আরও এক জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করল হামাস

তেল আবিবের ফরেনসিক মেডিকেল কেন্দ্রে মরদেহ পৌঁছে দেওয়া বহরকে সম্মান জানিয়ে স্যালুট দেন ইসরায়েলি পুলিশ কর্মকর্তারাছবি: রয়টার্স

ইসরায়েলের কাছে আরও এক জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করেছে হামাস। গতকাল শুক্রবার রাতে মরদেহটি ইসরায়েলে পৌঁছায়।

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি বলেছে, বিধ্বস্ত গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে থাকা যেসব জিম্মির মরদেহ এখনো পাওয়া যায়নি, সেগুলো খুঁজে বের করে ফেরত দেওয়া হবে।

গতকাল নতুন করে আরেকটি মরদেহ ফেরত পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, রেডক্রসের মাধ্যমে গাজায় নিরাপত্তা বাহিনীর (ইসরায়েলি) কাছে ফেরত দেওয়া এক জিম্মির মরদেহবাহী কফিন গ্রহণ করেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের একটি চিকিৎসাকেন্দ্রে মরদেহটি শনাক্ত করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগে সম্প্রতি গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। এ–সংক্রান্ত চুক্তির আওতায় এখন পর্যন্ত ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মির সবাইকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। পাশাপাশি ৯ জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করেছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গত বৃহস্পতিবার আবারও বলেছেন, হামাসের কাছ থেকে সব জিম্মির মুক্তি নিশ্চিত করার ব্যাপারে তিনি দৃঢ় অবস্থানে আছেন। তাঁর প্রতিরক্ষামন্ত্রীও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, হামাস এটা করতে না পারলে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আবারও যুদ্ধ শুরু করবে।

গতকাল হস্তান্তর করা মরদেহের পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় এটিকে এখনো জিম্মির মরদেহ হিসেবে হিসাব করা হয়নি। হামাসের কাছে মোট ২৮ জিম্মির মরদেহ থাকার কথা।

জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দীকে ইসরায়েল কারাগার থেকে মুক্তি দিয়েছে। গাজা উপত্যকায় সামরিক অভিযানও বন্ধ রেখেছে তারা।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গত বৃহস্পতিবার আবারও বলেছেন, হামাসের কাছ থেকে সব জিম্মির মুক্তি নিশ্চিত করার ব্যাপারে তিনি দৃঢ় অবস্থানে আছেন। তাঁর প্রতিরক্ষামন্ত্রীও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, হামাস এটা করতে না পারলে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আবারও যুদ্ধ শুরু করবে।

গতকাল হামাসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা গাজি হামাদ এসব হুমকিকে ‘অগ্রহণযোগ্য চাপ তৈরির কৌশল’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

এক বিবৃতিতে হামাদ বলেন, মরদেহ ফেরত দেওয়ার বিষয়টি জটিল ও সময় লাগবে। বিশেষ করে দখলদারির (ইসরায়েলি) কারণে গাজার চিত্র পাল্টে যাওয়ায় এ প্রক্রিয়া জটিল হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মরদেহগুলো ফেরত দেব এবং আমাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চুক্তি মেনে চলব।’

(জিম্মিদের) মরদেহ ফেরত দেওয়ার বিষয়টি জটিল ও সময় লাগবে। বিশেষ করে দখলদারির (ইসরায়েলি) কারণে গাজার চিত্র পাল্টে যাওয়ায় এ প্রক্রিয়া জটিল হয়ে গেছে। আমরা মরদেহগুলো ফেরত দেব এবং আমাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চুক্তি মেনে চলব।
গাজি হামাদ, হামাসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা

গাজায় ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া মরদেহ উদ্ধারে সহযোগিতা করার জন্য তুরস্ক একটি বিশেষজ্ঞ দল পাঠিয়েছে। তবে দলটি গতকাল পর্যন্ত গাজায় প্রবেশের জন্য ইসরায়েলের অনুমতি পায়নি।

তুর্কি এক কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, ইসরায়েল কখন তুর্কি দলকে গাজায় প্রবেশ করতে দেবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তুরস্কের দলটিকে ফিলিস্তিনি ও জিম্মি উভয়ের মরদেহ খুঁজে বের করার কাজ দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

হামাসের একটি সূত্র এএফপিকে বলেছে, তুর্কি প্রতিনিধিদল রোববারের মধ্যে গাজায় প্রবেশ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

গাজায় হামাসের অধীন পরিচালিত উদ্ধারকারী সংস্থা সিভিল ডিফেন্স বলেছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর ধ্বংসস্তূপ থেকে ২৮০টির বেশি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন