যুদ্ধোত্তর গাজা নিয়ে পরিকল্পনা প্রকাশ ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টছবি: রয়টার্স

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট যুদ্ধ–পরবর্তী গাজা প্রশাসন নিয়ে তাঁর পরিকল্পনা গতকাল বৃহস্পতিবার উপস্থাপন করেছেন। তিনি বলেছেন, যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর হামাস বা ইসরায়েল কেউই এই ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড (গাজা) শাসন করবে না।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভায় জমা দেওয়ার আগে গ্যালান্ট তাঁর পরিকল্পনার একটি রূপরেখা সংবাদমাধ্যমের কাছে তুলে ধরেন।

গাজার শাসক হামাসকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর উপত্যকাটির ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে খোদ ইসরায়েলেই মতবিরোধ দেখা গেছে।

আরও পড়ুন

২০০৭ সাল থেকে গাজা শাসন করে আসছে হামাস। গত ৭ অক্টোবরের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে হামাসকে ক্ষমতাচ্যুত ও ধ্বংস করার কথা বলে আসছে ইসরায়েল।

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায়। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের ভাষ্যমতে, এ হামলায় প্রায় ১ হাজার ১৪০ জন নিহত হন। সেদিন প্রায় ২৪০ জনকে ইসরায়েল থেকে ধরে গাজায় নিয়ে জিম্মি করে হামাস।

জবাবে ৭ অক্টোবর থেকেই অবরুদ্ধ গাজায় নির্বিচারে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গাজায় ইসরায়েলি হামলার ৯০তম দিন ছিল গতকাল বৃহস্পতিবার। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ২২ হাজার ৪০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্টের পরিকল্পনা অনুযায়ী, জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা, হামাসের সামরিক ও শাসনক্ষমতা ভেঙে ফেলা, অবশিষ্ট যেকোনো সামরিক হুমকি অপসারণ না করা পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ চলবে।

আরও পড়ুন

গ্যালান্টের পরিকল্পনার রূপরেখায় বলা হয়, এরপর একটি নতুন পর্যায় শুরু হবে। এ পর্যায়ে হামাস আর গাজা নিয়ন্ত্রণ করবে না। তারা ইসরায়েলের নাগরিকদের জন্য নিরাপত্তা হুমকিরও কারণ হবে না। তখন স্থানীয় ফিলিস্তিনি সংস্থাগুলো গাজার শাসনভার গ্রহণ করবে।

পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, গাজার অভ্যন্তরে তৎপরতা চালানোর অধিকার ইসরায়েলের থাকবে। তবে চলমান যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জিত হওয়ার পর গাজা উপত্যকায় কোনো বেসামরিক ইসরায়েলির উপস্থিতি থাকবে না।

যুদ্ধের পর গাজা ভূখণ্ডে ফিরে যাওয়ার জন্য ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের প্রতি গত সোমবার আহ্বান জানান ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী ইতামার বেন-গ্যভির। গাজার ফিলিস্তিনিদের উপত্যকাটি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে উৎসাহিত করার মধ্যে সমাধান দেখেন তিনি। ইতামার মতো একই ধরনের কথা বলেন ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোতরিচ।

আরও পড়ুন

ইসরায়েলি দুই মন্ত্রীর এমন আহ্বানের নিন্দা জানায় আরব রাষ্ট্রগুলো। ইসরায়েলের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্রও এ আহ্বানের নিন্দা জানায়।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্টের পরিকল্পনার রূপরেখায় বলা হয়, গাজার বাসিন্দারা ফিলিস্তিনি। তাই ফিলিস্তিনি সংস্থাগুলোই গাজার দায়িত্বে থাকবে। তবে শর্ত থাকবে, ইসরায়েল রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোনো শত্রুতামূলক পদক্ষেপ বা হুমকি থাকবে না।

গাজায় বিদ্যমান প্রশাসনিক ব্যবস্থার (সিভিল কমিটি) সক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে উপত্যকাটির ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে গড়ে তোলা হবে বলে রূপরেখায় উল্লেখ করা হয়।

একটি পুনরুজ্জীবিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে গাজা শাসনের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র। বর্তমানে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের হাতে অধিকৃত পশ্চিম তীরের শাসনভার রয়েছে।

আরও পড়ুন