ফিলিস্তিনিদের জেনিন ছাড়তে বাধ্য করছে ইসরায়েলি বাহিনী

ইসরায়েলি হামলার মুখে ফিলিস্তিনিরা শরণার্থীশিবির ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। পশ্চিম তীরের জেনিনেছবি: এএফপি

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের জেনিনে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বড় ধরনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সেখানকার কয়েক শ বাসিন্দাকে ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার শুরু হওয়া এ অভিযানে ইতিমধ্যে ১২ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। এদিকে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ২৪ ঘণ্টায় আরও ১২০টি দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে বলে আজ বৃহস্পতিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার দুই দিন পর দখলকৃত পশ্চিম তীরে ‘অপারেশন আয়রন ওয়াল’ শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। বিমান হামলার পাশাপাশি হেলিকপ্টার ও ড্রোনের সহায়তায় সাঁজোয়া যান ও বুলডোজার নিয়ে জেনিন শরণার্থীশিবিরে ঢুকে পড়েন ইসরায়েলের বিপুলসংখ্যক সেনা। এর আগে পশ্চিম তীরের বিভিন্ন শহরের মূল প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

জেনিনের গভর্নর কামাল আবু আল-রাব বলেন, ড্রোন ও সাঁজোয়া যানে বসানো লাউডস্পিকার ব্যবহার করে ইসরায়েলি বাহিনী বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। এরপর কয়েক শ বাসিন্দা শরণার্থীশিবির ছাড়তে শুরু করেন।

জেনিন শরণার্থীশিবিরের এক প্রান্তে বসবাস করা সালিম সাদি বলেন, বুধবার সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটার মধ্যে বাসিন্দাদের শরণার্থীশিবির ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। অনেক বাসিন্দা শরণার্থীশিবির ছাড়তে শুরু করেছেন।

সালিম সাদি বলেন, ‘ইসরায়েলি সেনারা আমার বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়েছেন। তাঁরা যেকোনো মুহূর্তে বাড়িতে ঢুকতে পারেন।’

ফিলিস্তিনের বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন ইসরায়েলি সেনারা। জেনিন শরণার্থীশিবিরের কয়েকটি বাড়িতে এবং আল-আসির মসজিদের কাছে একটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়  জানিয়েছে, যুদ্ধে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় বিধ্বস্ত বাড়িঘর ও স্থাপনার ধ্বংসস্তূপ থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায় আরও ১২০টি দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর ১৫ মাসের হামলায় নিহত বেড়ে ৪৭ হাজার ২৮৩ জনে দাঁড়িয়েছে।

এ ছাড়া জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয় দপ্তর (ওসিএইচএ) জানিয়েছে, ১৫ মাসের যুদ্ধে গাজায় যে পরিমাণ স্থলমাইন ও অবিস্ফোরিত বোমা পড়ে আছে, সেগুলো সরাতে ১০ বছর সময় লেগে যেতে পারে।

জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবিক সহায়তা সংগঠনের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন ‘গ্লোবাল প্রোটেকশন ক্লাস্টার’-এর বরাত দিয়ে ওসিএইচএ বলেছে, গাজার ৪ কোটি ২০ লাখ টন ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে থাকা বিস্ফোরক সরাতে ১০ বছরে ৫০ কোটি ডলারের প্রয়োজন হবে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেকের দুই দিন পর গত বুধবার ফোনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি জানান, ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নিরবচ্ছিন্ন সমর্থন অব্যাহত থাকবে।