মিসরের সঙ্গে সাড়ে ৩ হাজার কোটি ডলারের গ্যাস চুক্তির ঘোষণা নেতানিয়াহুর

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ফাইলছবি: রয়টার্স

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মিসরের সঙ্গে সাড়ে তিন হাজার কোটি ডলারের গ্যাস চুক্তির ঘোষণা দিয়েছেন। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় তিনি জানান, এই চুক্তির আওতায় একটি মার্কিন কোম্পানির মাধ্যমে মিসরে গ্যাস সরবরাহ করবে ইসরায়েল। নেতানিয়াহু এমন একসময়ে এ ঘোষণা দিলেন, যখন দেশ দুটির শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে বসতে চাপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

গতকাল টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু এই গ্যাস চুক্তির কথা জানান। এটাকে তিনি ‘ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় গ্যাস চুক্তি’ হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, চুক্তির অর্থমূল্য ১১ হাজার ২০০ কোটি শেকেল (প্রায় ৩ হাজার ৪৬০ কোটি ডলার)।

যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি কোম্পানি শেভরন ইসরায়েল থেকে মিসরে গ্যাস সরবরাহের কাজ করবে। নেতানিয়াহু বলেন, ‘এই চুক্তির ফলে আঞ্চলিক জ্বালানি শক্তি হিসেবে ইসরায়েলের মর্যাদা অনেকে বেড়ে যাবে। এটা আমাদের অঞ্চলের স্থিতিশীলতায় অবদান রাখবে। এ চুক্তির ফলে ইসরায়েলের অর্থনৈতিক জলসীমায় অন্যান্য কোম্পানি গ্যাস অনুসন্ধানে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত হবে।’

এ চুক্তির বিষয়ে জানেন ইসরায়েলের এমন একটি সূত্র জানায়, চুক্তিটি অনেক আগেই চূড়ান্ত হয়েছিল। কিন্তু ইসরায়েল কয়েক মাস ধরে আনুষ্ঠানিক অনুমোদন স্থগিত করে রেখেছিল। তবে শেষ পর্যন্ত ট্রাম্প প্রশাসনের চাপের মুখে তারা চুক্তিটির অনুমোদন দিতে বাধ্য হলো।

নেতানিয়াহু ও মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির মধ্যে একটি বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর এ বৈঠক আয়োজনের লক্ষ্য হলো আঞ্চলিক শান্তিচুক্তি এবং আব্রাহাম অ্যাকর্ডস বিস্তৃত করা।

ইসরায়েলের সঙ্গে গ্যাস চুক্তি নিয়ে মিসর আনুষ্ঠানিকভাবে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি। চুক্তির বিষয়ে জানতে, সিএনএনের তরফে মিসরের পেট্রোলিয়াম ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তবে কোনো তথ্য পায়নি।

ইসরায়েল ও মিসর ১৯৭৯ সালে একটি ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করে। এর মধ্য দিয়ে প্রথম আরব দেশ হিসেবে মিসরই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে। কিন্তু দেশ দুটির শীর্ষনেতারা প্রায় এক দশকে প্রকাশ্যে দেখা করেননি।

ইসরায়েলের আরেকটি সূত্র জানায়, গ্যাস চুক্তির ঘোষণা মূলত নেতানিয়াহু ও সিসির মধ্যে সম্ভাব্য বৈঠকের ভিত্তি তৈরির অংশ।