যুদ্ধ অনন্তকাল চলতে পারে না, দ্বিরাষ্ট্রিক সমাধানের বিকল্প নেই : সি চিন পিং

সামনের সারি, বাঁ থেকে) চীনের পলিটব্যুরোর স্থায়ী কমিটির সদস্য কাই কুই, বাহরাইনের রাজা হামাদ বিন ইসা আল খলিফা, মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান, তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদ এবং চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। বেইজিংয়ের দিয়াওইউতাই স্টেট গেস্টহাউসে চীন-আরব দেশগুলোর সহযোগিতা ফোরামে। ৩০ মে, ২০২৪ছবি : রয়টার্স

গাজায় ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধ সম্পর্কে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেছেন, যুদ্ধ অনন্তকাল চলতে পারে না। ন্যায়বিচার চিরদিনের জন্য অনুপস্থিত থাকতে পারে না। দ্বিরাষ্ট্রিক সমাধানের পথেই আমাদের দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যেতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে চায়না-আরব স্টেটস কোঅপারেশন ফোরামের (সিএএসসিএফ) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় সি চিন পিং এসব কথা বলেন।

সি বলেন, অশান্ত বিশ্বে পারস্পরিক শ্রদ্ধা–সম্প্রীতিতে বসবাসের উপায়। ন্যায়পরায়ণতা ও সুবিচার দীর্ঘস্থায়ী নিরাপত্তার ভিত্তি।

সিএএসসিএফের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাহরাইন, মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ও তিউনিসিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান এবং আরব লীগের অন্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা অংশ নেন।

গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকট সমাধানে দুই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে বেইজিং। একই সঙ্গে শিগগির যুদ্ধবিরতি এবং ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের সদস্য করারও আহ্বান জানাচ্ছে দেশটি। আরব দেশগুলো চীনের এসব আহ্বানের সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত।

চীন মধ্যপ্রাচ্যে নিজের কূটনৈতিক প্রভাব ক্রমেই বাড়াচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে চীনের মাটিতে গত এপ্রিলে ফিলিস্তিনের দীর্ঘদিনের শত্রু হামাস ও ফাতাহের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে প্রথমবারের মতো একটি বৈঠকের আয়োজন করে দেশটি। দীর্ঘ কয়েক বছরের বৈরী সম্পর্ক শেষে গত বছর চীনের মধ্যস্থতায় কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে ইরান ও সৌদি আরব।

এদিকে চলমান গাজা–সংকট মধ্যপ্রাচ্যকে বড় ধরনের সংঘাতে ঠেলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ করে ইসরায়েল ও ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলার পর এই ধরনের শঙ্কা আরও বেড়েছে।

এমন একটা পরিস্থিতিতে গাজায় মানবিক সহায়তা ও যুদ্ধ–পরবর্তী গাজা পুনর্গঠন কার্যক্রমে অংশগ্রহণের কথা জানিয়েছেন সি। আজকের বক্তৃতায় গাজায় জরুরি ভিত্তিতে আরও ৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। তা ছাড়া জাতিসংঘের কাছে প্রাচ্যে ফিলিস্তিন শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ ও কাজবিষয়ক সংস্থায় (ইউএনআরডব্লিউএ) ৩০ লাখ ডলার দেবে বেইজিং।

এসব ঘোষণার পাশাপাশি আরব দেশগুলোর সঙ্গে তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রসহ নানা খাতে সহযোগিতা আরও বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন সি। এসব দেশে বড় ধরনের বিনিয়োগের কথাও জানিয়েছেন তিনি।

মধ্যপ্রাচ্যের নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পের লাখ কিলোওয়াটের বেশি জ্বালানি উৎপাদনের জন্য চীনের জ্বালানি কোম্পানি ও আর্থিক ইনস্টিটিউশনগুলোকে সহায়তা দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন সি।

চীন উপসাগরীয় (গালফ) অঞ্চলের অপরিশোধিত জ্বালানির বড় ক্রেতা। ২০২৩ সালে চীন ও গালফের দেশগুলোর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় ব্যবসার পরিমাণ ছিল ২৮ হাজার ৬০০ কোটি ৯০ লাখ ডলার। দ্বিপক্ষীয় এসব লেনদেনের মধ্যে শুধু সৌদি আরবের সঙ্গে হয়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ।

চীন ২০২৬ সালে দ্বিতীয়  চায়না-আরব স্টেটস কোঅপারেশন ফোরামের আয়োজন করবে বলে জানিয়েছেন সি চিন পিং।