২০ বছর কোমায় থাকা সৌদি প্রিন্সের মৃত্যু
প্রায় ২০ বছর কোমায় থাকার পর সৌদি আরবের প্রিন্স আল-ওয়ালিদ বিন খালেদ বিন তালাল মারা গেছেন। গতকাল শনিবার এ তথ্য জানিয়েছেন তাঁর বাবা প্রিন্স খালেদ বিন তালাল।
২০০৫ সালে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে গাড়ি দুর্ঘটনায় আহত হন প্রিন্স আল-ওয়ালিদ। দুর্ঘটনায় তাঁর মস্তিষ্কে গুরুতর আঘাত ও অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হয়। তখন তাঁর বয়স ছিল ১৫। তিনি লন্ডনে সামরিক ক্যাডেট হিসেবে পড়াশোনা করছিলেন।
আল-ওয়ালিদ দুর্ঘটনার পর থেকেই হাসপাতালে কোমায় ছিলেন। এ কারণে ‘দ্য স্লিপিং প্রিন্স’ বা ‘ঘুমন্ত রাজকুমার’ নামেও পরিচিত ছিলেন সৌদি রাজপরিবারের এই সদস্য।
পাঁচ বছর আগে আল-ওয়ালিদের পরিবারের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, কোমায় থাকা অবস্থায় তিনি আঙুল নাড়াচ্ছেন। এ থেকে তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে আশা করা হচ্ছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও স্পেনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দীর্ঘ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তাঁর শারীরিক অবস্থার বিশেষ কোনো উন্নতি হয়নি।
প্রিন্স খালেদ বিন তালাল জানিয়েছেন, আজ রোববার বাদ আসর রাজধানী রিয়াদে ইমাম তুর্কি বিন আবদুল্লাহ মসজিদে আল-ওয়ালিদের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শ্রদ্ধা
গালফ নিউজ জানায়, সৌদি আরবের একটি বিশেষায়িত চিকিৎসাকেন্দ্রে প্রিন্স আল-ওয়ালিদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্লিপিং প্রিন্স হ্যাশট্যাগটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ধৈর্য, বিশ্বাস ও মা-বাবার অনন্য ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে হাজারো মানুষ আল-ওয়ালিদের মৃত্যুকে স্মরণ করছেন।
আল-ওয়ালিদের বাবা প্রিন্স খালেদ বিন তালালের পুত্রস্নেহের ব্যতিক্রমী এই গল্প মানুষের হৃদয়ে গভীরভাবে রেখাপাত করেছে। একজন বাবা বছরের পর বছর ছেলের পাশে বসে আছেন, কখনো মমতাভরে স্পর্শ করছেন বা দোয়া করছেন—এই দৃশ্য বহু মানুষের মধ্যে আলোড়ন তৈরি করেছিল।