চিকিৎসা কার আগে হবে, সে সিদ্ধান্ত নিতে হিমশিম

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় বিধ্বস্ত একটি অ্যাম্বুলেন্সফাইল ছবি: রয়টার্স

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের ধারাবাহিক বোমা হামলা ও জ্বালানিসংকটে আগেই ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্যব্যবস্থা। এ অবস্থায় এখনো প্রতিদিন বাড়ছে হতাহত মানুষের সংখ্যা। এতে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আগে কাকে চিকিৎসা দেবেন, সে সিদ্ধান্ত নিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

স্বাস্থ্য বিভাগের সূত্র জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার ভোরে গাজাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে গাজা নগরের পূর্বাঞ্চলীয় এলাকা তুফফায় তিনজন, উত্তরাঞ্চলীয় জাবালিয়া আন-নাজলায় পাঁচজন, দক্ষিণাঞ্চলীয় আল-মাওয়াসিতে দুধের শিশুসহ পাঁচজন রয়েছেন। নিহত অন্য ব্যক্তিদের মধ্যে এমন সাতজন রয়েছেন, যাঁরা হন্যে হয়ে খাদ্যসহায়তা খুঁজছিলেন।

আল-জাজিরার সংবাদদাতা হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, আহত ব্যক্তিদের মধ্যে শিশুরাও রয়েছে। তাদের নাসের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তাদের কারও কারও শরীরে এমন ক্ষত দেখা গেছে, যা ড্রোন হামলার সঙ্গে মিলে যায়।

চিকিৎসাকর্মীরা বলছেন, জ্বালানির অভাবে বিদ্যুৎ নেই। আর বিদ্যুৎ না থাকলে জীবন রক্ষা করারও উপায় নেই। তাই তাঁরা রোগীদের অগ্রাধিকার নির্ধারণের পাশাপাশি চিকিৎসা কার্যক্রমও ন্যূনতম পর্যায়ে নামিয়ে আনতে বাধ্য হচ্ছেন।

আল-শিফা হাসপাতালের প্রকৌশল বিভাগের জিয়াদ আবু হুমায়দান বলেন, মাত্র কয়েকটি বিভাগ চালু রয়েছে। বাকি সব জায়গার বিদ্যুৎ–সংযোগ কেটে দিতে হয়েছে। ওমদা দাগমাশ নামের ডায়ালাইসিসের এক রোগী বলেন, আগে তিনি এই হাসপাতালে সপ্তাহে তিনবার স্বাচ্ছন্দ্যে এসে ডায়ালাইসিস করিয়ে যেতেন। প্রতিটি সেশনের সময় ছিল চার ঘণ্টা। আর এখন অনেক কষ্টের পরে হাসপাতালে পৌঁছাতে পারেন। কারণ, তাঁরা এখন ঠিকমতো খাবারই পাচ্ছেন না। এখন ডায়ালাইসিসের সময় ও সেশন দুটিই কমিয়ে আনা হয়েছে, যা কারও কারও জীবন-মৃত্যুর প্রশ্ন।

ইসরায়েলিদের প্রতিক্রিয়া

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম মাআরিভ পরিচালিত এক জনমত জরিপ অনুযায়ী, প্রায় ৪৪ শতাংশ ইসরায়েলি নাগরিক মনে করেন, গাজায় চালানো হামলা দেশের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হবে না।

গত বৃহস্পতিবার গাজার একমাত্র ক্যাথলিক গির্জায় বোমা হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল। এতে ৩ জন নিহত এবং অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ইসরায়েল ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়েছে।