সৌদি আরব ধীরে ধীরে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ হচ্ছে: যুবরাজ মোহাম্মদ

সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান
ফাইল ছবি: রয়টার্স

সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য তাঁর দেশ ক্রমাগতভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।

মার্কিন সম্প্রচার মাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সৌদির যুবরাজ এ কথা বলেন। তাঁর সাক্ষাৎকারটি যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার সম্প্রচার হওয়ার কথা। তবে সাক্ষাৎকারটির উদ্ধৃতাংশ আগেই দেখেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
সাক্ষাৎকারে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে মোহাম্মদ বিন সালমান বলেন, ‘প্রতিদিন আমরা আরও ঘনিষ্ঠ হচ্ছি।’

উপসাগরীয় কয়েকটি দেশ ইতিমধ্যে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছে। এ ক্ষেত্রে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় ছিল যুক্তরাষ্ট্র।

এখন একই পথ অনুসরণ করতে যাচ্ছে সৌদি আরব। সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে বড় ধরনের চাপ আছে।

মধ্যপ্রাচ্যের দুই আঞ্চলিক শক্তি সৌদি আরব ও ইসরায়েল। দুটি দেশই অঞ্চলটিতে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় মিত্র হিসেবে পরিচিত।

দুই আঞ্চলিক শক্তি সৌদি-ইসরায়েলের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন।

এমন প্রেক্ষাপটে মোহাম্মদ বিন সালমান যুক্তরাষ্ট্রের ফক্স নিউজকে সাক্ষাৎকার দিলেন, যেখানে সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের বিষয়ে ভালোই অগ্রগতির তথ্য উঠে এল।

সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আলোচনা বেশ জটিল। এ আলোচনার কেন্দ্রে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু আছে। এর মধ্যে ফিলিস্তিনিদের অধিকারের বিষয়ে ইসরায়েলের সম্ভাব্য ছাড়ের ব্যাপারটি অন্তর্ভুক্ত। আলোচনার কেন্দ্রে আরও আছে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তানিশ্চয়তা, রিয়াদের চাওয়ামতো সৌদির বেসামরিক পারমাণবিক কার্যক্রমে সহায়তা ইত্যাদি।

ফক্স নিউজের ‘বিশেষ প্রতিবেদন’ নামের অনুষ্ঠানে নেওয়া সাক্ষাৎকারে মোহাম্মদ বিন সালমানের কাছে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য কী কী বিষয় দরকার।

জবাবে সৌদির যুবরাজ বলেন, ফিলিস্তিন ইস্যুটি রিয়াদের কাছে এখনো খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হিসেবে বিবেচিত।

মোহাম্মদ বিন সালমান বলেন, ‘আমাদের এই অংশটির সমাধান করতে হবে।’
সাক্ষাৎকারে সৌদির যুবরাজ ইংরেজিতে বলেন, ‘আমরা কোথায় যাচ্ছি, তা দেখতে হবে। আমরা আশা করি, এমন একটি জায়গায় পৌঁছাতে পারব, যা ফিলিস্তিনিদের জীবনকে সহজ করবে, আর ইসরায়েলকে মধ্যপ্রাচ্য একটি ক্রীড়নক হিসেবে পাবে।’

মার্কিন কর্মকর্তারা ব্যক্তিগতভাবে একটি আঞ্চলিক বড় চুক্তির (সৌদি-ইসরায়েল) সম্ভাব্য সুবিধার কথা বলেছেন। এই চুক্তি হলে তা মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতির একটি সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হবে। বিষয়টি বাইডেনকে ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সুবিধা দিতে পারে।

সাক্ষাৎকার মোহাম্মদ বিন সালমান আরও বলেছেন, ইরান যদি পারমাণবিক অস্ত্রের মালিক বনে যায়, তাহলে সৌদি আরবও তা চাইবে।

সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক দেখে এসেছে মধ্যপ্রাচ্য। তবে চীনের মধ্যস্থতায় গত মার্চে রিয়াদ ও তেহরান কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে সম্মত হয়। এরপর দুই দেশের সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে। অন্যদিকে, মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের ঘোর শত্রু হিসেবে পরিচিত ইসরায়েল।