান ওই হামলা চালিয়েছিল। কিন্তু হুতিরা ওই হামলার দায়ভার স্বীকার করে। ধারণা করা হয়, তেহরানের ভূমিকা ঢাকতেই তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ওই ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নিরাপত্তাব্যবস্থার ওপর সৌদির আস্থা কমে যায়।

চুক্তি অনুযায়ী, কোনো একটি দেশ আক্রান্ত হলে সেটাকে দুই দেশের ওপর ‘আগ্রাসন’ হিসেবে দেখবে রিয়াদ ও ইসলামাবাদ।

২০১৫ সালে হুতিদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গঠিত আরব জোটে পাকিস্তানকে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল সৌদি আরব। কিন্তু ইসলামাবাদ তখন ওই জোটে যেতে রাজি হয়নি। এর ১০ বছর পর গত সেপ্টেম্বরে সৌদি আরব ও পাকিস্তানের নৌবাহিনী সহযোগিতা জোরদার করে। প্রশিক্ষণ ও প্রতিরক্ষা সমন্বয়ের ওপর জোর দেওয়া হয়।

হুতিদের বহুমাত্রিক হুমকি এখনো সক্রিয়। এ কারণে ইসলামাবাদের সঙ্গে সৌদি পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে লোহিত সাগর পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলে ইরানপন্থী হামলাকে প্রতিহত করার ক্ষেত্রেও কাজে লাগতে পারে।

আরও পড়ুন

চুক্তি নিয়ে পাকিস্তানের বক্তব্য

রিয়াদ-ইসলামাবাদের নতুন প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য চুক্তির পারমাণবিক দিক নিয়ে জল্পনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

গত সেপ্টেম্বরে খাজা আসিফ ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, নতুন চুক্তির অধীনে পাকিস্তানের পারমাণবিক সক্ষমতা (অস্ত্র ও প্রযুক্তিসহায়তা) সৌদি আরবকে দেওয়া হতে পারে। তাঁর ভাষায়, ‘আমাদের যা আছে এবং যে সক্ষমতা আমরা আয়ত্ত করেছি, তা এই চুক্তির অধীনে (সৌদি আরবকে) দেওয়া হবে।’

ইয়েমেনের রাজধানী সানায় গাড়িতে হুতি বিদ্রোহীরা
ফাইল ছবি: রয়টার্স

তবে খাজা আসিফ জোর দিয়ে বলেন, পাকিস্তান সব সময় একটি দায়িত্বশীল পারমাণবিক দেশ হিসেবে কাজ করেছে।

পরে রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, পারমাণবিক অস্ত্র এই চুক্তির অংশ নয়। তাঁর ভাষায়, এ চুক্তির ‘আওতায়’ পারমাণবিক অস্ত্র নেই।

আরও পড়ুন

সৌদি আরব যা বলছে

চুক্তির মধ্য দিয়ে রিয়াদ পাকিস্তানের পারমাণবিক সহায়তা পেতে যাচ্ছে, এ ধারণা প্রথম প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছিলেন সৌদি আরবের এক কর্মকর্তা।

চুক্তি স্বাক্ষরের পরপরই ওই কর্মকর্তা একটি পশ্চিমা সংবাদ সংস্থাকে ইঙ্গিতে বলেছিলেন, চুক্তির অধীনে রিয়াদ পারমাণবিক সুরক্ষা পাবে। পরবর্তী সময়ে সৌদি ভাষ্যকাররা দাবিটি আরও শক্তিশালী করেন।

সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সির (এসপিএ) ভাষ্য, এই চুক্তি উভয় দেশের নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং আঞ্চলিক ও বিশ্বে শান্তি অর্জনের যৌথ অঙ্গীকারকে প্রতিফলিত করে। এর লক্ষ্য হলো দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বৃদ্ধি করা এবং যেকোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিরোধব্যবস্থা জোরদার করা।

তথ্যসূত্র: রয়টার্স, মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউট, আটলান্টিক কাউন্সিল, আল–জাজিরা ও  বিবিসি

আরও পড়ুন